Thank you for trying Sticky AMP!!

জয়ার জয়জয়কার

জয়া আহসান, ছবি: সংগৃহীত

: আপনি কি ভাগ্য বিশ্বাস করেন?

: শুধু ভাগ্য নয়, ভাগ্য আর কর্ম দুটোতেই বিশ্বাসী আমি। আমি মনে করি, কাজই ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করে।
যথাযথ বিনয় রেখে জয়া আহসান স্পষ্ট ভাষাতেই দিলেন প্রশ্নটির উত্তর, তবে ২০১৭ জুড়েই বাংলাদেশি এই তারকার বৃহস্পতি তুঙ্গে।
কীভাবে?

২০১৭ সালে জয়া আহসানের অর্জন ও স্বীকৃতিগুলোর দিকে তাকালে ‘কীভাবে’-এর উত্তরটি পাওয়া যাবে। কিন্তু স্বীকৃতির ফিরিস্তি দেওয়ার আগে এটিও বলে রাখা ভালো, এ বছর বাংলাদেশি এই অভিনয়শিল্পীর স্বীকৃতি-সম্মাননার বেশির ভাগই এসেছে বিদেশ থেকে। ফলে বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে আমাদের জন্যও এটি একটি ঘটনা বটে।
কলকাতায় জয়ার জয়যাত্রা তো কয়েক বছর ধরেই। অরিন্দম শীল পরিচালিত আবর্ত ছবির মাধ্যমে কলকাতার টালিগঞ্জে ২০১৩ সালে যাঁর পা রাখা, সেই জয়া নিজের কাজের ভেতর দিয়ে নজর কেড়েছিলেন প্রথম থেকেই। পরে একটি বাঙালি ভূতের গপ্পো, ঈগলের চোখ, রাজকাহিনী, ভালোবাসার শহর, বিসর্জন প্রভৃতি ছবিতে দুর্দান্ত অভিনয় করে কলকাতার সিনেপাড়া মাতিয়ে দেন। মাত্র চার বছরে বাংলাদেশের জয়া ওই বাংলাতেও মর্যাদার আসনে আসীন। এ বছর পাওয়া একেকটি স্বীকৃতি সেখানে যুক্ত করেছে অনন্য পালক।
এবার স্বীকৃতির শুরুটা হয়েছিল টিভি চ্যানেল এবিপি আনন্দ প্রবর্তিত ‘সেরা বাঙালি পুরস্কার’ দিয়ে, জুলাই মাসে। আর শেষ হয়েছে ‘জি সিনে অ্যাওয়ার্ডস’-এর মধ্য দিয়ে, এই ডিসেম্বরে।

কেবল এই দুই সম্মাননা নয়, জয়ার ঝুলিতে এ বছর জুটেছে আরও অনেক পুরস্কার-হায়দরাবাদ চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী, ‘ইন্টারন্যাশনাল বাঙালি ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড’-এ শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী, যুক্তরাষ্ট্রের ‘ক্যালাইডস্কোপ ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এ শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী।

এ বছরের প্রথমার্ধে মুক্তি পায় ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরী পরিচালিত ছবি ভালোবাসার শহর। পরে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের বিসর্জন। দুই ছবিরই কেন্দ্রীয় চরিত্রে আছেন জয়া। এই দুই ছবিতে দুই রকমের জয়ার যে উপস্থিতি, সেটি এই অভিনয়শিল্পীর জয়যাত্রায় যুক্ত করেছে নতুন মাত্রা। আর এই মাত্রাটি আরও বিস্তৃত হয়েছে বিসর্জন ছবিটি ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে। মুক্তির পর এ ছবি ঘুরেছে বিভিন্ন স্বনামখ্যাত চলচ্চিত্র উৎসবে। এমন একটি ভারতের গোয়াতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শনীর পর যখন দর্শকের ‘স্ট্যান্ডিং অ্যাভিয়েশন’ লাভ করে বিসর্জন, সেখানেও ঘুরেফিরে এসেছে পদ্মার নাম।
না, ‘পদ্মা’ শব্দটি ভুল করে লেখা হয়নি। বিসর্জন সিনেমায় জয়া অভিনীত চরিত্রের নাম পদ্মা।

লিখছি যখন এ বছর জয়ার জয়ের কাহিনি, তখন অবশ্যই এ কথাও লিখতে হবে যে, আনন্দবাজার পত্রিকা টালিউড নায়িকাদের নিয়ে যে শীর্ষ তালিকা তৈরি করছে এবার, সেখানে জয়া আহসান সবার চেয়ে এগিয়ে আছেন। এ যেমন তাঁর ব্যক্তিগত অর্জন, আমাদের জন্যও অত্যন্ত গর্বের বিষয়।
এ ছাড়া অনিমেষ আইচ পরিচালিত বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জিরো ডিগ্রিতে অভিনয় করে ২০১৫ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারটিও প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে জয়া গ্রহণ করেছেন এ বছর। এই লেখায় এ তথ্যটিও থাকা ভালো। কারণ, ২০১৫-এর পুরস্কার হলেও তিনি তো এটি হাতে পেলেন দুই বছর পর, ২০১৭-তে এসে।
এসব মিলিয়েই জয়ার কাছে যে মুহূর্তে জানতে চাওয়া হয়েছিল প্রথম প্রশ্ন, ভাগ্যে বিশ্বাস করেন? উত্তরে ভাগ্যের সঙ্গে তিনি মিলিয়ে দিলেন কাজকে। এরপর দ্বিতীয় প্রশ্নের পালা: এই স্বীকৃতি-সম্মাননার পর কেমন তাঁর অনুভূতি?
যে উত্তরটি জয়া দিয়েছেন, তা হুবহু তুলে তুলে দিচ্ছি:
‘আমি আসলে কাজ করে চলেছি, স্বীকৃতির কথা ভাবিনি। তবে যখন দেখি আমার স্বীকৃতির সঙ্গে সঙ্গে উচ্চারিত হচ্ছে বাংলাদেশের নাম, তখন এক অন্য রকম ভালো লাগা কাজ করেছে মনে।’