Thank you for trying Sticky AMP!!

বাংলাদেশের সোনালি আঁশ

ভূমিকা: পাট একটি অর্থকরী ফসল। দেশ-বিদেশে পাটের অনেক চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশ পাট রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে। তাই পাটকে সোনালি আঁশ বলা হয়।

আকৃতি ও প্রকার: পাটগাছ একটি তৃণজাতীয় উদ্ভিদ। এটি দেখতে লম্বা কাঠির মতো। এগুলো প্রায় ৫ থেকে ১০ হাত পর্যন্ত লম্বা হয়। দেশি, তোষা ও মেসতা—এই তিন ধরনের পাট আমাদের দেশে হয়ে থাকে। দেশি পাটের আঁশ সাদা, তোষা পাটের আঁশ লালচে এবং মেসতা পাটের আঁশ অপেক্ষাকৃত মোটা হয়ে থাকে।

উৎপত্তিস্থান: বাংলাদেশের জলবায়ু ও মাটি পাট চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। পৃথিবীর মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে ভালো পাট জন্মে। কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, পাবনা, কুষ্টিয়া, যশোর ও নওগাঁ জেলায় পাটের উৎপাদন বেশি হয়। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, মিসর ও আমেরিকায় পাটের চাষ হয়।

চাষপ্রণালি: পাট চাষের জন্য উষ্ণ জলবায়ু ও প্রচুর বৃষ্টিপাত দরকার হয়। ফাল্গুন ও চৈত্র মাস পাট বোনার উপযুক্ত সময়। শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে পাটগাছ কেটে ছোট ছোট আঁটি বাঁধা হয়। আঁটিগুলো পানিতে কিছুদিন ভিজিয়ে রাখা হয়। পাটের আঁশ পচে নরম হলে তা ছাড়ানো হয়। এরপর আঁশ ধুয়ে রোদে শুকানো হয়। সেই আঁশকে পাট বলা হয়। পাটের ভেতরের কাঠিকে পাটকাঠি বলে।

রপ্তানি: বাংলাদেশের পাট পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে ভালো। পাট পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়। ইউরোপ ও আমেরিকায় প্রচুর পাট রপ্তানি করা হয়।

পাটকল: বাংলাদেশের পাটকলগুলো প্রধানত নারায়ণগঞ্জ, চাঁদপুর, খুলনার দৌলতপুরসহ নদীতীরবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত।

ব্যবহার: পাট থেকে রশি, সুতা, বস্তা, কাপড়, কার্পেট ইত্যাদি তৈরি করা হয়। পাটকাঠি জ্বালানি হিসেবে এবং বেড়া ও কাগজ তৈরির কাজে ব্যবহার করা হয়। পাট দ্বারা কৃত্রিম রেয়ন তৈরি করা হয়।

উপসংহার: বাংলাদেশে পাট সম্ভাবনাময় একটি ফসল। সম্প্রতি পাটের জিনরহস্য আবিষ্কারের ফলে পাট নিয়ে সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গেছে।