Thank you for trying Sticky AMP!!

সৃজিলার সংবর্ধনায় বিক্রমপুরের কাসুন্দি, ঠাকুরবাড়ির কষা মাংস

মিথিলা ও সৃজিত। ছবি: প্রথম আলো

বিয়ের আড়াই মাস পর বিয়ের দাওয়াত দিয়েছেন সৃজিত ও মিথিলা ওরফে সৃজিলা। দুজনের পক্ষ থেকে তৈরি করা হয়েছে দুটি আমন্ত্রণপত্র। মিথিলা ও সৃজিতের বিয়েতে যাঁরা থাকতে পারেননি, তাঁদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সৃজিত–মিথিলার বিবাহোত্তর এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে। ২৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা শহরের একটি রেস্তোরাঁয় এ অনুষ্ঠানে অতিথিদের খাওয়ানো হবে বিক্রমপুরের কাসুন্দি, ঠাকুরবাড়ির কষা মাংসের মতো সব রেসিপি।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোর সঙ্গে ফোনালাপে এসব কথা জানান বাংলাদেশের অভিনেত্রী মিথিলা। বান্দরবানে বন্ধুর বিয়ের অনুষ্ঠানস্থল থেকে মিথিলা বলেন, ‘বাঙালি বিয়েতে সবাই যেমন শাড়ি পরে, আমি পরব। সৃজিত পরবে ধুতি–পাঞ্জাবি। কলকাতার চলচ্চিত্রে সৃজিতের বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজনেরা উপস্থিত থাকবেন। ঢাকা থেকে পরিবারের লোকজন ছাড়া কাছের কয়েকজন বন্ধু ও সহকর্মী এখানে অংশ নেবেন।’

বিয়ের এত দিন পর বিয়ের দাওয়াত দেওয়ার কারণ কী? মিথিলা বলেন, ‘আমি ও সৃজিত দুজনই খুব ব্যস্ত। আমি অফিসের কাজ নিয়ে আর সৃজিত সিনেমা। ইচ্ছে থাকলেও বড় কোনো আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না। বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের পরদিন সৃজিত চলে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকায়, সিনেমার শুটিংয়ে। আমি পরের সপ্তাহে অফিসের কনফারেন্সে ডেনমার্কে যাব। সেখান থেকে আবার অফিসের কাজে দক্ষিণ আফ্রিকা। পুরো মার্চ মাসে আমাদের পরস্পরের সঙ্গে দেখা হবে না। বিয়ের সময় সৃজিত সবাইকে বলতে পারেনি, তাই এই আয়োজন।’

মিথিলা ও সৃজিত। ছবি: প্রথম আলো

মিথিলা তাঁর আমন্ত্রণপত্রের শুরুতে লিখেছেন, ‘প্রেম কেবলই একটি রাসায়নিক বিক্রিয়া কি না জানি না। তবে এটুকু জানি, মুখোমুখি বসে কথপোকথনের পর উপযুক্ত এক্স ফ্যাক্টরের সন্ধান পেলে এখনো প্রেম হয়ে ওঠে সেই ল্যান্ডফোনের দিনগুলোর মতোই মধুর। তাই সস্তা ক্ষোভ আর অ্যাঙ্গার স্টোরির টাইমলাইন পেরিয়ে আবার লাল বেলুনের স্বপ্ন। আপনাদের চেনা মিথিলা আর সৃজিত তাই এখন ‘হি অ্যান্ড শি’ থেকে ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস।’

মিথিলার আমন্ত্রণপত্রে আরও লেখা ছিল, ‘রোমিও-জুলিয়েট, লাইলি-মজনু বা আলাদীন-জেসমিনের কেস স্টাডি ফলো করে সম্পর্কের ডেভেলপমেন্ট রিসার্স জানে, যেগুলোকে আমরা ব্যবধান আর দূরত্বের কারণ ভাবি, সেগুলোই আসলে ভালোবাসার পাগলা ঘুড়িকে সামলে রাখে মজবুত সুতোর মতোন। তাই আলাদা দেশ, আলাদা ধর্ম নিয়ে ওঠা নানা কথা আমাদের আলাদা তো করতে পারেইনি, বরং এনেছে এক বৃত্তাল্পনার ঠিক মাঝখানে। নবাব হোক বা গুন্ডা, বেড়ে ওঠার গল্প “আমার আমি” থেকে “আমার গল্পে তুমি”-তে বদলালে উৎসব পালন করতে হয় সবাইকে।’

আমন্ত্রণপত্রের শুরুতে সৃজিত তিনি লিখেছে, ‘আমাকে আমার মতো থাকতে দাও’ বলার দিন এবার শেষ। ‘নৌকার পালে চোখ রেখে’ দিন কাটানোর আশায় বিয়েটা করেই নিলাম। তাই আপাতত মিথিলা আর সৃজিত ‘এক রাস্তায় ট্রামলাইন, এক কবিতায় কাপলেট।’

মিথিলা ও সৃজিত। ছবি: প্রথম আলো

সৃজিত তাঁর কার্ডে লিখেছেন, ‘পৃথিবীর সব উৎসবের ইতিহাসই বন্ধুবান্ধবদের খাওয়ানোর ইতিহাস। তাই নতুন আলুর খোসা আর ভালোবাসা দিয়ে ভাত-ডাল মাখার আগে চাই একটা জমজমাট হুল্লোড় আর ভূরিভোজ। ইংলিশ মিডিয়ামে যাকে বলে, “রিসেপশন”। খাঁটি বাঙালি শব্দ-বৌভাত।’ সবশেষে লিখেছেন, ‘আমাদের খুনসুটি আর ঝগড়াঝাঁটির জীবন আড্ডা দিয়ে জমজমাটি করে তুলতে আসবেন কিন্তু। নমস্কারান্তে মুখার্জি কমিশন।’

গত ৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাতটায় দক্ষিণ কলকাতায় লেক গার্ডেনসে সৃজিত মুখার্জির বাসায় মিথিলা ও সৃজিতের বিয়ের নিবন্ধন হয়। ঘরোয়া সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মিথিলার মা-বাবা, ভাইবোন ও সৃজিতের পরিবারের সদস্যরা। আরও ছিলেন এই দুই তারকার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন বন্ধু, তাঁরা সবাই চলচ্চিত্রের খুব পরিচিত মুখ। পরদিন তাঁরা মধুচন্দ্রিমার জন্য চলে যান সুইজারল্যান্ডে।

মিথিলা জানান, একদম বাঙালি কায়দায় বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হবে। কলকাতার বিয়েতে অনেক পদের খাবার থাকে। খাবারের মেন্যুতে অনেক বৈচিত্র্য থাকবে। এই যেমন চিকেন, মাটন, ফিশ অরলি উইথ বিক্রমপুরের কাসুন্দি, ঠাকুরবাড়ির কষা মাংস, চিংড়ি মালাইকারি, মোরগ জাফরানি আর নানান পদের সবজি।