Thank you for trying Sticky AMP!!

আলিয়া, বরুণ, আদিত্য চমকে দিয়েছে: মাধুরী

>

কলঙ্ক ছবির শিল্পীরা: বরুণ, আলিয়া, মাধুরী, সঞ্জয়, সোনাক্ষি ও আদিত্য

টোটাল ধামাল-এর পর আবার পর্দায় আসতে চলেছেন মাধুরী দীক্ষিত। অভিষেক বর্মণ পরিচালিত কলঙ্ক ছবিতে দেখা যাবে তাঁকে। এতে ২১ বছর পর সঞ্জয় দত্তের সঙ্গে জুটি বেঁধে কাজ করলেন মাধুরী। ছবিতে তাঁর লুক মনে করিয়ে দেয় দেবদাস-এর চন্দ্রমুখীকে। চৈত্রের এক পড়ন্ত বিকেলে মুম্বাইয়ের এক পাঁচতারা হোটেলে বলিউডের ‘ধকধক গার্ল’ মাধুরী দীক্ষিতের মুখোমুখি কয়েকজন সাংবাদিক। সেই আড্ডায় ছিলেন প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধি দেবারতি ভট্টাচার্য

২১ বছর পর আপনি ও সঞ্জয় দত্ত একসঙ্গে পর্দায় এলেন। একসময় আপনাদের জুটি খুব হিট ছিল। দীর্ঘ এই সময়ে কতটা বদলেছেন তিনি?

আবার একসঙ্গে পর্দায় ফিরে দারুণ লাগছে। একই অনুভূতি টোটাল ধামাল ছবির সময় অনিল কাপুরের ক্ষেত্রে হয়েছিল। অনিলের সঙ্গেও দীর্ঘদিন পর পর্দায় এসেছিলাম। আমি আর সঞ্জয় একসঙ্গে অনেক হিট ছবি দিয়েছি। আর সঞ্জয়ের মধ্যে বদল অনেক আগেই এসেছে। ও যখন সাজন ছবিতে সাইন করে, তখনই ওর মধ্যে বদল এসেছে। কারণ, এর আগে সঞ্জয় অ্যাকশনধর্মী ছবির জন্য বেশি জনপ্রিয় ছিল। সাজন-এ এক প্রতিবন্ধীর চরিত্রে ওকে নিয়ে অনেকের মনে সংশয় ছিল। অনেকে ভেবেছিলেন, দর্শক সঞ্জয়কে প্রতিবন্ধীর চরিত্রে কিছুতেই গ্রহণ করবেন না। ছবিটা ফ্লপ করবে, কেননা এতে কোনো অ্যাকশন নেই। কিন্তু সঞ্জয় দারুণভাবে সফল হয়। ওর সড়ক ছবিটিও দারুণ ছিল। অভিনেতা হিসেবে সঞ্জয়ের উত্তরণ হয় সেখানে।

আলিয়া ভাট এই মুহূর্তে বলিউডের শীর্ষ অভিনেত্রীদের মধ্যে একজন। এ প্রজন্মের আইকনের সঙ্গে কাজ করে কেমন লাগল?

আলিয়া খুবই প্রতিভাময়ী অভিনেত্রী। এই ছবিতে ওর একটা নাচের দৃশ্য আছে। কত্থক না শিখেও আলিয়া খুব ভালো নাচ করেছে। খুব গ্রেসফুলি। আমাদের মধ্যে খুব সুন্দর বোঝাপড়া তৈরি হয়েছিল। মনে হতো আমরা অভিনয় করছি না। একে অপরের সঙ্গে এমনি কথা বলছি।

আপনার সঙ্গে শুটিংয়ের সময় আলিয়া খুবই নার্ভাস ছিল...

হা হা (সশব্দে হেসে) আমি চেষ্টা করেছিলাম আলিয়াকে সহজ করতে। আমি জানি বেচারি খুব ভয় পেয়েছিল। তাই আমি ওকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করতাম। ছবিতে আমাদের বেশ কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্য আছে। আমি চোখ দিয়ে আলিয়াকে আশ্বস্ত করতাম যে ও খুব ভালো কাজ করেছে। আর সত্যি ও দুর্দান্ত কাজ করেছে।

আর বরুণকে কেমন লাগল?

বরুণ অনেক পরিণত অভিনেতা। আমাদের দুজনের বেশ কয়েকটা দৃশ্য আছে। ওর অভিনয়ের মধ্যে গভীরতা ছিল।

মাধুরী দীক্ষিত

এই ছবিতে সরোজ খানের কোরিওগ্রাফিতে আপনার একটা নাচের দৃশ্য আছে। আপনাদের জুটির একটা অদ্ভুত ম্যাজিক আছে। কী রকম লাগল?

সরোজজির সঙ্গে আমার বোঝাপড়া দুর্দান্ত। নাচকে ঘিরে আমাদের চিন্তাভাবনা এক। আর তাঁর নাচের স্টাইল আমার দারুণ লাগে। আমি সহজেই বুঝতে পারি সরোজজি আমার থেকে সেই মুহূর্তে কী চাইছেন। আর ওঁনার সঙ্গে আমার আলাদা সম্পর্ক।

‘কলঙ্ক’ কোথাও যেন সঞ্জয় লীলা বানসালির ‘দেবদাস’ মনে করিয়ে দিচ্ছে। আপনি কী বলবেন?

