Thank you for trying Sticky AMP!!

রাবি উপাচার্যের শেষ দিনে ১৩৮ জনের নিয়োগ সম্পূর্ণ অবৈধ, বাতিলের সুপারিশ

পুলিশি পাহারায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ত্যাগ করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক উপাচার্য এম আব্দুস সোবহান

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক উপাচার্য এম আবদুস সোবহান তাঁর শেষ কর্মদিবসে ‘বিধিবহির্ভূতভাবে’ যে ১৩৮ জনকে নিয়োগ দিয়েছিলেন, সেটিকে সম্পূর্ণ অবৈধ উল্লেখ করে তা বাতিলের সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। একই সঙ্গে কমিটি অধ্যাপক সোবহানসহ দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা এবং তাঁর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে করা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তদন্ত কমিটি।

আজ রোববার তদন্ত কমিটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। জানতে চাইলে কমিটির প্রধান ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক মো. আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, আজ বেলা ১১টার দিকে মন্ত্রণালয়ের সচিব ও অতিরিক্ত সচিবের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। তাঁরা নির্ধারিত সময়েই প্রতিবেদন দিয়েছেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে গত ৬ মে ছিল অধ্যাপক আবদুস সোবহানের শেষ কর্মদিবস। কিন্তু শেষ দিনে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী পদে ১৩৮ জনকে ‘অ্যাডহক’ (অস্থায়ী) ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়ে অনিয়মের নজির সৃষ্টি করে পুলিশি পাহারায় উপাচার্যের বাসভবন ছাড়েন। এ নিয়োগকে কেন্দ্র করে ওই দিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগ এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষও হয়। একই দিনে ওই নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক মো. আলমগীর এ কমিটির প্রধান। সেদিনই শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, এম আবদুস সোবহান তাঁর মেয়াদের শেষ কর্মদিবসে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে বিভিন্ন পদে অবৈধ ও বিধিবহির্ভূতভাবে জনবল নিয়োগ দিয়েছেন। এ অবৈধ জনবল নিয়োগের বৈধতার সুযোগ নেই। এ জন্য এ অবৈধ নিয়োগ ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

৯ জনের বেশি কারও জীবনবৃত্তান্তও দেওয়া হয়নি

ইউজিসির তদন্ত কমিটির সূত্রে জানা গেছে, তদন্ত কমিটি বলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ নিয়োগকে যে অবৈধ ও বিধিবহির্ভূত বলেছে, তা সঠিক। সুতরাং এ নিয়োগ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন, বিধান ও সরকারের নির্দেশনা এবং সংবিধানের আলোকে সম্পূর্ণ অবৈধ। এ জন্য এ নিয়োগ বাতিল করতে সুপারিশ করা হয়েছে। কমিটি দেখতে পেয়েছে, এ নিয়োগে ৯ জনের বেশি কারও জীবনবৃত্তান্তও দেওয়া হয়নি। উপাচার্যসহ যাঁরা এ কাজ করেছেন, তাঁরা শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এ জন্য তাঁদের বিচারের আওতায় আনার জন্যও সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। উপাচার্যের বিদেশে যাওয়া বন্ধ করতে বলা হয়েছে। এ ঘটনায় উপাচার্যসহ আরও কয়েকজনকে দোষী সাব্যস্ত করেছে কমিটি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

অধ্যাপক আবদুস সোবহান ২০১৭ সালের মে মাসে দ্বিতীয় মেয়াদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। এ মেয়াদে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, নীতিমালা শিথিল করে এবং অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে তাঁর মেয়ে ও জামাতাকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে করেছেন অনিয়ম। ইউজিসির তদন্তেই এসব অভিযোগের সত্যতা মেলার পর এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ জন্য গত ডিসেম্বরে ১২টি পৃথক নোটিশ দিয়ে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছিল মন্ত্রণালয়। এর সামান্য কিছু ব্যবস্থা হলেও মোটা দাগে বড় অভিযোগগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং শেষ দিনেও মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ উপেক্ষা করে নিয়োগ দিয়ে গেলেন তিনি।

Also Read: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদায়ী উপাচার্যের নিয়োগকাণ্ডের দ্রুত বিচার দাবি