Thank you for trying Sticky AMP!!

শিশুদের এক ঘণ্টার জন্য হলেও পার্কে নেন

প্রধানমন্ত্রী ‘বিশ্ব শিশু অধিকার দিবস এবং শিশু অধিকার সপ্তাহ’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। ভিডিও কনফারেন্সে গণভবন থেকে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে মূল অনুষ্ঠানের সঙ্গে সংযুক্ত হন তিনি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনাভাইরাসের কারণে একটা সমস্যা দেখা দিয়েছে যে স্কুল খোলা যাচ্ছে না। বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারছে না, সত্যিই সেটা খুব কষ্টের। কারণ ঘরের মধ্যে বসে থেকে কী করবে তারা। অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, করোনাভাইরাসে শিশুরা স্কুলে যেতে পারছে না, তাই আপনারা কাছাকাছি কোনো পার্কে তাদের নিয়ে যাবেন। সেখানে দিনে অন্তত এক ঘণ্টার জন্য হলেও ছোটাছুটি বা খেলাধুলা তারা করতে পারে, সে সুযোগটা সৃষ্টি করে দেওয়া দরকার। কারণ, তাদের স্বাস্থ্য এবং মানসিক অবস্থার জন্য সব দিক থেকেই এটা খুব দরকার। মা-বাবারা বিষয়টি অন্তত একটু দেখবেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার ‘বিশ্ব শিশু অধিকার দিবস এবং শিশু অধিকার সপ্তাহ ২০২০’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন। তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানের সঙ্গে সংযুক্ত হন।

বিশ্বের কোথাও কোনো শিশুর অকালমৃত্যু তাঁকে ভীষণভাবে নাড়া দেয়, উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে যেকোনো ধরনের শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। তিনি বলেন, শিশুদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা সরকার নিচ্ছে। পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে অত্যাচার-নির্যাতন, কোনো কিছু হলে সঙ্গে সঙ্গে যেন এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায় বা হয়, সেদিকে আমরা বিশেষ দৃষ্টি দিচ্ছি। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই আমাদের শিশুরা নিরাপদ থাকবে, সুন্দরভাবে বাঁচবে এবং মানুষের মতো মানুষ হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, এমন পরিবারের ক্ষেত্রে আমি সব মা-বাবা বা অভিভাবককে বলব, যেহেতু করোনাভাইরাসের কারণে তারা স্কুলে যেতে পারছে না, তাই আপনারা কাছাকাছি কোনো পার্কে নিয়ে যাবেন। সেখানে দিনে অন্তত এক ঘণ্টার জন্য হলেও ছোটাছুটি বা খেলাধুলা তারা করতে পারে, সে সুযোগটা সৃষ্টি করে দেওয়া দরকারি বলে আমি মনে করি। কারণ, তাদের স্বাস্থ্য এবং মানসিক অবস্থার জন্য সবদিক থেকেই এটা খুব দরকার।

পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট কালরাতে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে তাঁর ১০ বছরের ছোট ভাই শেখ রাসেল, রাসেলের খেলার সাথি ফুফাতো ভাই ১০ বছরের আরিফ, ফুফাতো ভাইয়ের ৪ বছরের ছেলে সুকান্ত, ১৩ বছরের ফুফাতো বোন এবং তাঁদের বাসার গৃহপরিচারিকার ছেলে ৫/৬ বছরের পটকার নির্মম হত্যাকাণ্ড স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোনো শিশুর অকালমৃত্যু আমাকে ভীষণভাবে নাড়া দেয়। সেটা আমার দেশেই হোক বা অন্য দেশেই হোক।’

প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিব বর্ষ’ উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মের ওপর শিশুদের আঁকা নির্বাচিত ছবি নিয়ে ‘আমরা এঁকেছি ১০০ মুজিব’ এবং নির্বাচিত লেখা নিয়ে ‘আমরা লিখেছি ১০০ মুজিব’সহ শিশুদের লেখা বইয়ের (২৫টি বইয়ের সিরিজ) মোড়ক উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শিশুদের পরিবেশিত বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।

মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেছা ইন্দিরা, বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি বীরা মেন্ডোনকা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনাম। নাবিদ রহমান তুর্য এবং হৃদিকা নূর সিদ্দিক শিশু একাডেমির শিশুদের পক্ষে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে একটা সমস্যা এখন দেখা দিয়েছে যে স্কুল খোলা যাচ্ছে না এবং বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারছে না, সত্যিই সেটা খুব কষ্টের, কারণ ঘরের মধ্যে বসে থেকে কী করবে তারা। আমাদের দেশে তবুও কিছু যৌথ পরিবার রয়েছে। যৌথ পরিবারের শিশুদের খুব একটা কষ্ট হয় না, কারণ নিজের আত্মীয়স্বজনের মধ্যে সমবয়সী অনেককে পাওয়া যায়, তাদের সঙ্গে মিলেমিশে খেলাধুলা করে, খুনসুটি করে, ঝগড়া করে আবার একসঙ্গে মিলে খেলাধুলাও করতে পারে। তাদের একটা সুন্দর পরিবেশ থাকে, কথা বলার একটা সুযোগ পায়। কিন্তু যেখানে একক বা ছোট্ট পরিবার বা একা শিশু, তাদের জন্য সত্যিই খুব কষ্টকর, তারা কী করবে?’

স্বাস্থ্য সুরক্ষার নিয়ম মেনেই চলতে হবে। পাশাপাশি, বাচ্চাদের একটু খেলাধুলা করা বা খোলা বাতাসে নিয়ে যাওয়া বা রোদে খেলতে দেওয়াটা এই করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ আমি মনে করি। আমি চাই মা-বাবারা এই বিষয়টি অন্তত একটু দেখবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এমন পরিবারের ক্ষেত্রে আমি সব মা-বাবা বা অভিভাবককে বলব, যেহেতু করোনাভাইরাসের কারণে তারা স্কুলে যেতে পারছে না, তাই আপনারা কাছাকাছি কোনো পার্কে নিয়ে যাবেন। সেখানে দিনে অন্তত এক ঘণ্টার জন্য হলেও ছোটাছুটি বা খেলাধুলা তারা করতে পারে, সে সুযোগটা সৃষ্টি করে দেওয়া দরকারি বলে আমি মনে করি। কারণ, তাদের স্বাস্থ্য এবং মানসিক অবস্থার জন্য সবদিক থেকেই এটা খুব দরকার।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্য সুরক্ষার নিয়ম মেনেই চলতে হবে। পাশাপাশি, বাচ্চাদের একটু খেলাধুলা করা বা খোলা বাতাসে নিয়ে যাওয়া বা রোদে খেলতে দেওয়াটা এই করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ আমি মনে করি। আমি চাই মা-বাবারা এই বিষয়টি অন্তত একটু দেখবেন।’

এ সময় প্রাথমিক পর্যায়ে সরকার প্রদত্ত ১ কোটি ৩০ লাখ শিশুকে বৃত্তি-উপবৃত্তি প্রদান এবং প্রতি মাসেই মোবাইলে মায়েদের কাছে বৃত্তির টাকা পৌঁছে দেওয়ায় পদক্ষেপ প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান আরও বলেন, ‘করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও আমরা এই টাকা পাঠানো বন্ধ করিনি। বৃত্তি-উপবৃত্তি আমরা অব্যাহত রেখেছি, যাতে তাদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ নষ্ট না হয়ে যায়।’