Thank you for trying Sticky AMP!!

প্রযোজকদের বাঁচাতেই নির্বাচন

স্বপ্নজাল ছবিতে ইয়াশ রোহান ও পরীমনি। নানা প্রতিবন্ধকতায় এমন আরও অনেক চলচ্চিত্রের প্রযোজক লগ্নিকৃত টাকা ফেরত পান না।

প্রেক্ষাগৃহে ছবি হাউসফুল, অথচ টাকা ফেরত পান না প্রযোজক! না চললে তো পানই না। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতি কার্যকর না থাকাই এর অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন প্রযোজক–পরিবেশকদের অনেকে। সবার স্বার্থ রক্ষার জন্য তাই নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছে সমিতি।

২৭ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির নির্বাচন। চলচ্চিত্রের নানাবিধ সমস্যা, সারা দেশে সিনেপ্লেক্স চালু করা, প্রেক্ষাগৃহ থেকে প্রযোজকের ঠিকমতো পাওনা আদায় ইত্যাদি নিয়ে কাজ করবেন ভবিষ্যতের নেতারা।

দেশ ও দেশের বাইরে ছবির ব্যবসায়িকভাবে সফলতা, দর্শকেরা প্রেক্ষাগৃহে লাইন ধরে ছবি দেখছেন, এরপরও প্রযোজক টাকা পান না—দেশের চলচ্চিত্রের এ যেন এক স্বাভাবিক চিত্র। কোটি টাকা বিনিয়োগ করে লাভ দূরে থাক, লগ্নি করা টাকার দেখাই পান না প্রযোজক। একটি ছবি প্রযোজনা করেই পরবর্তী ছবি করার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েন।

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির এবারের নির্বাচনে ৪৩ জন প্রার্থী হয়েছেন। ১৪০ জন ভোটার ১৯ জনকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করবেন। নির্বাচিত ব্যক্তিদের দায়িত্ব কী হবে, জানতে চাইলে বেশ কয়েকজন প্রযোজক প্রার্থী জানান, তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় প্রস্তাবিত সারা দেশে পাঁচ শতাধিক সিনেপ্লেক্স বাস্তবায়নের ব্যাপারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া, ই–টিকিটিং ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নেওয়া, পাইরেসি দমনে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া, প্রেক্ষাগৃহমালিক ও প্রযোজকের প্রকৃত শেয়ার মানির সুষম বণ্টন, দেশের প্রেক্ষাগৃহের পরিবেশ উন্নত করা, চলচ্চিত্রের শুটিংয়ে শিল্পীদের নিয়মানুবর্তী করা, অনুদানের সিনেমা প্রযোজনা যেন প্রযোজক সমিতির মাধ্যমে করা হয়, দেশি সিনেমা বিদেশের প্রেক্ষাগৃহে নিয়মিত বিপণন নিশ্চিতকরণ, সেন্সর বোর্ড কিংবা গ্রেডেশন বোর্ডসহ চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক সব কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু এফডিসিতে ওয়ান–স্টপ সেন্টারের মাধ্যমে নিশ্চিত করা, চলচ্চিত্র মুক্তির যথাযথ নির্দেশনা ও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করাসহ আরও অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ঢাকার চলচ্চিত্রে প্রেক্ষাগৃহমালিক ও প্রযোজকদের মধ্যে টিকিটের আয় (শেয়ার মানি) বণ্টন নিয়ে আছে নানা ঝামেলা। প্রতিটি টিকিট বিক্রির টাকা থেকে প্রেক্ষাগৃহের ব্যবস্থাপনা খরচ, এসি চার্জ, পৌর কর, ভ্যাট বাদ দিয়ে বাকি টাকা হলমালিক ও প্রযোজকের মধ্যে ভাগাভাগি হয়। প্রযোজক যে অংশটুকু পাচ্ছেন, তা থেকে আবার প্রেক্ষাগৃহে প্রজেকশন মেশিন ভাড়া, ব্যানার, হলের পোস্টার খরচ, বুকিং এজেন্টের কমিশন, হলে পাঠানো প্রতিনিধিদের পারিশ্রমিকও প্রযোজককেই বহন করতে হয়। প্রযোজকদের ভাষ্য, এই খরচগুলো দিতে হলে তাঁদের হাতে আর কিছুই থাকে না।

প্রযোজক সমিতির নির্বাচনে প্রার্থী প্রযোজক কামাল কিবরিয়া লিপু মনে করছেন, বর্তমানে প্রযোজকদের পাশাপাশি আরও অনেক নতুন বিনিয়োগকারীকে চলচ্চিত্রে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। তাহলে চলচ্চিত্র চাঙা হবে। তিনি বলেন, সবার চিন্তা চলচ্চিত্রের উন্নতি। প্রযোজকদের চিন্তা যদি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, নতুন নেতৃত্ব শতভাগ না হোক, ৫০ ভাগ সমস্যা নিরসন হবেই।

প্রযোজক বাঁচলেই চলচ্চিত্র বাঁচবে, এমনটাই মনে করেন প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু। তিনি বলেন, ‘চলচ্চিত্রের স্বার্থ রক্ষা করাটাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। সরকার সারা দেশে সিনেপ্লেক্স তৈরির ব্যাপারে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন, আমাদের সংগঠনের কাজ হবে এসব বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ গুরুত্বের ব্যাপারটি নিশ্চিত করা। ই–টিকিটিং, পাইরেসি প্রতিরোধ, প্রেক্ষাগৃহমালিক ও প্রযোজকের শেয়ার মানির ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে হবে।’

চলচ্চিত্রের কারিগরি মান এবং ভালো সিনেমা তৈরির ব্যাপারেও গুরুত্ব দিতে চান প্রযোজক নেতা এম এন ইস্পাহানী।

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধিত এফবিসিসিআইয়ের অঙ্গসংগঠন। মামলা ও নানা জটিলতার কারণে প্রায় সাত বছর ধরে বন্ধ ছিল এই সমিতির নির্বাচন।