Thank you for trying Sticky AMP!!

কায়ায় কালচে-ধূসর বাস্তবতার ছবি

ক্যানভাসের ওপর তেলরঙে আঁকা শিল্পী কামালুদ্দিনের ছবি ‘লোডিং অন’। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় শুরু হয়েছে প্রদর্শনী ‘অন্তর্দৃষ্টি’। শিল্পীদের নিয়ে গ্যালারি কায়া ঘুরে দেখছেন উদ্বোধক পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। ছবি: তানভীর আহাম্মেদ

হেঁশেলের হাঁড়িটা আমাদের নিত্যজীবনের প্রধান প্রতিনিধি। কারও কারও কাছে পানের বাটা। এসবের দিকে তাকালে মানুষের জীবনের প্রতিদিনের জীবনযাপনের চিহ্নও দেখা যায়। এগুলোই তো তার দুঃখ-সুখের সাক্ষী। প্রতিদিনের এই বস্তুগুলো এবং মানুষের নিজস্ব কালচে-ধূসর বাস্তবতার ছবি এঁকেছেন শিল্পী কামালুদ্দিন। আঁকছেন তিনি অনেক দিন ধরে। কিন্তু এবারই প্রথম কোনো গ্যালারিতে একসঙ্গে ঝোলানো হলো তাঁর অনেকগুলো কাজ। চিত্র রসিকদের জন্য এটাই তাঁর প্রথম একক প্রদর্শনী।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় গ্যালারি কায়ায় শুরু হয়েছে তরুণ শিল্পী কামালুদ্দিনের একক চিত্রপ্রদর্শনী ‘অন্তর্দৃষ্টি’। প্রধান অতিথি হিসেবে এর উদ্বোধন করেন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘চিত্রকলা এক প্রাচীন ভাষা। আমাদের চারুকলার প্রতিষ্ঠাতাদের একজন গিয়েছিলেন ফ্রান্সের প্যারিস শহরে। ফরাসি ভাষা জানা ছিল না বলে ছবি এঁকে খাবারের ফরমাশ দিয়েছিলেন তিনি।’ শিল্পকলায় বিনিয়োগকে সেরা বিনিয়োগ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘বন্ধুদের দেখেছি, তাঁরা ছবি কেনেন, কিন্তু ঝোলান না। তাঁদের কাছ থেকেই জেনেছি—সব ছবি ঝোলানোর জন্য নয়। এসব ভবিষ্যতের বিনিয়োগ। বছর ঘুরতে থাকলে এসবের দাম অনেক বেড়ে যায়।’

অনুষ্ঠানে শিল্পীর অঙ্কন পারদর্শিতার প্রশংসা করেছেন আরেক অতিথি শিল্পী জামাল আহমেদ বলেন, সা রে গা মা না জানলে যেমন গান গাওয়া যায় না, তেমনি অঙ্কন ভালো না জানলে ভালো চিত্রকর হওয়া যায় না। কামালুদ্দিনের অঙ্কনের হাত খুব ভালো। শিল্পসমালোচক মঈনুদ্দিন খালেদ বলেন, ‘এই ছবিগুলো শিল্পীর অন্তরলোকের ফসল। ছবির যে ভাষা ইদানীং আমরা খুব একটা গ্রাহ্য করি না, সেই ভাষা এই শিল্পীর ছবিতে দেখেছি। প্রাত্যহিক জীবনের যা কিছু আছে, সেসবই শিল্পীর ছবির মডেল হয়েছে।’

প্রদর্শনী ‘অন্তর্দৃষ্টি’র ছবিগুলো দেখছেন এক তরুণী। গতকাল সন্ধ্যায় উত্তরার গ্যালারি কায়া থেকে। ছবি: তানভীর আহাম্মেদ

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন গ্যালারি কায়ার পরিচালক শিল্পী গৌতম চক্রবর্তী। কামালুদ্দিনের একক এ প্রদর্শনীর নামকরণও করেছেন তিনি। শিল্পী সম্পর্কে তিনি বলেন, কামালুদ্দিন বিনয়ী শিল্পী। নীরবে কাজ করে যান।একক প্রদর্শনীর প্রস্তুতি নিতে তাই এত দেরি হলো তাঁর।

কামালুদ্দিনের সাম্প্রতিক ৪০টি ছবি দেখা যাবে এই প্রদর্শনীতে। সেগুলোর ১০টি জলরঙে, বাকি সব তেলরঙে আঁকা। কামালুদ্দিন বলেন, ‘এ প্রদর্শনীর ভেতর দিয়ে শিল্পে প্রবেশের একটা ছাড়পত্র পেলাম। আগে অনেক দলীয় প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছি। কিন্তু দলের ভেতর একা আমাকে খুঁজে পাওয়া কষ্টকর। এই গ্যালারি ধরে শুধু আমাকেই পাওয়া যাবে।’

গ্যালারির দেয়ালজুড়ে শুধু নিত্যদিনের দাগ আহরণ করা তৈজসপত্রই নয়, আছে ডুগি, শিশুর খেলনা , এমনকি নারী ও শিশুর নিষ্পাপ মুখও হয়েছে শিল্পীর বিষয়। আঁকার জন্য আঁকা নয়, ছবির দিকে তাকালে ছবিগুলো অন্য কথাও বলবে। সেসব দেখে আসা যাবে আগামী ৪ মে পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকে কায়া।