নিজেকে এই বেলা শুধরে নিন
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বাংলাদেশি নৃত্যশিল্পী পূজা সেনগুপ্তের নাচের দুটো প্রতিষ্ঠান আছে—তুরঙ্গমি রেপার্টরি ডান্স থিয়েটার ও তুরঙ্গমি স্কুল অব ডান্স। চলতি এপ্রিলেই নাচ নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল ফিলিপাইনে, জুলাইয়ে ইউনেসকোর প্রোগ্রামে গ্রিসে আর অক্টোবরে ভিয়েতনামে। আপাতত এসব ভুলে যেতে হচ্ছে। কারণ, করোনা ঘরের বাইরে বেরোতেই মানা করে দিয়েছে। কিন্তু তাই বলে তো আর কাজ থেমে থাকবে না।
এই বেলা প্রযুক্তির পূর্ণ সদ্ব্যবহার করছেন পূজা। জুম ও গুগল হ্যাংআউট ব্যবহার করে নাচের স্কুলকে তুলে এনেছেন অনলাইনে। ফলে ঢাকার বাইরেও নাচে আগ্রহীরা তাঁদের ই–মেইল, আইডি ও ফি দিয়ে ক্লাস করতে পারছেন। সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে ৪০ জন নাচের শিক্ষার্থী আছেন পূজার।
পূজা বললেন, ‘এটা অনেক বড় সংযোজন। দিনাজপুর, বরিশাল, ময়মনসিংহ—দেশের নানা প্রান্ত থেকে নাচ নিয়ে আগ্রহীরা যোগাযোগ করছে। তাদের একেকজনের গল্প একেক রকম। এই যেমন একটা মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছিল। তারপর নাচও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এখন সে বাড়িতে থেকেই নাচ শিখছে। ওদের কাছ থেকেও কত কিছু শিখছি। তাই করোনাকাল শেষ হয়ে গেলেও অনলাইনে আমাদের নাচের স্কুল খোলা থাকবে।’
পূজার ইচ্ছা, অনলাইনে নাচের স্কুলটা আরও বড় হলে নিজেদের একটা অ্যাপই বানিয়ে নেবেন। আর তিন মাস পরপর ঢাকার বাইরের শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটা কর্মশালা করবেন। সব মিলিয়ে করোনাকাল যেমন যাবে ভেবেছিলেন, তার চেয়ে ঢের ভালো কাটাচ্ছেন। হাতে–কলমে পেরেছেন। তিনি বলেন, দূরে দূরে থেকেও একসঙ্গে অনেক বড় কাজ করা যায়।
প্রতি শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত নিয়মিত ক্লাস চলে। তা ছাড়া শনি, সোম ও বুধবার চলে গ্রুপের আলাপ আর নতুন প্রোডাকশন এগিয়ে নেওয়ার কাজ। এসবের বাইরে পূজা নিয়মিত ইয়োগা, অ্যারোবিকস করছেন। বিকেলে নিয়মিত পায়েস, আলুর চপ, পুডিং বানাচ্ছেন। করোনাকাল পূজাকে নতুন করে শিখিয়েছে পরিবারের গুরুত্ব। পরিবারই সব শক্তির উৎস, এই ক্রান্তিকালে পূজা এ সত্য নতুন করে অনুধাবন করলেন।
পূজা বলেন, ‘এখন সবাই বলছে, হাত ধোন। রাস্তায় থুতু ফেলবেন না। হাঁচি, কাশির সময় রুমাল ব্যবহার করুন। যেখানে–সেখানে ময়লা–আবর্জনা ফেলবেন না। চারপাশ পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন রাখুন। অপচয় করবেন না, সংযমী হোন। এগুলো তো খুবই স্বাভাবিক আচরণ ও অভ্যাস হওয়া উচিত। তাহলে করোনাকালে আমরা জানলাম যে আমরা কতটা পিছিয়ে ছিলাম আর আছি।’
পূজা আরও বলেন, ‘কিছু হলেই আমরা সরকারের দোষ দিই। এই কাজে আমরা খুবই পটু। কিন্তু সরকার তো একটা সিস্টেম। আমরা দেশের প্রত্যেক নাগরিক সেই সিস্টেমের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই আমরা যদি ভালো না হই, সরকার ভালো হবে না।’ এ কারণে ‘যত দোষ নন্দ ঘোষ’ না বলে নিজেকে এই বেলা শুধরে নিতে বলেছেন পূজা।
আরও পড়ুন
-
রাজনীতি আর ক্ষমতার দাপটও টেকাতে পারল না পদ্মা ব্যাংককে
-
তদন্ত প্রতিবেদনগুলো বলছে, বনজীবীদের ফেলে আসা আগুনে সুন্দরবন পোড়ে
-
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি: তদন্ত প্রতিবেদন আজও জমা পড়েনি
-
সিরাজগঞ্জে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রার্থীর বৈঠক শুনে পুলিশের অভিযান
-
তদন্ত শেষ, তবু সিআইডিতে আটকে আছে ২০০০ মামলা