Thank you for trying Sticky AMP!!

'অল্প পড়ি, কিন্তু মন দিয়ে পড়ি'

>

এ বছর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন ময়মনসিংহের রিজভী তৌহিদ।পড়ুন  মেধাবীর কাহিনি

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম রিজভী তৌহিদ। ছবি: জগলুল পাশা

বেশ কয়েক বছর আগের কথা। ময়মনসিংহ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ক্লাসরুমে এসেছিলেন একজন সেনা কর্মকর্তা। শিক্ষার্থীদের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছিলেন, ‘তোমাদের মধ্যে কে কে ডাক্তার হতে চাও?’ সেদিন যারা হাত তুলে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নের কথা জানিয়েছিল, তাদের সবার কথা আমরা জানি না। তবে সেই ছাত্রছাত্রীদের একজন রিজভী তৌহিদের কথা আমরা জানি। এ বছর মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় মেধাতালিকায় তিনি প্রথম হয়েছেন। ভর্তি হয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজে।
রিজভী ময়মনসিংহের ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্কুল শাখা থেকে মাধ্যমিক ও সরকারি আনন্দ মোহন কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন। বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আজমতপুর গ্রামে। বাবা আবদুর রাজ্জাক কলেজশিক্ষক আর মা রেহেনা পারভীন গৃহিণী। একমাত্র ছোট ভাই আইনুন নিশাত রাজশাহী ক্যাডেট কলেজে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছে।
স্কুলজীবনে কোনো ক্লাসে কখনোই রিজভী প্রথম হননি। নবম-দশম শ্রেণিতে হয়েছিলেন সপ্তম। এটাই ছিল স্কুলের ক্লাসে তাঁর সবচেয়ে ভালো অবস্থান। জানালেন, ক্লাস ফোরে পড়ার সময়ই নিজের রুটিন নিজেই তৈরি করে নিয়েছিলেন—প্রতিদিন সকালে স্কুল, বিকেলে খেলা, সন্ধ্যার পর পড়তে বসা। রিজভী বলেন, ‘আমি বেশি পড়ি না। আমার বন্ধুরা বরং অনেক বেশি পড়ে। আমি অল্প পড়ি, কিন্তু মনোযোগ দিয়ে পড়ি।’
রিজভী মনে করেন, পরীক্ষা হলো ‘স্নায়ুর খেলা’। স্নায়ু উত্তেজিত না করে খুব স্বাভাবিক ভাবে পরীক্ষা দিতে পারলেই সাফল্য পাওয়া সম্ভব।
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় সেরা হওয়া রিজভী কিন্তু গল্পের বইয়েরও পোকা। বলছিলেন ‘রবীন্দ্রনাথের গল্পগুচ্ছের কয়েকটা গল্প এত ভালো লেগেছে যে পাঁচ-ছয়বার পড়েছি। রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর কবিতা খুব ভালো লাগে। বাববার পড়ি হুমায়ুন আজাদের “সাহস” কবিতাটি।’

খেলাধুলায়ও অনন্য রিজভী। স্কুল দলের হয়ে বাস্কেটবল, হ্যান্ডবল, ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় নিয়মিত অংশ নিতেন। আন্তকলেজ প্রতিযোগিতায়ও আনন্দ মোহন কলেজের হয়ে হ্যান্ডবল দলে খেলেছেন। রিজভীর আরও একটি পছন্দের বিষয় হলো সংসদীয় বিতর্ক। ২০১৩ সালে স্কুলের হয়ে বাংলাদেশ টেলিভিশনের বিতর্ক প্রতিযোগিতায়ও অংশ নেন।

যারা শিক্ষাজীবনে ভালো ফল পেতে চায়, তাদের জন্য রিজভীর পরামর্শ একটাই—নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত থাকা। এই একটা অভ্যাস যে তাঁকে কতটা প্রভাবিত করেছে, বোঝা যায় তাঁর স্কুলজীবনের দিকে তাকালে। চতুর্থ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মাত্র একদিনই তিনি স্কুল কামাই করেছেন। প্রতিবছর ‘সেরা উপস্থিতির’ পুরস্কারটা নিয়ে তাঁর সঙ্গে কেউ কোনো দিন প্রতিযোগিতা করারও সাহস পায়নি!

রিজভী তাঁর সাফল্যের জন্য কৃতজ্ঞ স্কুলের সব শিক্ষকের প্রতি। বিশেষ ভাবে রসায়নের অবনী স্যার (অবনী রঞ্জন রায়) ও বাবার সহকর্মী-বন্ধু আবুল বাশার মিয়ার কথা বললেন তিনি।