Thank you for trying Sticky AMP!!

আমার পক্ষে শ্রেষ্ঠ কৌতুক অভিনেতার এ পুরস্কার গ্রহণ সম্ভব নয়: মোশাররফ করিম

মোশাররফ করিম। ছবি: ফেসবুক থেকে।

কৌতুক অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার গ্রহণে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা মোশাররফ করিম। তিনি বলেছেন, ‘কমলা রকেট’ চলচ্চিত্রে তাঁর চরিত্রটি কমেডি বা কৌতুক চরিত্র নয়। এটি প্রধান চরিত্রগুলোর একটি। তিনি জুরি বোর্ডের অনুরোধ করেছেন, ‘শ্রেষ্ঠ অভিনেতা কৌতুক চরিত্রে’ জন্য বরাদ্দ করা পুরস্কারটা প্রত্যাহার করে নিতে। না হলে তাঁর পক্ষে এই পুরস্কার গ্রহণ করা সম্ভব নয়।

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৮ ঘোষণা করা হয়। এতে ‘শ্রেষ্ঠ অভিনেতা কৌতুক চরিত্রে’ যৌথভাবে পুরস্কার পেয়েছেন আফজাল শরীফ ও মোশাররফ করিম। তবে পুরস্কার ঘোষণার দুদিন পর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জুরী বোর্ডের কাছে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন ছোট ও বড় পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা মোশাররফ করিম।

ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত ও নূর ইমরান মিঠু পরিচালিত ২০১৮ সালের আলোচিত ছবি ‘কমলা রকেট’-এ মফিজুর চরিত্রের জন্য ‘শ্রেষ্ঠ অভিনেতা কৌতুক চরিত্র’ হিসেবে জুরী বোর্ড পুরস্কারের জন্য মনোনীত করে মোশাররফ করিমকে। এরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ দেশের বিনোদন জগতে রীতিমতো সমালোচনার ঝড় বইয়ে যায়।

‘কমলা রকেট’ চলচ্চিত্রটি যারা দেখেছেন, তাদের প্রায় সবাই মোশাররফ করিমের চরিত্রটি কোনোভাবেই কৌতুক অভিনেতার চরিত্র নয় বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন। এমন আলোচনা-সমালোচনার দুদিন পরই সংবাদমাধ্যমে লিখিত বিবৃতি পাঠিয়ে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার থেকে নিজের নাম প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান মোশাররফ করিম। নিজের ফেসবুক পেজেও বিষয়টি তাঁর বক্তব্য তুলে ধরেন।

কমলা রকেট ছবিতে মোশাররফ করিম। ছবি: সংগৃহীত

বর্তমানে ব্যক্তিগত কাজে মালয়েশিয়াতে আছেন মোশাররফ করিম। তিনি বলেন, গত ৭ নভেম্বর দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের সবচেয়ে বড় পুরস্কার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। ২০১৮ সালের পুরস্কার প্রাপ্তদের তালিকায় আমি নিজের নামও দেখতে পেয়েছি। নূর ইমরান মিঠু পরিচালিত ‘কমলা রকেট’ চলচ্চিত্রের জন্য আমাকে ‘শ্রেষ্ঠ অভিনেতা কৌতুক চরিত্রে’ পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু এই পুরস্কার প্রাপ্তি নিয়ে আমার কিছু কথা রয়েছে। তার আগে সবাইকে অবগত করতে চাই, কৌতুকপূর্ণ বা কমেডি চরিত্র আমার কাছে অন্য সব চরিত্রের মতোই সমান গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ‘কমলা রকেট’ চলচ্চিত্রে আমি যে চরিত্রে অভিনয় করেছি সেটি কোনোভাবেই কমেডি বা কৌতুক চরিত্র নয়। ছবিটির চিত্রনাট্যকার, পরিচালকসহ সহশিল্পীরা নিশ্চয় অবগত আছেন। একই সঙ্গে যারা ছবিটি দেখেছেন তারাও নিশ্চয় উপলব্ধি করেছেন ‘কমলা রকেট’ এ আমার অভিনয় করা ‘মফিজুর’ চরিত্রটি কোনো কৌতুক চরিত্র নয়। এটি প্রধান চরিত্রগুলোর একটি।

মোশাররফ করিম আরও বলেছেন, সম্মানিত জুরি বোর্ডের কাছে আমার অনুরোধ, ‘শ্রেষ্ঠ অভিনেতা কৌতুক চরিত্রে’ আমার জন্য বরাদ্দ করা পুরস্কারটা প্রত্যাহার করে নিলে ভালো হয়। না হলে আমার পক্ষে এই পুরস্কার গ্রহণ করা সম্ভব নয়। আমি কাজটাকে ভালোবেসে আমৃত্যু কাজ করে যেতে চাই।

কথাসাহিত্যিক শাহাদুজ্জামানের ‘মৌলিক’ ও ‘সাইপ্রাস’ নামের দুটি গল্প অবলম্বনে ‘কমলা রকেট’ সিনেমার চিত্রনাট্য তৈরি করেছেন শাহাদুজ্জামান ও নূর ইমরান। ছবির গল্পে ‘কমলা রকেট’ মূলত একটি স্টিমারের নাম। এই স্টিমার পুরো বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে। ২০১৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশের অন্যতম আলোচিত চলচ্চিত্র ‘কমলা রকেট’। দেশে প্রশংসিত হওয়ার পাশাপাশি ছবিটি বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে। ছবির দুটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন তৌকির আহমেদ ও মোশাররফ করিম।

বর্তমানে মোশারফ করিম ব্যক্তিগত কাজে মালয়েশিয়াতে অবস্থান করছেন। ছবি: সংগৃহীত

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জুরিবোর্ডের সদস্য ছিলেন অধ্যাপক শফিউল আলম ভূঁইয়া, চলচ্চিত্র অভিনেতা ইনামুল হক, সংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর, দৈনিক ‘ভোরের কাগজ’-এর সম্পাদক শ্যামল দত্ত, গীতিকার ও সংগীত পরিচালক হাসান মতিউর রহমান, অভিনেত্রী রওশন আরা রোজিনা, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার ও বাংলাদেশ চিত্রগ্রাহক সংস্থার যুগ্ম মহাসচিব তপন আহমেদ।