Thank you for trying Sticky AMP!!

জাবিতে দুই হলের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, আহত ৬৫

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মওলানা ভাসানী হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৬৫ জনের মতো শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে জখমের পরিমাণ বেশি হওয়ায় অন্তত ৩৫ জনকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

আজ বুধবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা ও সংশ্লিষ্ট হল দুটির সামনে দফায় দফায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় গুলির শব্দও শোনা যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ক্যাম্পাসে পাঁচ প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেলা দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলার একটি দোকানে বসে চা পান করছিলেন ভাসানী হলের ৪৫ তম ব্যাচের ছাত্র সৌরভ কাপালি। এ সময় সেই দোকানে মিষ্টি খেতে যান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৪৬ তম ব্যাচের দুজন শিক্ষার্থী। মিষ্টি খাওয়ার সময় সৌরভ কাপালির সঙ্গে ওই দুজনের ধাক্কা লাগে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সৌরভ ওই দুজনকে থাপ্পড় দেন। এ সময় তিনজনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সৌরভ ও ওই দুই শিক্ষার্থীর হাতাহাতির কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে ভাসানী হলের আরও ১০-১৫ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত হন। তারাও বঙ্গবন্ধু হলের ওই দুই শিক্ষার্থীকে মারধর করেন। এ ঘটনার জেরে কিছুক্ষণের মধ্যে দুই হল থেকে রামদা, ছুরি, রড, লাঠিসোঁটা, ইট-পাটকেল নিয়ে শিক্ষার্থী বের হয়ে আসেন। এরপর বেলা সোয়া দুইটা থেকে বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় গুলির অন্তত ১০টি শব্দ শোনা গেছে। সংঘর্ষের সময় ছবি তুলতে গেলে দৈনিক সংবাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জোবায়ের কামালের ওপর চড়াও হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৪৪ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সিয়াম চৌধুরী।

সংঘর্ষের খবর পেয়ে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে আশুলিয়া থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে তারা। সন্ধ্যা সাতটার সময় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পুলিশ বটতলায় অবস্থান করছে। দুই হলের শিক্ষার্থীরাও হলে অবস্থান করছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসানকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছোটাছুটি করতে দেখা যায়। সাভার, ৩ জুলাই। ছবি: মাইদুল ইসলাম

বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের উপপ্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা রিজওয়ানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় ৬৫ জন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে অন্তত ৩৫ জনের জখমের পরিমাণ গুরুতর হওয়ায় তাঁদের সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি জানান, যাঁদের এনাম মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন রাবার বুলেটের আঘাতে আহত হয়েছেন। অন্যদের ইটের আঘাতে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম হয়েছে। এসব শিক্ষার্থীদের পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া সম্ভব হয়নি।

আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) জাবেদ মাসুদ প্রথম আলোকে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ক্যাম্পাসে পাঁচ প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তিনি জানান, ঘটনার খবর পাওয়া সঙ্গে সঙ্গেই তারা ক্যাম্পাসে আসেন। তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের ছোড়া ইটের আঘাতে পুলিশ পরিদর্শক রেজাউল হক আহত হয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘বটতলায় ছোটখাটো বিষয় নিয়ে দুই হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা শুরু হয়। পরে পুলিশ ডাকা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে। তবে আরও সংঘর্ষ হওয়ার আশঙ্কা আছে।’