Thank you for trying Sticky AMP!!

ট্রাম্পের চোখ এবার চীনা চিপে

চীনা চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এসএমআইসিকে কালো তালিকায় রাখার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র

চীনা চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশনকে (এসএমআইসি) কালো তালিকাভুক্ত করার কথা ভাবছে ট্রাম্প প্রশাসন।

দেশটির প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার আওতায় যুক্ত হতে পারে চীনা চিপ নির্মাতা কোম্পানিটি। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে চীনা কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া আরও জোরদার হচ্ছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

পেন্টাগনের এক মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে মিলে চীনের এসএমআইসিকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে আলোচনা করছেন। এ নিষেধাজ্ঞা জারি হলে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রতিষ্ঠান বা যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি ব্যবহারকারী কোনো প্রতিষ্ঠান যদি এসএমআইসিকে প্রযুক্তি সরবরাহ করতে চায়, তবে লাইসেন্স নিতে হবে। এসএমআইসি এ সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

চীন যখনই কোনো প্রযুক্তি বা শিল্প খাতকে গুরুত্ব বা প্রাধান্য দিতে শুরু করে, তখনই ট্রাম্প প্রশাসনকে তা কালো তালিকাভুক্ত করতে দেখা গেছে। ইতিমধ্যে চীনভিত্তিক ২৭৫টি প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের কালো তালিকাভুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হুয়াওয়ে টেকনোলজিস ও জেডটিই, যারা টেলিকম প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে। এর বাইরে নজরদার ক্যামেরা প্রতিষ্ঠান হিকভিশনও এ তালিকায় রয়েছে।

এসএমআইসি চীনের বৃহত্তম চিপ নির্মাতা হলেও তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেডের (টিএসএমসি) মানের নয়। এ খাতে টিএসএমসি নেতৃত্ব দিচ্ছে। এসএমআইসি চিপ তৈরিতে টিএসএমসির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে চাইছে।

মার্কিন এক কর্মকর্তা বলেছেন, এসএমআইসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো বিশেষ কারণ ঠিক না করলেও তাদের চীনা সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি নজরদারিতে রয়েছে।

সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে বেইজিংয়ের সেনাবাহিনীর ক্ষমতা বাড়াতে যেসব কোম্পানি যুক্ত, তাদের দিকে দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র ২৪টি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করে। এ ছাড়া অনেক ব্যক্তিও যুক্তরাষ্ট্রের নজরদারিতে আসে।

এসব প্রতিষ্ঠান দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের স্থাপনা তৈরি ও সামরিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিল বলে ধারণা করা হয়।

মাইক্রোচিপ নিয়েই এখন কোটি কোটি ডলারের ব্যবসা হচ্ছে। বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, বৈশ্বিকভাবে ইলেকট্রনিকস ডিভাইসের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে সংশ্লিষ্ট ডিভাইসগুলোয় চিপের চাহিদাও। এতে প্রসারিত হচ্ছে সেমিকন্ডাক্টর ব্যবসা বা চিপ নির্মাণ খাত। চিপ তৈরিতে এত দিন শুধু মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো একচ্ছত্র আধিপত্য দেখিয়েছে। কিন্তু এখন চিপের রাজ্যে হানা দিচ্ছে চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো। একে ভালো চোখে দেখছে না ট্রাম্প প্রশাসন।

ইকোনমিস্টের ভাষ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ২১ শতকের এ বাণিজ্যযুদ্ধ মূলত প্রযুক্তিনির্ভর। সেখানে প্রতিযোগিতার বিষয় হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স (এআই) থেকে শুরু করে নেটওয়ার্ক যন্ত্রপাতি পর্যন্ত সবকিছুই। তবে যুদ্ধের মূল ভিত্তিটা হচ্ছে ওই সেমিকন্ডাক্টর বা চিপ। মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোর নেতৃত্ব ধরে রাখা আর চীনের সুপারপাওয়ার হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়েই মূলত দ্বন্দ্বের শুরু।