Thank you for trying Sticky AMP!!

ছবিটি দেখতে হবে, অন্য ধরনের ছবি এটা: সব্যসাচী চক্রবর্তী

প্রথম আলোতে আড্ডায় কলকাতার সব্যসাচী চক্রবর্তী ও সুবর্ণা মুস্তাফা। ছবি: আবদুস সালাম

হুট করে প্রথম আলোর ১১ তলায় সব্যসাচী চক্রবর্তী আর সুবর্ণা মুস্তাফা। তাঁদের একসঙ্গে দেখলেই বোঝা যায়, গণ্ডি ছবির জন্যই যূথবদ্ধ হয়েছেন। সেটা যে ভুল নয়, তা বোঝা গেল সঙ্গে ছবিটির পরিচালক ফাখরুল আরেফীন খানকে দেখে।

বোঝা গেল, তাঁরা বেরিয়েছেন গণ্ডি ছবির প্রচারণায়। তবে আলাপ যখন শুরু হলো, তখন দেখা গেল, সেটা চলচ্চিত্র ছাপিয়ে নানা দিকে ছড়িয়ে যাচ্ছে।

যে যাই বলুক, সব্যসাচী চক্রবর্তীর আসল পরিচয়, তিনি প্রদোষ মিত্র বা ফেলুদা। আমরা যেমন ফেলুদার প্রতি আকৃষ্ট হই, সব্যসাচী সেভাবেই একসময় সত্যজিৎ রায়ের এই চরিত্রের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন। নিজেকে কি ফেলুদা ভাবতেন সে সময়? এ রকম একটি প্রশ্নের উত্তর শুনতে ইচ্ছে হয় আমাদের। তিনি কিছু না ভেবেই বলেন, ফেলুদার মতো ছিলেন আসলে তাঁর বাবা। ফলে জন্ম থেকেই ফেলুদাকে ধারণ করেছেন তিনি।

ঢাকায় ছয় ফুটি এই মানুষকে যদি কেউ দেখে ফেলে রাস্তায়, তাহলে ভিড় জমে যায়। কলকাতায় কি একই রকম ঘটনা ঘটে? ঘটে। সেটাই জানালেন সব্যসাচী এবং খুবই অসহায়ভাবে জানালেন, সবচেয়ে বিরক্ত লাগে সেলফিশিকারিদের হাতে বন্দী হয়ে। কেউ কেউ ঘাড়ে হাত দিয়ে ঘাড়টাও ঠিক করে দেয়, এমন কাণ্ড!

তাহলে কি ফেলুদার মতোই মগজাস্ত্র সম্বল করে চলেন সব্যসাচী? একেবারেই না। তিনি নাকি একেবারেই সহজ–সরল। ফেলুদার মতো বুদ্ধিমান নন। অরণ্যের জীবন খুব পছন্দ সব্যসাচীর। সে কথা জানাতে ভুললেন না। এমনকি বনে গিয়ে ছবি তোলার নেশাও আছে তাঁর।

সুবর্ণা মুস্তাফা গিয়েছিলেন ক্যামেরার সামনে কথা বলতে। তিনি ফিরে এসে চলে যাওয়ার জন্য তাড়া দেন। তার একটু আগে মাজনুন মিজান এসে গণ্ডি ছবিতে সুবর্ণার সঙ্গে তাঁর যে অভিনয়ের মজার ঘটনা ঘটেছিল, সেটাই বলছিলেন। একই নাট্যদলে অভিনয় করেন তাঁরা। ফলে সুবর্ণাকে বড় বোন হিসেবেই দেখে এসেছেন তিনি। ছবির একটি দৃশ্যে চাবির রিং দেওয়ার সময় ‘কিরিং নিন আপা’ বলে ফেলছিলেন মাজনুন। ‘ম্যাম’ শব্দটা আসছিল না মুখে। পরে ধমক খেয়ে সেটা ঠিক হয়েছিল।

এ প্রসঙ্গ আসতেই সব্যসাচী বললেন সংলাপ ওলট-পালট হয়ে গেলে কী দশা হয়, তা নিয়ে। তাঁদের নাট্যদলে একটিমাত্র সংলাপ বলার কথা একজন গাড়িচালকের। তিনি বলবেন, ‘গাড়িতে তেল ভরা হয়েছে, আমার খাওয়া হয়েছে। ’ কিন্তু বারবারই তিনি বলছিলেন, ‘গাড়ির খাওয়া হয়েছে, আমার তেল ভরা হয়েছে। ’ শেষে যখন একেবারেই ঠিক হচ্ছে না, তখন তিনি বললেন, ‘গাড়ির খাওয়া হয়েছে, আমারও খাওয়া হয়েছে।’

আমরা ঘরসুদ্ধ লোক হো হো করে হেসে উঠলাম। গণ্ডি ছবির মূল দুই চরিত্রকে বলা হলো, ছবির ট্রেলার যতটা ভালো হয়েছে, ছবিটা তত ভালো হবে তো? তাঁরা দুজন খুব আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বললেন, ট্রেলারের চেয়ে অনেক ভালো হবে ছবিটি। প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে ছবিটি দেখার আহ্বান জানিয়ে গেলেন তাঁরা।

ফাখরুল জানালেন, চার শতাধিক শট ছিল ছবিতে। তবে মাত্র চারটি শটে সব্যসাচীকে ডিরেকশন দিতে পেরেছেন তিনি। সব্যসাচী এত বড় অভিনয়শিল্পী যে তাঁকে কিছু বলে দেওয়ার আগেই ঠিক অভিনয়টা করে ফেলেন। অভিনয়শিল্পী সুবর্ণার ক্ষেত্রেও এই কথা খাটে।
গলা ভেঙে গিয়েছে সব্যসাচীর। কিন্তু তারপরও তাঁর ভরাট গলায় তিনি বললেন, ছবিটি দেখতে হবে, অন্য ধরনের ছবি এটা।

আজ ছবিটির উদ্বোধনী প্রদর্শনী হচ্ছে। শুক্রবার থেকে ১৩টি প্রেক্ষাগৃহে দেখা যাবে ছবিটি।