Thank you for trying Sticky AMP!!

প্রতিষ্ঠিত চিন্তাকে আঘাত করা সিনেমা

থ্রি ইডিয়টস, ক্রিস্টোফার কলম্বাস: দ্য ডিসকভারি ও মেমোরিজ ইন মার্চ ছবির পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত

আজকের সিনেমাগুলো ঐতিহাসিকদের নির্মিত এমন কিছু ইতিহাস ও প্রতিষ্ঠিত চিন্তাকে আঘাত করার গল্প নিয়ে।

আমেরিকায় এখনো ১২ অক্টোবর ছুটির দিন। ১৪৯২ সালের এই দিনেই ক্রিস্টোফার কলম্বাস আমেরিকা আবিষ্কার করেছিলেন বলে ইতিহাস আছে। তবে ১৯৮০ সালে এই ইতিহাসকে আঘাত করেন আমেরিকান ইতিহাসবিদ হাওয়ার্ড জিন। অ্যা পিপলস হিস্ট্রি অব দা ইউনাইটেড স্টেটস বইয়ে কলম্বাসকে খলনায়ক বলতেও কার্পণ্য করেননি জিন। এ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৯২ সালে পরিচালক জন গ্লেন বানান ক্রিস্টোফার কলম্বাস: দ্য ডিসকভারি নামের সিনেমা। পুরো সিনেমায় কলম্বাসের বীরত্বের গল্প থাকলেও শেষ মুহূর্তে এক ইঁদুরের প্রতীকী দৃশ্যের মাধ্যমে পরিচালক বুঝিয়েছেন আধুনিক বিশ্বে বর্বরতাও বয়ে এনেছিলেন কলম্বাস।

২০০৯ সালে অ্যাভাটার সিনেমা দিয়ে স্থানীয় সংস্কৃতিতে আমেরিকানদের খবরদারির গল্প বলেছেন জেমস ক্যামেরুন। বোঝানোর চেষ্টা করেছেন ‘শান্তি প্রতিষ্ঠা’ নামের নির্মিত ধারণাকে পুঁজি করে ইরান, ইরাক, আফগানিস্তানে আমেরিকানদের দখলদারি ও ক্ষমতা প্রয়োগের মনোভাবকে।
দেখে নিতে পারেন গৌতম ঘোষের শঙ্খচিল, ক্যাথরিন ও তারেক মাসুদের অন্তর্যাত্রা ও প্রদীপ্ত ভট্টাচার্যের বাকিটা ব্যক্তিগত। জাতীয়তাবাদ এমনকি প্রেমের ক্ষেত্রেও সমাজ নির্মিত কিছু চিন্তাকে বদলানোর চেষ্টা করেছেন সিনেমাগুলোর নির্মাতারা। মেমোরিজ ইন মার্চ অদেখা রাখাটাও উচিত হবে না। লিঙ্গীয় ধারণাকেও আঘাত করতে বাদ দেননি ঋতুপর্ণ ঘোষ। ২০১০ সালের এই সিনেমায় পরিচালক দেখিয়েছেন লিঙ্গীয় বিষয়টি মূলত অনুভূতির। ঋতুপর্ণ ঘোষ দেখিয়েছেন, একজন পুরুষের মধ্যেও নারী সত্তা কাজ করতে পারে। শারীরিক গঠন বায়োলজিক্যাল ব্যাপার। কিন্তু একজন পুরুষের মধ্যে যদি মেয়েলি আচরণ থেকেই থাকে, তবে সেটা তো কোনো না কোনো মানুষেরই অনুভূতি। সে অনুভূতিতেও ভালোবাসা থাকে। একইভাবে বাড়িওয়ালি সিনেমায় অনুভূতির বয়সসীমা না থাকার গল্প বলেছেন ঋতুপর্ণ।

রাজকুমার হিরানির থ্রি ইডিয়টস দেখেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। পুরো শিক্ষাব্যবস্থার প্রচলিত ধারণা পাল্টে দেওয়া একটি সিনেমা। দু-তিনবার তো দেখেছেন এমন অনেক দর্শককে বলতে শোনা যায়, ১০ বার দেখেও এই সিনেমার প্রতি বিতৃষ্ণা জাগেনি তাঁদের।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর টেলিভিশন, থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বারও দেখতে পারেন। ঘর ছাড়া এক তরুণীর সমাজের কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়ার গল্প বলে থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার।
তবে এই সিনেমাগুলো দেখার পর আপনার অনুভূতি যেমনই হোক, প্রচলিত চিন্তা, বিশ্বাস বদলাক বা না বদলাক, অন্তত এটা বিশ্বাস করুন যে নির্দেশনা না মানলে করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন আপনিও।