দুটো ছবি সম্পূর্ণ আলাদা। আর আমার অভিনীত চরিত্রের সঙ্গে কোথাও এতটুকু মিল নেই৷ সঞ্জয়ের মতো এই ছবির পরিচালক অভিষেকও খুব খুঁতখুঁতে। অভিষেক যেটা চাইবে সেটা না হওয়া পর্যন্ত ছাড়ত না। ও নিজে খুশি হলেই তবে ‘ওকে’ করত। দৃশ্যটা মনের মতো না হলে মুখ শুকনো করে ঘুরে বেড়াত।

‘টোটাল ধামাল’ ছবির পর আবার মাল্টিস্টারার ছবিতে কাজ করলেন। এই ধরনের ছবিতে কাজ করার সুবিধা-অসুবিধা কোথায়?

সুবিধাই বেশি। একটা ছবিতে একাধিক তারকা থাকলে একজনের কাঁধে বোঝা কম পড়ে। তা না হলে একজনের কাঁধেই ছবিটি হিট, ফ্লপের দায়ভার থাকে। আর একসঙ্গে অনেক অভিনেতা কাজ করার ফলে সেটে একটা অদ্ভুত এনার্জি আসে। অনেক নতুন প্রতিভাকে আবিষ্কার করার সুযোগ থাকে৷ আমাকে যেমন আলিয়া, বরুণ, আদিত্য চমকে দিয়েছে।

আপনার প্রযোজিত মারাঠি ছবি ‘১৫ আগস্ট’ নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছে। ছবি মুক্তির জন্য ডিজিটাল মাধ্যমকে কেন বাছলেন?

মারাঠি ছবি সর্বসাকল্যে ৪০০টি পর্দা পায়। একসঙ্গে দু-তিনটে মারাঠি ছবি রিলিজ করলে পর্দার সংখ্যা আরও কমে যায়। এর ওপর কোনো হিন্দি ছবি যদি হিট করে তাহলে তো সমস্যা আরও বাড়ে। তখন খুব কমসংখ্যক পর্দা মারাঠি ছবিকে দেওয়া হয়। তাই ছবি মুক্তির জন্য আমি নেটফ্লিক্সকে বেছে নিই। নেটফ্লিক্সের আমার প্রযোজিত ছবিটি দারুণ পছন্দ হয়েছে। ১৯০টি দেশের কাছে নেটফ্লিক্স পৌঁছে গেছে। ১৩৯ মিলিয়ন পরিবার নেটফ্লিক্স দেখে। তাই এর মাধ্যমে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছানোর সুযোগ থাকে।

ছবি প্রযোজনা কতটা কষ্টকর?

একটা বাচ্চা জন্ম দেওয়ার সমান যন্ত্রণা। ছবিটার আইডিয়া, চিত্রনাট্য থেকে পর্দায় আসা পর্যন্ত একজন প্রযোজকের দায়িত্ব থাকে৷ প্রযোজক রোজ ছবির কাজে জড়িয়ে থাকেন। একজন অভিনেতার থেকে প্রযোজকের দায়িত্ব অনেক বেশি। অভিনেতা শুধু নিজের শটটা দিলেই দায়িত্ব শেষ। কিন্তু প্রযোজকের কাজ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত থাকে। খুবই কষ্টের কাজ।

শাহরুখ, সালমান ও আমির—এই তিন খানের সঙ্গে আপনি অনেক কাজ করেছেন। তাঁরা অভিনয়ের জগতের ৩০ বছর পার করেছেন। তাঁদের সম্পর্কে কিছু বলতে চান?

প্রথমে ওদের অভিনন্দন জানাতে চাই। একটা লম্বা সফর ওরা পার করেছে। আমিরের সঙ্গে আমি মাত্র দুটো ছবিতে কাজ করেছি। শাহরুখ ও সালমানের সঙ্গে ছবির সংখ্যা বেশি। শাহরুখ কো-স্টার হিসেবে অসম্ভব ভালো। আর সেটের সবার দিকে ওর সমান নজর থাকত। তবে মেয়েদের খুবই সম্মান করে শাহরুখ। শুটিংয়ের পর ও মেয়েদের গাড়িতে গিয়ে নিজে তুলে দিয়ে আসত। আর সালমানও কো-স্টার হিসেবে ভালো। তবে সালমান একটু দুষ্টু প্রকৃতির (সশব্দে হেসে)।

আপনাকে পর্দায় দেখে আজও অনেকে হতভম্ব হয়ে যায়। কাউকে দেখে আপনার এমন হয়?

সাদাকালো ছবিতে মধুবালা, মীনা কুমারী, নুতনকে আমি যখন দেখি আমার এমন অবস্থা হয়। আমি ভাবি, ওই সময় কেন আমি জন্মাইনি। তাহলে তাঁদের সান্নিধ্যে হয়তো আসতে পারতাম। নুতনজি কী দারুণ দারুণ ছবি করেছেন!

বাংলা ছবির কিংবদন্তি অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের সঙ্গে কেউ কেউ আপনার চেহারার মিল পান। তাঁর ওপর বায়োপিক হলে অভিনয় করবেন?

ওহ! সুচিত্রা সেন দারুণ ব্যক্তিত্বময়ী অভিনেত্রী। তাঁর অভিনীত আঁধি ছবি আমার দারুণ লাগে। তবে এই মুহূর্তে বলতে পারব না ওঁনার বায়োপিকে কাজ করব কি না।