Thank you for trying Sticky AMP!!

ঢাবিতে ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে ক্যানটিন পরিচালককে মারধরের অভিযোগ

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা ইশতিয়াক আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার নামে হলের ক্যানটিন থেকে বাকিতে খেতেন নেতার ঘনিষ্ঠ একজন। বাকির খাতায় এরই মধ্যে জমা পড়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকা। প্রতিদিনের মতো আজ বৃহস্পতিবার সকালেও ক্যানটিনে খেতে গেলে পাওনা টাকা চান ক্যানটিন পরিচালক মো. শাহাবুদ্দিন। অভিযোগ উঠেছে, এর জেরে শাহাবুদ্দিনকে নিজের কক্ষে ডেকে স্ট্যাম্প দিয়ে মেরেছেন ওই ছাত্রলীগ নেতা। পরে ক্যানটিনে ভাঙচুর চালিয়ে তালাও মেরে দেন তিনি।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম ইশতিয়াক আহমেদ। তিনি মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের তথ্যপ্রযুক্তি-বিষয়ক উপসম্পাদক। ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগে ভর্তি হলেও ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব নেই তাঁর। তাঁর নামে বাকিতে খাওয়া ওই ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি হলেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ও শাখা ছাত্রলীগের সদস্য খালিদ হাসান। এই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হল প্রশাসন।

ভুক্তভোগী ক্যানটিন পরিচালক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা প্রথম আলোকে বলেন, ইশতিয়াকের ঘনিষ্ঠ খালিদ হলের ক্যানটিন থেকে ৩ হাজার ৪২০ টাকা বাকিতে খেয়েছেন। আজ সকালে তাঁর কাছে পাওনা টাকা চাইলে শাহাবুদ্দিনকে তিনি ইশতিয়াকের সঙ্গে তাঁর কক্ষে গিয়ে দেখা করতে বলেন। পরে শাহাবুদ্দিন ইশতিয়াকের কক্ষে গেলে কথাবার্তার একপর্যায়ে স্ট্যাম্প দিয়ে আঘাত করেন ইশতিয়াক।

জানতে চাইলে ক্যানটিন পরিচালক শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘টাকা চাইতে গিয়ে মার খেয়েছি। অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করা হয়েছে। আমি কিছুই বলিনি। মার খাওয়ার পর চলে এসেছি।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্ট্যাম্প দিয়ে আঘাতের খবর হলে ছড়িয়ে পড়লে শাহাবুদ্দিনকে মারতে হলের ক্যানটিনে ছুটে আসেন ইশতিয়াক। কিন্তু শাহাবুদ্দিন তখন ক্যানটিনে ছিলেন না। তাঁকে না পেয়ে ক্ষুব্ধ ইশতিয়াক ক্যানটিনে ভাঙচুর চালান। একপর্যায়ে ক্যানটিনে নাশতা করতে আসা শিক্ষার্থীদের ভেতরে রেখেই তিনি ক্যানটিনে তালা লাগিয়ে দেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা ইশতিয়াক আহমেদ মুঠোফোনে সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার সময় তিনি হলে ছিলেন না, এখনো তিনি হলে নেই।

জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক এবং মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, গায়ে হাত তোলার বিষয়টি একদমই কাম্য নয়। ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে এ ধরনের কার্যক্রম মেনে নেওয়া হবে না। দ্রুতই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জিয়া রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘খবর শুনে আবাসিক শিক্ষকদের নিয়ে আমি ক্যানটিন পরিদর্শন করেছি। ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। আবাসিক শিক্ষক, হল সংসদ ও জড়িতদের নিয়ে সভা করেছি। পরে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এই ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা দাবি করে হল প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল সংসদ।