Thank you for trying Sticky AMP!!

ছবির হাটে সুন্দরবনের কান্না, 'আহ্! সুন্দরবন'

চিড়িয়াখানার খাঁচার মতো রেলিংয়ে ঝুলছে নামফলক ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার, বৈজ্ঞানিক নাম প্যানথার টাইগ্রিস টাইগ্রিস, প্রাপ্তিস্থান: সুন্দরবন, বাংলাদেশ’। রেলিংয়ের ওপারে নেই কোনো বাঘ! তবে উল্টো পাশে আছে মুমূর্ষু, ম্লান ইরাবতী ডলফিন, মৃতপায় পাখি, তেলে আটকে পড়া সাপ, কুমির। এগুলো সুন্দরবনের আলোকচিত্র। শ্যালা নদীতে ফার্নেস তেল পড়ে কীভাবে ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে বনজীবন, তা তুলে ধরা হয়েছে এসব ছবিতে।
গত ৯ ডিসেম্বর মংলার শ্যালা নদীতে ওটি সাউদার্ন স্টার-৭ নামে একটি তেলবাহী জাহাজ ডুবে বনে ছড়িয়ে পড়ে ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৬৬৪ লিটার ফার্নেস তেল। গোপালগঞ্জের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য নেওয়া হচ্ছিল তেল। তেলের প্রভাবে সুন্দরবনের মানুষ, গাছ, পশুপাখির ওপর যে বিরূপ প্রভাব, তা নিয়েই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছবির হাটে এ সচেতনতামূলক আলোকচিত্র প্রদর্শনী ‘আহ্ সুন্দরবন’।
ছবি নিয়ে শিল্পী জুবায়ের কেওলিন জানান, শিল্পীর দায় থেকে ছবিটা তৈরি করা হয়েছে। প্রতীকী অর্থে সুন্দরবনের প্রকৃত অবস্থা বোঝাতেই এটা করা।
প্রদর্শনীর কিউরেটর আমিরুল রাজীব জানান, ফার্নেস তেলে সুন্দরবনের এই দুরবস্থা হলে, একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রভাবে বন নিশ্চিত ধ্বংস হয়ে যাবে। বনজীবী ও সাধারণ মানুষের প্রচেষ্টায় এবারের বিপর্যয় থেকে কোনোভাবে টিকে গেছে বন। বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে একে বাঁচানো মুশকিল হবে। বহু বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করা যাবে, কিন্তু একটি সুন্দরবন তৈরি সম্ভব নয়।
প্রদর্শনীর আয়োজন করেছেন একদল সংস্কৃতিসেবী। প্রদর্শনীর যাবতীয় গবেষণা ও লেখা তৈরি করেছেন প্রাণ ও প্রতিবেশবিষয়ক গবেষক পাভেল পার্থ।
আয়োজক শিল্পী, আলোকচিত্রী, লেখক, গবেষক, সংগীতশিল্পী, সংস্কৃতিকর্মী, শিক্ষার্থী, পরিবেশবিদ এবং পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর দাবি—সুন্দরবনের ভেতর ভারী নৌযান চলাচল বন্ধ করতে হবে এবং রামপালে স্থাপন করা যাবে না বিদ্যুৎকেন্দ্র।
সুন্দরবন রক্ষার এই ভিন্নধর্মী আয়োজন শুক্রবার সকালে শুরু হয়, চলবে আজ (শনিবার) রাত পর্যন্ত। এ প্রদর্শনী দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে আয়োজকদের।