Thank you for trying Sticky AMP!!

সেন্সর বোর্ড বলছে গল্পটি হোলি আর্টিজানের, কিন্তু নির্মাতা কী বলছেন?

‘শনিবার বিকেল’ ছবিতে অভিনয় করেছেন তিশা ও জাহিদ হাসান

শুটিংয়ের এক বছর পর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পেয়েছে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ছবি ‘শনিবার বিকেল’ বা ‘স্যাটারডে আফটারনুন’। দর্শকের জন্য সিনেমাটি এখন পুরোপুরি প্রস্তুত। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান মাস দুয়েকের মধ্যে সিনেমাটি মুক্তি দিতে চাচ্ছে। তবে একটি সংলাপের ব্যাপারে নিজেদের পর্যবেক্ষণ দিয়ে ছবিটির ছাড়পত্র দিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা ভাবছেন, ছবিটি ঢাকার হোলি আর্টিজান হামলার ঘটনা অবলম্বনে তৈরি হয়েছে।

২০১৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে সিনেমাটির মহড়ায় অংশ নেন অভিনয়শিল্পীরা। মহড়া শেষে গত বছর ৫ জানুয়ারি ঢাকার কোক স্টুডিওতে ‘শনিবার বিকেল’ ছবির শুটিং শুরু হয়। বাংলাদেশ থেকে এই সিনেমা প্রযোজনা করেছে জাজ মাল্টিমিডিয়া ও ছবিয়াল, আরও আছেন ভারতের শ্যাম সুন্দর দে।

‘শনিবার বিকেল’ ছবির শিল্পী ও কলাকুশলীরা

জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আবদুল আজিজ বলেন, ‘ছবিটি নিয়ে আমাদের অনেক প্রত্যাশা। অবশেষে ছাড়পত্র পেয়েছি। আগামী মার্চ মাসের শেষ দিকে ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করছি। যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে ছবিটি দেখার জন্য এপ্রিল মাস পর্যন্ত দর্শকদের অপেক্ষা করতে হবে।’

‘শনিবার বিকেল’ ২০১৬ সালে গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী আক্রমণ ও জিম্মিদশাকে অবলম্বন করে। বিদেশি সংবাদমাধ্যম ‘ভ্যারাইটি’কে পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী জানান বিষয়টি।

এদিকে ‘শনিবার বিকেল’ ছবিটি নিয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সদস্য ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন, ‘ছবিটি ভালো লেগেছে। আমার মনে হয়েছে, ছবিটির গল্পের সঙ্গে হোলি আর্টিজান হামলার ঘটনার যথেষ্ট মিল রয়েছে। তবে এ বিষয়ে পরিচালক ভালো বলতে পারবেন। কারণ পরিচালক সরাসরি হোলি আর্টিজান বিষয়ে এই সিনেমায় কিছুই বলেনি, একটি আক্রমণ বুঝিয়েছেন। তবে গল্পটা আসলে একই। কারিগরি দিক থেকে ছবিটি খুবই সমৃদ্ধ।’

‘শনিবার বিকেল’ ছবির দৃশ্য

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের আরেক সদস্য ও চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, ‘ভালো চলচ্চিত্রের সব গুণ এই সিনেমায় আছে। মোস্তফা সরয়ার ফারুকী অন্য ধরনের একটি সিনেমা বানাতে চেয়েছেন। আশা করছি, দর্শকদের ছবিটি ভালো লাগবে।’

মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর এই ছবিতে অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান, তিশা, ইরেশ যাকের, মামুনুর রশীদ প্রমুখ। আছেন ফিলিস্তিনের অভিনেতা ইয়াদ হুরানি ও ভারতের কলকাতার পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়।

বরাবরের মতো মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এবারও তাঁর ছবির কাজ গোপনে শেষ করেছেন। ‘শনিবার বিকেল’ ছবির শুটিংয়ের গোপনীয়তার কারণে সবার মনে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়। অনেকেই ধারণা করছেন, ছবিটি হোলি আর্টিজানের হামলার ঘটনা নিয়ে, যেমনটা ভেবেছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড সদস্যরাও। তবে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘এটা ঠিক যে অনেকেই বলছেন ছবিটি হোলি আর্টিজান ঘটনা নিয়ে। আমি বলব, ছবিটি হোলি আর্টিজান ঘটনার অনুপ্রেরণায় নির্মিত।

‘শনিবার বিকেল’ ছবির দৃশ্য

হোলি আর্টিজানে ট্র্যাজেডি যেমন আছে, তেমনি আছে বীরত্বগাথা—এসব আমাদের অনুপ্রেরণা। এটা কোনোভাবেই হোলি আর্টিজান ঘটনা নিয়ে নয়। আমাদের গল্পের চরিত্রগুলোর সঙ্গে হোলি আর্টিজানের ঘটনার কোনো মিল নেই। তবে হোলি আর্টিজানের চরিত্রগুলোর আত্মত্যাগ, কোথাও কোথাও বীরত্বগাথা আছে। এই বীরত্ব এবং আত্মত্যাগ থেকে আমরা উৎসাহিত হয়েছি। আসলে আমি অন্য রকম একটা গল্প বলতে চেয়েছি।’

ছবির নাম ‘শনিবার বিকেল’ বা ‘স্যাটারডে আফটারনুন’ কেন? মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘একটা শনিবার বিকেল, সুন্দর বিকেল, ঝরঝরে বিকেল, চমৎকার বিকেল কী করে দুঃসহ ও বিভীষিকাময় হয়ে উঠল, তা-ই বলতে চেয়েছি। কিন্তু আমাদের গল্পটা শেষ পর্যন্ত বিভীষিকাময় থাকল না, আমাদের গল্পটা শেষ পর্যন্ত আশার। আমাদের গল্পটা বিভীষিকার ব্যাকড্রপে বানানো হলেও শেষ হয় আশা নিয়ে।’