Thank you for trying Sticky AMP!!

কৌতুক অভিনেতার মৃত্যুকেও সবাই ভেবেছে অভিনয়!

মঞ্জুনাথ নাইড়ু

তাঁর নাম মঞ্জুনাথ নাইড়ু। বয়স মাত্র ৩৬। এই বয়সেই তিনি কৌতুক অভিনেতা হিসেবে বেশ নাম করেছেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই পারফরমার জন্মেছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে। গত পাঁচ বছর দুবাইয়ে লাইভ পারফর্ম করে দর্শকদের বিনোদন দিয়েছেন তিনি। সামনে থেকে দর্শকদের চোখে–মুখে দেখেছেন মুগ্ধতা। দুবাইয়ে গত শুক্রবার ছিল তেমনই একটা দিন। কিন্তু সেই দিনটি একেবারেই আলাদা হয়ে গেল। কারণ, সেই দিনটি হয়ে গেল তাঁর জীবনের শেষ দিন।

স্টেজে পারফর্ম করতে করতেই সব শেষ হয়ে গেল। চিরতরে নিভে গেল তাঁর জীবনপ্রদীপ। মৃত্যুর ঠিক আগে যখন অভিনয় করছিলেন, তখন তিনি একটিবারের জন্যও কি বুঝতে পেরেছিলেন এটাই তাঁর জীবনের শেষ মুহূর্ত, শেষ পারফরমেন্স? নিশ্চয়ই জানতেন না। জানতেন না দর্শকও। তাই হলভর্তি দর্শকের সামনে শো করতে করতে স্টেজে যখন হঠাৎ বসে পড়েন, পড়ে গেলেন, সবাই এত নিখুঁত অভিনয় দেখে হাততালি দিয়ে উঠেছেন।

এটুকুই। এটাই ছিল তাঁর শেষ পারফরম্যান্স। তারপর অনেকক্ষণ পর্যন্ত আর উঠলেন না। এক মিনিট পার হয়ে গেল। পার হয়ে গেল আরও কিছু মুহূর্ত। ততক্ষণে গুঞ্জন কোলাহলে রূপ নিয়েছে। কয়েকজন এগিয়ে এসে পরীক্ষা করে দেখেন ততক্ষণে সব শেষ। তিনি মারা গেছেন!

মঞ্জুনাথ নাইড়ু

ডেকান ক্রনিকলে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মঞ্জুনাথ নাইড়ুর কাছের বন্ধু মিকদাদ দোয়ারওয়ালা বলেন, ‘তখন মঞ্জুনাথ নাইড়ুর পারফরম্যান্স প্রায় শেষ ছিল। তাঁর গল্প আর অঙ্গভঙ্গি দেখে মানুষকে হাসছিল। সে বাবা, পরিবারের মানুষজন আর ব্যক্তিগত জীবনের নানা গল্প বলছিল। মঞ্চের সামনে বসে থাকা সবাই হাসছিল। সে নিজের হতাশা নিয়ে কথা বলতে শুরু করে। তাতেও সবাই হাসছিল। আর তারপরই সে পড়ে যায়।’

মিকদাদ দোয়ারওয়ালা জানান, দর্শক নাকি প্রায় এক মিনিট পর্যন্ত তাঁর মৃত্যুকে ভেবেছে পারফরম্যান্সের অংশ। কিন্তু উঠে দাঁড়িয়ে আর শেষ করা হয়নি। বলা হয়নি বিদায়। মাথা নিচু করে অভিবাদনও গ্রহণ করা হয়নি। তাঁর আগেই তিনি চলে গেলেন ওপারে। সবকিছু ছাড়িয়ে মৃত্যুই হয়ে যায় তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় অনিবার্য সত্য। তাঁকে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত চিকিৎসক নিশ্চিত করেন, মঞ্জুনাথ নাইড়ু আর নেই।

মঞ্জুনাথ নাইড়ু

মঞ্জুনাথ নাইড়ুর বাবা–মা আগেই মারা গেছেন। একমাত্র ভাইকে রেখে তিনিও চলে গেলেন।

দুবাইয়ে এক ভাই ছাড়া মঞ্জুনাথ নাইড়ুর তেমন আপনজন কেউ নেই। কৌতুক দলের সবাইকে নিয়ে ছিল তাঁর পরিবার। সালমান কোরেশি নামের আরেক কৌতুক অভিনেতা ওই রাতে সেখানে পারফর্ম করেছিলেন। তিনি টুইট করেছেন, ‘ভাই আমার, পৃথিবীর সবচেয়ে মজার মানুষ। বিশ্বাস করতে পারছি না, তুমি আর নেই।’ আরেক কৌতুক অভিনেতা ফিলিপিনা ইমাহ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমরা তোমাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি। তুমিই আমার জীবনের সেই মানুষ, যে প্রতিবার দেখা হওয়ার পর কেবল “হাই” বলে চলে যাওনি। বলেছ, “আমি তোমাকে নিয়ে গর্বিত।” তুমি বেঁচে ছিলে। আর আমাদের মধ্যে বেঁচে থাকবে।’