Thank you for trying Sticky AMP!!

চীনে স্মার্টফোন কেনার ধুম

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে হুয়াওয়ে

চীনে মানুষ হুট করেই প্রচুর স্মার্টফোন কেনা শুরু করেছে। এর পেছনে কাজ করছে তাদের ফোনস্বল্পতার ভয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, কিরিন চিপসেটযুক্ত চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের তৈরি স্মার্টফোন কেনার ধুম পড়েছে।

ক্রেতারা আশঙ্কা করছে, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ায় হুয়াওয়ে মার্কিন প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারবে না বলে প্রিমিয়াম হ্যান্ডসেট উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে।

শেনঝেন শহরে বিশ্বের বৃহত্তম ইলেকট্রনিকস পণ্যের বাজার হুয়াকিয়ানবেইতে ফোন বিক্রেতারা বলছেন, হুয়াওয়ের নতুন ও পুরোনো হ্যান্ডসেটের দাম গত মাস থেকে বেড়ে গেছে। গড়ে প্রতিটি ফোনে ৪০০ থেকে ৫০০ ইউয়ান দাম বেড়েছে।

গত জানুয়ারিতে হুয়াওয়ের পোরশে ডিজাইন মেট ৩০ ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোন ১০ হাজার ইউয়ানে বিক্রি হয়েছে। এখন এ স্মার্টফোনের দাম বেড়ে ১৪ হাজার ইউয়ানে বিক্রি হচ্ছে। অবশ্য অনলাইন মার্কেটপ্লেস তাওবাওতে ফোনের দাম খুব বেশি বাড়েনি।

একজন ফোন বিক্রেতা বলেন, ক্রেতাদের মধ্যে নতুন ফোনের যন্ত্রাংশ সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ায় হুয়াওয়ে মার্কিন প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারবে না বলে প্রিমিয়াম হ্যান্ডসেট উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে।

শিয়াও নামের একজন স্মার্টফোন বিক্রেতা বলেন, হুয়াওয়ের ফোনের দাম বাড়ার কারণ সরবরাহ ও চাহিদার বিষয়টি। মানুষ যদি ব্র্যান্ডটিকে পছন্দ করে, তবে এর জন্য বেশি অর্থ দিতে রাজি হবে। মানুষ জানে, এতে যে চিপ ব্যবহৃত হয়েছে, তা কত ভালো।

গত বছর মার্কিন সরকার যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোকে হুয়াওয়ের সঙ্গে ব্যবসার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, বিশ্বের বৃহত্তম স্মার্টফোন ও মোবাইল টেলিকমিউনিকেশন যন্ত্রপাতি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি চীন সরকারকে তথ্য দেয়।

হুয়াওয়ে বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে আরও কড়া হয়। হুয়াওয়ে যাতে কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চিপ না পেতে পারে, এ কারণে টিএসএমসিকেও হুমকি দেয়।

হুয়াওয়ের কনজ্যুমার ব্যবসার প্রধান নির্বাহী রিচার্ড ইয়ু বলেন, ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে হুয়াওয়ে কিরিন চিপসেট উৎপাদন বন্ধ করেছে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হাইসিলিকনের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিসেবা বন্ধ তরে দিয়েছে। হাইসিলিকন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান ক্যাডেনস ডিজাইন সিস্টেমস ইনকরপোরেশন, সাইনোপসিস ইনকরোপেশনের মতো প্রতিষ্ঠানের সফটওয়্যারের ওপর নির্ভর করে।

Also Read: হুয়াওয়ে নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে চীন

বাজারের পাইকারি বিক্রেতারা বলেন, গত মাস থেকেই তারা অনলাইনে অতিরিক্ত চাহিদা মেটাতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। অনলাইনে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই হাই-এন্ড ফোনের দাম বেড়ে যায়। এখন অনেকেই সরবরাহের জন্য কতগুলো ফোন অবশিষ্ট আছে, তা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে।

হুয়াওয়ের পক্ষ থেকে ইনভেন্টরির কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। হুয়াওয়ের একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, প্রতিষ্ঠানটি চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহে কাজ চালিয়ে যাবে।

বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইডিসির বিশ্লেষক উইল ওং বলেন, আগামী বছরের প্রথমার্ধ বছর তাদের ইনভেন্টরি থাকতে পারে। এ জন্য তাদের অপশন হতে পারে কম পরিমাণ ফোন এনে বেশি দিন কিরিন চিপ ধরে রাখা।

গত সপ্তাহে হুয়াওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা আগামী বছর স্মার্টফোনে হারমনি অপারেটিং সিস্টেম পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছে। এ সফটওয়্যার অ্যান্ড্রয়েডের বিকল্প হবে।

ক্যানালিসের বিশ্লেষক মো. জিয়া বলেন, হাই–এন্ড ফোন তৈরির জন্য চিপ সরবরাহ না পেলে অপারেটিং সিস্টেম উদ্ভাবন প্রতীকী হয়ে থাকবে।