Thank you for trying Sticky AMP!!

সিনেমা হল খুলতে হবে, দিতে হবে প্রণোদনাও

সিনেমা নেই। নিঃসঙ্গ ‘বলাকা’র ফাঁকা বোর্ডে নেই কোনো সিনেমার ব্যানার। ছবি: প্রথম আলো

সিনেমা নেই। নিঃসঙ্গ ‘বলাকা’র ফাঁকা বোর্ডে নেই কোনো সিনেমার ব্যানার। করোনায় বন্ধ হয়ে ধুঁকতে শুরু করেছে পুরোনো সব সিনেমা হল। নীলক্ষেতের বলাকাও সেই দলে। অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে স্টার সিনেপ্লেক্সের মতো মাল্টিপ্লেক্সও বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশে চলচ্চিত্র ব্যবসা অনেক আগেই ‘ভোকাট্টা’ হয়ে গেছে। মফস্বলের অনেক হল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পালাক্রমে বন্ধ হতে পারে আরও। শহরের অনেক হলের একই দশা হবে বলে বারবার জানিয়েছেন প্রদর্শক সমিতির নেতারা। আর করোনা যেন সিনেমা ব্যবসার কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। সবকিছু খুলে গেলেও এখনো খোলেনি সিনেমা হল। খোলা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্তও ঝুলে আছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন, দেশের অর্থনীতির প্রায় সব খাতের মতো প্রেক্ষাগৃহও খুলে দিতে হবে। এ ব্যবসাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য দিতে হবে প্রণোদনা, অনুমতি দিতে হবে উপমহাদেশীয় সিনেমা চালানোর।

এ প্রসঙ্গে চলচ্চিত্রকার মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ফেসবুকে একটি পোস্টে লেখেন, ‘সারা দুনিয়ার সরকার সিনেমা–সংশ্লিষ্ট পেশাজীবী এবং থিয়েটারগুলোকে বিভিন্ন রকম প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছে। যদি সত্যিই সিনেমার ভালো চান, তাহলে সংশ্লিষ্টদের প্রণোদনার আওতায় আনুন। স্টার সিনেপ্লেক্স স্রোতের বিরুদ্ধে ব্যবসা চালু করে দারুণ সাফল্য দেখিয়েছে এবং বাংলাদেশের সিনেমা প্রদর্শনের একটা বড় জায়গা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।’

করোনার এই সময়ে নতুন ছবি মুক্তি দিতে আগ্রহী নন অনেক প্রযোজক। তাঁদের আশঙ্কা, করোনাকালে মুক্তি পেলে ব্যবসা করতে পারবে না ছবি, টাকাও উঠবে না। অন্যদিকে প্রদর্শকেরা মনে করেন, এই সময়ে হলগুলোতে পুরোনো হিন্দি ছবি চালানো গেলে একদিকে হল চালু করা যাবে, কিছুটা ব্যবসাও আসবে। প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন, ‘পুরোনো হিন্দি ছবি চালানো হলে এখনো হল বাঁচানো সম্ভব।’ তবে প্রযোজকদের কাছে সেন্সর পাওয়া নতুন ছবিগুলোও মুক্তি দেওয়ার অনুরোধ করেছেন কোনো কোনো প্রদর্শক।
হিন্দি ছবি চালানোর বিপক্ষে ছিল প্রযোজক সমিতি। এখন তারাও বলছে, হিন্দি ছবি চালাতে হবে। আগে হল বাঁচাতে হবে। প্রযোজক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু বলেন, ‘হল বাঁচলে সিনেমা বাঁচবে। এ জন্য আমরা আমাদের আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছি। আমরা চাই দেশে উপমহাদেশীয় ছবি চলুক।’

মাল্টিপ্লেক্সগুলো হলিউডের সঙ্গে একই সময়ে দেশে নতুন ছবি মুক্তি দিয়ে দারুণ ব্যবসা করেছে। বড় পর্দায় ছবি দেখার সুযোগ তরুণদের সিনেমারুচি ও অভিজ্ঞতার উন্নয়নে বড় ভূমিকা রেখেছে। সেখানে একই সঙ্গে উপমহাদেশীয় চলচ্চিত্র চালানোর ব্যবস্থা সিনেমাকে এগিয়ে নেবে বলে অনেকেরই বিশ্বাস। নির্মাতা ফারুকী প্রথম আলোকে বলেন, ‘উচ্চ হারে কর আরোপ করে দেশে সব ভাষার ছবি চালানো উচিত। তবে নিয়ম করে সেগুলোর প্রদর্শনী সীমিত রাখতে হবে।’
সহায়তা না পেলে স্টার সিনেপ্লেক্স বন্ধ করার কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ, তুলে ধরেছে নানা দাবি। এ নিয়ে প্রথম আলোর অনলাইনে প্রকাশিত খবরে মন্তব্য করেন পাঠকেরা। এক পাঠক লিখেছেন, ‘আমেরিকান নেটফ্লিক্স, আমাজন প্রাইম—এসবের ভিড়ে এমনিতেই অবস্থা আরও খারাপ হবে। আমেরিকান বুদ্ধির কাছে সবাইকে সবকিছুতে আত্মসমর্পণ করতে হবে একদিন...,
আরেক পাঠক মন্তব্য করেন, ‘উপমহাদেশের সিনেমা বাংলায় ডাবিং করে মুক্তি দিতে হবে। বলিউডের সিনেমা সাউথ ইন্ডিয়াতে তামিল-তেলেগু ভাষায় রিলিজ দেওয়া হয়, একটি স্বাধীন দেশে কেন হবে না? এতে আমাদের ডাবিং আর্টিস্টদেরও কর্মসংস্থান হবে।’
আবার হিন্দি ছবি আমদানির বিরুদ্ধেও বলেন এক পাঠক। তিনি লিখেন, ‘একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় হিন্দি চলচ্চিত্র বাংলাদেশে আমদানি করার পাঁয়তারা করছে। আশা করি, কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখবে।’