Thank you for trying Sticky AMP!!

সাত ভাইয়ের গল্প

বিকাল বেলার পাখি নাটকে ইফফাত তিশা ও অ্যালেন শুভ্র

বিটিভির ঐতিহ্যবাহী ঈদ অনুষ্ঠান ‘আনন্দমেলা’র শুরুতেই উপস্থাপক বলতেন, ‘ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি।’ এই অর্থে কোনো ভুল নেই। তবে ঈদের আরেকটা অর্থও আছে, ঈদ মানে পুনর্মিলন। ইংরেজিতে যেটা রি-ইউনিয়ন। ঈদের সময়টাতে পরিবারের সব সদস্য এক হয়, বন্ধুরা খুঁজে পায় পুরোনো আড্ডার ঠিকানা। সেই আড্ডায় গল্পের ঝাঁপি খুলে বসে সবাই। একেকজনের গল্প একেক স্বাদের। ‘ছবিয়াল’ও এবার ঈদে পুনর্মিলিত হয়েছিল, এই আয়োজনের নাম দিয়েছিল ‘ছবিয়াল রি-ইউনিয়ন’। ভাই-ব্রাদাররা নিজেদের গল্প বলেছেন। সাতজনের (পড়ুন: সাত ভাইয়ের) সাত রকম গল্প। ঈদের সাতটা দিন অনেকেই টিভির সামনে বুঁদ হয়ে বসে উপভোগ করেছেন গল্পগুলো। বেশ কয়েক বছর ধরে একটা কথাই শুনে আসছিলাম, ‘বাংলা নাটক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে দর্শক’। এবার অফলাইন আর অনলাইনে এই নাটকগুলো নিয়ে দর্শকের আগ্রহ আর প্রশংসা শুনে মনে হয়েছে ‘নিশি ভোর হলো...’।

বছর কয়েক আগে ঈদে একটা নাটক বানিয়েছিলেন ছবিয়ালের আদনান আল রাজীব। নামটা ছিল অ্যাটএইটিন: অলটাইমদৌড়েরউপর। নতুন ধরনের গল্প আর নির্মাণশৈলীতে মুগ্ধ করেছিলেন পরিচালক। সমস্যা হলো, তারপর থেকে এই নাটকটারই ‘ফটোকপি’ ঘুরতে লাগল আমাদের টিভি চ্যানেলগুলোতে, বিশেষ করে ঈদের সময়টাতে! গল্পের পুঁজি হলো একদল ঝকমকে তরুণ, চকচকে গাড়ি, তকতকে রেস্তোরাঁ, বিশাল হাইওয়ে, তারচেয়েও বিশাল ধনী একজন বাবা আর অসম্ভব ভাঁড়ামো। এবারের পর থেকে দৃশ্যপট পাল্টেও যেতে পারে! কারণ, রাজীবের এবারের নাটক বিকালবেলারপাখিদেখার পর সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিষণ্ণতায় আচ্ছন্ন থাকতে পারেন আপনি! গল্পটা পুরোনোই, নতুন কিছু নয়। কিন্তু কিছু পুরোনো সব সময়ই নতুন, এই নাটকটা দেখার পর তেমনটাই মনে হলো। ফজলুর রহমান বাবু, অ্যালেন শুভ্র, ইফফাত তিশা কিংবা শিশুশিল্পী সাফানা নমনীর অভিনয় দেখে একটা দুখী পরিবারের জন্য বুকের কোথায় যেন চিনচিন করে ওঠে!

আজকাল অনেকেই যত্রতত্র চিকন পিনের চার্জার খোঁজেন। সহজে এই বস্তু মেলে না। হুমায়ূন সাধুর নাটকের নামও ছিল চিকনপিনেরচার্জার। এই নাটকে তিনি নিজেও বিস্তর খুঁজেছেন এই বস্তুটি; পাননি। তবে গল্পের একবারে শেষ ভাগে গিয়ে তিনি সন্ধান পান চিকন পিনের মতোই প্রায় দুর্লভ এক সত্যের! সন্দেহ নেই, আপনিও পাবেন।

চিকন পিনের চার্জার নাটকে হুমায়ূন সাধু ও শাহ্‌তাজ

মুহম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের ২৬দিনমাত্রপুরোপুরি সাদাকালো নাটক। গল্পের শুরুটাও আসলে সেই সাদাকালো আমলেই। আগাগোড়া প্রেমের গল্প। নায়ক-নায়িকা কে জানেন? শক্তিমান দুই শিল্পী আমজাদ হোসেন ও দিলারা জামান। এই দুই প্রবীণের প্রেম কিংবা বিরহের গল্প মন্দ লাগবে না।

পুতুলেরসংসারদেখলে আবার পুতুল নামের মেয়েটার জন্য কষ্টই হবে। শতাব্দী ওয়াদুদ আর তিশাকে দিয়ে চমৎকার অভিনয় করিয়েছেন পরিচালক আশুতোষ সুজন। তবে সামগ্রিক িবচারে নাটকটি গড়পড়তা গোছের।

মি. জনি নাটকে অভিনেতা মোস্তফা মনোয়ার

শরাফ আহমেদ জীবনের আবারতোরাসাহেবদেখে মনে হলো, আবার তোরা জোর করে হাস! আশফাক নিপুণের নাটকের নাম ছিল ছেলেটাকিন্তুভালোছিল। এটা দেখে একটা কথাই মনে হয়েছে, ‘দ্বন্দ্বসমাস কিন্তু এর চেয়ে ভালো ছিল’!

ছবিয়ালের অধিকাংশ নাটকই চমৎকার। সন্দেহ নেই, ঈদের আনন্দ কয়েকগুণ জোরদার করতে ভাই-ব্রাদাররা ধন্যবাদ পাবেন। অধিকাংশ শিল্পী অভিনয়ও করেছেন দারুণ। তবে আরেকজনের কথা বিশেষভাবে বলতেই হবে—মি. জনি, সে মানুষ নয়, সারমেয়। রেদওয়ান রনির মি. জনিনাটকে অভিনেতা মোস্তফা মনোয়ারও মুগ্ধ করেছেন। আর তাঁর সঙ্গে দিব্যি পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছে মি. জনি। অনেকেই বলছিল, এ বছর তাকে পুরস্কৃত না করলে ঘোর অন্যায় হবে!