Thank you for trying Sticky AMP!!

প্রস্তুত দেশের মাল্টিপ্লেক্সগুলো, অনুমতি মিললেই খুলবে

মাল্টিপ্লেক্সগুলো প্রস্তুত দর্শকদের বরণ করে নিতে। নেওয়া হচ্ছে সব রকমের নিরাপত্তা। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বব্যাপী করোনার আতঙ্কে মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে বন্ধ হতে থাকে দেশের মাল্টিপ্লেক্সগুলো। সরকারি নির্দেশনা মেনে জুন মাস থেকে প্রায় সবকিছুই স্বাভাবিকভাবে চলতে শুরু করলেও সিনেমা হল খোলা নিয়ে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি হলমালিকদের কাছে। মেলেনি অনুমতি। মাল্টিপ্লেক্স–সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘ চার মাস বন্ধ থাকার পর তাঁরা অনেকেই ইতিমধ্যে সিনেপ্লেক্স খোলার জন্য প্রস্তুত আছেন, অনেকে প্রস্তুত হচ্ছেন। সরকারি নির্দেশনা ও অনুমতি পেলেই সবাই পুরোপুরি নিরাপত্তা নিয়ে দর্শকদের জন্য মাল্টিপ্লেক্সগুলো খুলে দিতে চান।


করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার প্রথম দিক থেকেই সংক্রমণ এড়াতে জনসচেতনতায় বসুন্ধরার স্টার সিনেপ্লেক্স, শ্যামলী, সীমান্ত স্কোয়ার, যমুনা ব্লকবাস্টারসহ সব অভিজাত সিনেমা কমপ্লেক্স এক এক করে বন্ধ হতে থাকে। কারণ, প্রতিটি হলে প্রতিদিন চার–পাঁচটি করে শো হয়। অনেক মানুষের সমাগম এড়াতে গত ২০ মার্চ থেকে বন্ধ হয় স্টার সিনেপ্লেক্স। ইতিমধ্যে বসুন্ধরা শপিং মল চালু হলেও চার মাসের বেশি সময় ধরে সিনেমা হলটি বন্ধ আছে। হলটি চালু করা প্রসঙ্গে সিনেপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের খোলার ইচ্ছা আছে। আমরা তৈরি আছি। কিন্তু এটার অনুমতি তো আমাদের হাতে নেই। বাংলাদেশ প্রদর্শক সমিতি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে খোলার ব্যাপারে যোগাযোগ করছে। আমরা সরকারের গ্রিন সিগন্যালের জন্য অপেক্ষা করছি।’ হল খুললেও দর্শকদের জন্য হলটি কতটা নিরাপদ হবে, এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘কীভাবে দর্শক নিরাপদে ছবি দেখতে আসবে, সেগুলো নিয়ে প্রাথমিক প্রস্তুতির কথা ভেবেছি। সংক্রমণকে মাথায় রেখে স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, হলের ভেতরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা হবে। হলের আসনসংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হবে। নতুন–পুরাতন মুভি যা–ই আসুক, সরকার অনুমতি দিলেই আইন মেনে আমরা হল চালু করব।’

জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করা হচ্ছে আসন। ছবি: সংগৃহীত

গত ২১ মার্চ থেকে বন্ধ রাজধানী যমুনা ফিউচার পার্কের ‘যমুনা ব্লকবাস্টার’ সিনেমা হল। এই হলের কর্তৃপক্ষও হলটি খোলার প্রস্তুতি নিয়ে সরকারের অনুমতির অপেক্ষা করছে। তবে সংকটের কথাও ভাবছে তারা। এই হলের মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ মাহবুবুর রহমান জানান, ‘আমাদের যে কর্মিবাহিনী, তারা সবাই প্রস্তুত আছে। আমাদের সব নিরাপত্তাসামগ্রী থাকবে। কিন্তু এখন খুললেই কি আদৌ সিনেমার টিকিট বিক্রি হবে, দর্শক কি আসবে? তা ছাড়া বিশ্বে নতুন ছবি মুক্তি দেওয়া বন্ধ আছে। এখন অনেক পুরাতন ছবি দিয়ে দর্শক টেনে কতটা টিকে থাকতে পারব, সেটাও ভাবনার বিষয়। ঈদের আগে অনুমতি পেলে ঈদকে টার্গেটে রাখব।’

মাল্টিপ্লেক্স বা সিনেমা হল খোলা নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না, তা জানতে চাইলে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও চলচ্চিত্র) জাহানারা পারভীন জানান, ‘মাল্টিপ্লেক্স খোলার বিষয়ে আমাদের এখনো কোনো মিটিং হয়নি। এটা আমার নলেজে নেই। এখন মন্ত্রী মহোদয় কিংবা অন্য কেউ মিটিং করেছেন কি না, সেটা বলতে পারব না।’ প্রদর্শক সমিতির সহসভাপতি মিয়া আলাউদ্দীন বলেন, ‘সিনেপ্লেক্সগুলো খুলতে চায়, কারণ, তারা আলাদা প্রস্তুতি নিতে পারবে। কিন্তু সার্বিকভাবে সব হল কতটা সামাজিক দূরত্ব মেনটেইন করে দর্শককে সিটে বসাতে পারবে, সেটাকে বিবেচনায় আনতে হবে। তবে সরকার অনুমতি দিলে আমরা খোলার ব্যবস্থা করব।’

এদিকে সার্বিকভাবে সব প্রেক্ষাগৃহ খুলতে একাধিক চিঠি দিয়েছে প্রযোজক–পরিবেশক সমিতি। প্রযোজক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, ‘বিভিন্ন দেশ সিনেমা হল খুলে দিচ্ছে। আমরা এ বিষয়ে কোনো দিকনির্দেশনা বা সাড়া পাচ্ছি না। তাই দ্বিতীয়বার চিঠি দিয়েছি। জবাবের অপেক্ষায় আছি।’ তিনি মনে করেন, প্রেক্ষাগৃহ খুললেও তেমন দর্শক সেখানে পাওয়া যাবে না। তবু স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাঁদের বসার ব্যবস্থা করতে হবে। সে ক্ষেত্রে একজন দর্শকের ডানে, বাঁয়ে, পেছনে ও সামনের সিট খালি রেখে তাঁর বসার ব্যবস্থা করতে হবে। ফাঁকা আসনের টিকিটের মূল্য সরকার দেবে। এতে প্রেক্ষাগৃহের মালিক ও ছবির প্রযোজক উভয়েই বাঁচবে।