Thank you for trying Sticky AMP!!

করোনায় আক্রান্ত সৌমিত্রকে প্লাজমা দেওয়া হয়েছে

পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়

পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থা এখনো সংকটে।  হাসপাতালের শয্যায় তন্দ্রাচ্ছন্ন রয়েছেন সৌমিত্র। তাঁকে গতকাল শনিবার প্লাজমা (রক্তরস) থেরাপি দেওয়া হয়েছে। সৌমিত্রের একমাত্র মেয়ে পৌলমী চট্টোপাধ্যায় গতকাল সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাঁর বাবার আপাতত অক্সিজেনের প্রয়োজন হচ্ছে না। তবে তাঁর সংকট কাটেনি।

গতকাল কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এক ইউনিট প্লাজমা এনে তা এই বর্ষীয়ান অভিনেতার শরীরে প্রয়োগ করা হয়েছে। ওই প্লাজমা এক করোনাজয়ী রোগীর।

রক্তের জলীয় অংশ হলো প্লাজমা। তিন প্রকারের কণিকা বাদ দিলে রক্তের বাকি অংশ রক্তরস। কোনো মেরুদণ্ডী প্রাণীর শরীরের রক্তের প্রায় ৫৫ শতাংশই হলো রক্তরস। এই চিকিৎসায় কোনো ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে সেরে ওঠা ব্যক্তির রক্তরস সংগ্রহ করে নতুন আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করানো হয়।

সৌমিত্রের চিকিৎসার জন্য গড়া মেডিকেল টিমের চিকিৎসকের সংখ্যা ৪ থেকে বাড়িয়ে ১২ করা হয়েছে। চিকিৎসকেরা বলেছেন, তিনি কোভিড এনসেফেলোপ্যাথির শিকার হয়েছেন। এর অর্থ এখন তাঁর করোনা সংক্রমণ মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলেছে। কিন্তু কতটা প্রভাব ফেলেছে তা জানার জন্য তাঁর মস্তিষ্কের এমআরআই করা হবে। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থা ততটা ভালো না থাকায় গতকাল এমআরআই করা যায়নি। তবে এদিন তাঁর ফুসফুসের সিটি স্ক্যান করা হলেও সেখানে তেমন কোনো জটিলতা ধরা পড়েনি।

গত মঙ্গলবার হাসপাতালে ভর্তির পর বুধ ও বৃহস্পতিবার ভালোই কাটছিল করোনা সংক্রমিত বাংলা চলচ্চিত্রের প্রখ্যাত এই অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের হাসপাতালে। জ্বর ছিল না। কিন্তু শুক্রবার বিকেলে হঠাৎ করে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়। শুরুও হয় মৃদু শ্বাসকষ্ট।

অনিয়মিত হয় রক্তচাপ। চিকিৎসকেরা আর দেরি না করে ওই দিনই তাঁকে স্থানান্তরিত করেন বেলভিউ হাসপাতালের আইটিইউ বা ইনটেনসিভ থেরাপি ইউনিটের কেবিনে। এমনিতেই তাঁর রয়েছে ক্যানসার, সিওপিডি, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস। তার ওপর করোনা পজিটিভ।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি তাঁর একটি বায়োপিকের শুটিংয়ের জন্য গিয়েছিলেন টালিগঞ্জের ভারতলক্ষী স্টুডিওতে। সেখানেই তিনি অসুস্থ বোধ করেন।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের বয়স এখন ৮৫ বছর। ১৯৩৫ সালের ১৯ জানুয়ারি তিনি জন্মগ্রহণ করেন পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে। পড়াশোনা করেন হাওড়া জেলা স্কুল, স্কটিশ চার্চ কলেজ, কলকাতার সিটি কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

বাংলা চলচ্চিত্রের এই দিকপাল ২০১২ সালে পেয়েছেন ভারতের চলচ্চিত্র অঙ্গনের সর্বোচ্চ রাস্ট্রীয় সম্মান দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার। আরও পেয়েছেন দেশ-বিদেশের বহু পুরস্কার। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফ্রান্সের ‘লেজিয়ঁ দ্য নর’ পুরস্কার (২০১৮)।

পেয়েছেন ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মান পদ্মভূষণ (২০০৪) সহ ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, সংগীতনাটক একাডেমি পুরস্কার, ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কারসহ নানা পুরস্কার।