Thank you for trying Sticky AMP!!

গত বছর হারিয়েছি যাঁদের

আমজাদ হোসেন, আইয়ুব বাচ্চু ও শ্রীদেবী
>

শেষ হয়েছে ২০১৮ সাল। এ বছর বিনোদন-সংস্কৃতির বেশ কয়েকজন গুণী মানুষকে হারিয়েছি আমরা। তাঁদের জন্য থাকল শ্রদ্ধাঞ্জলি।

আমজাদ হোসেন
কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা, গীতিকার, চিত্রনাট্যকার, অভিনয়শিল্পী ও লেখক আমজাদ হোসেন মারা যান গত ১৪ ডিসেম্বর। ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। জনপ্রিয় সব চলচ্চিত্রের জন্য তিনি বিখ্যাত। তাঁর নির্মিত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হলো নয়নমণি, গোলাপী এখন ট্রেনে, সুন্দরী, কসাই, দুই পয়সার আলতা, জন্ম থেকে জ্বলছি, হীরা মতি, ভাত দে ইত্যাদি। বাংলা চলচ্চিত্রের গানের জন্যও তিনি বিখ্যাত। তাঁর লেখা ও নির্মিত চলচ্চিত্রের গানগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো’, ‘আমি আছি থাকব ভালোবেসে মরব’, ‘হায়রে কপাল মন্দ চোখ থাকিতে অন্ধ’, ‘কেউ কোনো দিন আমারে তো কথা দিলো না’, ‘একবার যদি কেউ ভালোবাসত’। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের পাশাপাশি বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন।

আইয়ুব বাচ্চু
বাংলা ব্যান্ড ও আধুনিক গানের অন্যতম প্রাণপুরুষ আইয়ুব বাচ্চু মারা যান গত ১৮ অক্টোবর। হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন এই শিল্পী। বাংলা গানের এই অমর শিল্পীর জন্ম ষাটের দশকে চট্টগ্রামে। ব্যান্ড-জীবনে তিনি ফিলিংস ও সোলসেরও সদস্য ছিলেন। পরে নিজের ব্যান্ড এলআরবি গঠন করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য ব্যান্ড ও একক অ্যালবাম হলো এলআরবি, সুখ, ফেরারী মন, যুদ্ধ, রক্ত গোলাপ, কষ্ট, সময়, বলিনি কখনো, জীবনের গল্প ইত্যাদি। তাঁর সেরা কিছু গানের মধ্যে আছে ‘চলো বদলে যাই’, ‘এই রুপালি গিটার’, ‘ফেরারী মন’, ‘এখন অনেক রাত’, ‘কষ্ট পেতে ভালোবাসি’, ‘উড়াল দেব আকাশে’ ইত্যাদি।

আনোয়ার হোসেন
খ্যাতিমান আলোকচিত্রী, চিত্রগ্রাহক ও মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন মারা যান গত ১ ডিসেম্বর। তাঁর অসাধারণ কাজগুলোর একটি হলো মুক্তিযুদ্ধের সময় একহাতে রাইফেল ও অন্য হাতে ক্যামেরা নিয়ে অংশগ্রহণ। স্বাধীনতার পরে আলোকচিত্র ও চিত্রগ্রহণ ছিল তাঁর উল্লেখযোগ্য কাজ। বাংলাদেশের অসাধারণ সব চলচ্চিত্রের চিত্রগ্রাহক ছিলেন তিনি। চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম সূর্য দীঘল বাড়ি, এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী, পুরস্কার, অন্য জীবন, লাল সালু ইত্যাদি।

সাইদুল আনাম টুটুল
অভিনয়শিল্পী এবং ছোট ও বড় পর্দার গুণী নির্মাতা ও চিত্র সম্পাদক সাইদুল আনাম টুটুল মারা যান গত ১৮ ডিসেম্বর। বাংলাদেশের অনেকগুলো বিখ্যাত চলচ্চিত্রের চিত্র সম্পাদক ছিলেন তিনি। তা ছাড়া টেলিভিশনে বেশ কিছু নাটক নির্মাণ ও অভিনয় করেছেন। তাঁর নির্মিত ছবি আধিয়ার। এ ছাড়া সরকারি অনুদানে নির্মাণ করছিলেন কালবেলা ছবিটি। এটি শেষ করার আগেই তিনি মারা যান। তাঁর সম্পাদিত উল্লেখযোগ্য সিনেমা হলো সূর্য দীঘল বাড়ি, ঘুড্ডি, দহন, দীপু নাম্বার টু, দুখাই ইত্যাদি।

আলী আকবর রুপু
বছরের প্রথম দিকে ২২ ফেব্রুয়ারি মারা যান বরেণ্য সুরকার ও সংগীত পরিচালক আলী আকবর রুপু। বেশ কিছু বিখ্যাত গানের সুর ও সংগীত করেন এই গুণী মানুষটি। তাঁর উল্লেখযোগ্য গানের মধ্য আছে ‘একদিন কান্নার রোল পড়বে আমার বাড়িতে’, ‘যারে ঘর দিলা সংসার দিলা রে’, ‘দরদিয়া’, ‘পদ্মপাতার পানি নয়’, ‘কবিতার মতো মেয়েটি, গল্পের মতো ছেলেটি’ ইত্যাদি। জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে আলী আকবর রুপু প্রায় ২৫ বছর ধরে বিভিন্ন গানের সুর ও কম্পোজ করেছেন।

রানী সরকার
চলচ্চিত্রের বরেণ্য অভিনেত্রী রানী সরকার মারা যান ৭ জুলাই। তিনি বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন। তাঁর অভিনয়জীবন শুরু হয় ১৯৫৮ সালে। শুরুতেই মঞ্চনাটকে অভিনয় করেন। ওই বছর তাঁর চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় এ জে কারদার পরিচালিত দূর হ্যায় সুখ কা গাঁও চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। এরপর এহতেশামুর রহমান পরিচালিত উর্দু চলচ্চিত্র চান্দাতে অভিনয় করেন। এরপর উর্দু ছবি তালাশ ও বাংলা ছায়াছবি নতুন সুর-এ কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রে অভিনয় করেন। এই ছবি দুটি বেশ জনপ্রিয় হয়। গত শতকের ষাট, সত্তর ও আশির দশকে চলচ্চিত্রে তিনি বেশি অভিনয় করেন। ২০১৬ সালে বাংলা চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার দেওয়া হয় তাঁকে।

বিদেশি
বলিউড, হলিউডসহ বেশ কিছু তারকাকে হারিয়েছি এ বছর। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন সংগীতশিল্পী অ্যারেথা ফ্রাঙ্কলিন, বলিউড অভিনেত্রী শ্রীদেবী, কমিক সুপারহিরো স্রষ্টা স্ট্যান লি, ডিজে ও সংগীতশিল্পী আভিকি, হলিউড অভিনেতা বার্ট রেনল্ডস, পরিচালক বার্নার্দো বার্তোলুচ্চি।