Thank you for trying Sticky AMP!!

নয়নীকে হোটেলকক্ষে ডেকেছিলেন বিকাশ

নয়নী দীক্ষিত ও বিকাশ বহেল

ভাঁজ খুলতে শুরু করেছে বলিউডের। প্রকাশিত হতে শুরু করেছে চিহ্নিত সব দুষ্কৃতকারীর নাম। তবে নির্যাতক বাছতে বলিউড উজাড় হবে, তা নয়। যৌন নিপীড়কের সংখ্যা হাতে গোনা যাবে। ঘুরেফিরে এরাই এতকাল ঘটিয়ে এসেছে অস্বস্তিকর ঘটনাগুলো। সম্প্রতি ‘কুইন’ ছবিতে কঙ্গনা রনৌতের সহশিল্পী নয়নী দীক্ষিত জানিয়েছেন, তাঁর দিকেও হাত বাড়িয়েছিলেন পরিচালক বিকাশ বহেল। শুটিংয়ের সময় হোটেলকক্ষে যেতে বলেন তাঁকে।

দুর্ভাগ্যবশত কঙ্গনা রনৌতের ‘কুইন’ ছবিটিও পরিচালনা করেছিলেন বিকাশ বহেল। সেই ছবির সেটে নায়িকা কঙ্গনার সঙ্গে নোংরা আচরণ করেন তিনি। এখন জানা গেল, কেবল নায়িকাই নন, ছবির সহশিল্পী নয়নী দীক্ষিতের সঙ্গেও অস্বস্তিকর ব্যবহার করেছিলেন অভিযুক্ত বিকাশ। নয়নী বলেছেন, ‘কুইন’ ছবিতে কাজ করা ছিল তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় ভুলগুলোর একটি।

তখনকার ঘটনা স্মরণ করে নয়নী বলেছেন, ‘বিকাশের বিরুদ্ধে যে মেয়েরা অভিযোগ করছে, সেগুলোর একটিও মিথ্যা নয়। কেননা, সে আমার দিকেও হাত বাড়িয়েছিল। আমি তাঁকে বলেই বসেছিলাম, আমার সঙ্গে আবারও এমন করলে ধোলাই দেব।’

‘কুইন’ ছবির দৃশ্যে কঙ্গনা রনৌত ও নয়নী দীক্ষিত

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নয়নী দীক্ষিত বলেন, ‘ওই কথা বলার পরদিন যখন সেটে গেলাম, চুলে কী যেন একটা সমস্যা হয়েছিল আমার। আমি জিনিসটা নিয়ে মাথা ঘামাইনি, কেননা চুলের দিকে নজর রাখা আমার কাজ না। বিকাশ আমার ওপর খেপে গেল, ভীষণ বাজে ব্যবহার করল। খারাপ ব্যবহারের কারণ তো এখন বুঝতে পারছি। “চান্স” নিতে না পেরে খারাপ ব্যবহার করে প্রতিশোধ নিয়েছিল।’

ঘটেছিল কী? নয়নী বলেন, ‘সে আমাদের নিয়ে রেখেছিল একটা দুই তারকা হোটেলে। যখন বললাম, হোটেলটা ভালো লাগছে না। সে বলল, “আমার রুমে চলে আসো।” কত্ত বড় সাহস!’

‘আমরা যখন “লন্ডন থামাকদা” গানটার শুটিং করছিলাম, আমাদের পোশাকের দায়িত্বে ছিল ২১ বছর বয়সী দিল্লির স্থানীয় এক মেয়ে। দেখতাম বিকাশ তাঁকেও ফোলাচ্ছে। মেয়েটা অস্বস্তি বোধ করছিল। পরে সে-ই আমাকে জানাল, বিকাশ কেন আমার পেছনে লেগেছিল। এমনকি কঙ্গনাও এসব দেখে খেপে গিয়েছিল। আমি তখন কিচ্ছু বলিনি। কারণ, আমি ছিলাম একা। ফ্যান্টম বা অভিনয়শিল্পীদের কাউকে চিনতাম না। সব সময় মায়ের সঙ্গে থেকেছি এবং অপেক্ষা করেছি, সময়মতো সব ফাঁস করব। এখন মনে হচ্ছে, সময় হয়েছে।’

নয়নী দীক্ষিত

সেই সময় নিয়ে নয়নী আরও বলেন, ‘ফ্যান্টম ফিল্মস আমাকে কচু দিয়েছে। এমনভাবে দর-কষাকষি করত যেন, সবজি কিনছে। কিন্তু কেউ এদের ব্যাপারে বাইরে কিছু বলত না। তাঁদের আচরণ এমন, যেন আমাকে কাজ দিয়ে উদ্ধার করছে। ছোট্ট একটা গাড়ির ভেতরে রেখেছিল আমাদের। মেকআপ, কস্টিউম, শিল্পী সব এক জায়গায়, গাদাগাদি করে থাকতে হতো। কেউ আমাকে সম্মান করত না। একদিন চুল ঠিক করার সময় চুল শুকানোর যন্ত্রে আমার চুল গেল আটকে। সে চুলটুকু তারা কেটে ফেলল। জায়গাটা এত ছোট যে, নড়লেই এখানে-ওখানে ধাক্কা লাগে। একবার একটা বাল্বে আমার হাত লেগে পুড়ে গেল। চিৎকার করে বললাম ওষুধ দিতে। কেউ পাত্তাই দিল না। কেবল একটা ছেলে একটা কোলগেট টুথপেস্ট এনে বলল, “পোড়া জায়গায় লাগাও।” ব্যস শেষ। সেদিন বিকাশ এত খারাপ ব্যবহার করেছিল যে দিল্লিতে হোটেলে ফিরে কেঁদেছি আর ভেবেছি কবে শুটিং শেষ হবে।’

খাবার নিয়ে বললেন, ‘হোটেলের রুমে খারাপ লাগলে আমি বন্ধুর কাছে চলে যেতাম। তাতেও তাদের আপত্তি। তারা আমার জন্য হোটেল বুক করেছিল। মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে বন্ধুর বাড়ি থেকে আমাকে নিয়ে আসতে পারবে না। অথচ টাকা সব ব্যয় করত পাঁচ তারকা হোটেলে পার্টি করার পেছনে, যেখানে তারা থাকত। আমাদের খাওয়াত মসলায় ভরা খাবার। কিছু বললেই নালিশ করে দিত। প্রডাকশনের লোকেদের কাছে রাতে চা চাইলে বলত, “পকেটের টাকা দিয়ে খেতে হবে!”’

নয়নী দীক্ষিত

নিজের পাওনা নিয়ে বললেন, ‘আমার পাওনা টাকাগুলো দিতেই চাইছিল না। “কুইন” ছবির মুক্তির আট মাস পর বাকি টাকাগুলো দিয়েছে। মাত্র আট হাজার রুপির জন্য আমাকে রীতিমতো ঝগড়া করতে হয়েছে তাদের সঙ্গে। প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, বিকাশ বহেল বা ফ্যান্টমের সঙ্গে আর কাজই করব না।’

নয়নী ক্ষোভ চেপে বলেন, ‘বিকাশের ছবি বানানোর কোনো জ্ঞান নেই। তার কপাল ভালো যে ভালো একটা টিম ছিল তার। প্রধান সহকারী পরিচালক মেয়েটাই ছিল সব। সে-ই সব করেছে আর ক্রেডিট, জাতীয় পুরস্কার নিয়েছে বিকাশ।’

ফ্যান্টম ফিল্মস বন্ধ হয়েছে। অনুরাগ কাশ্যপ, বিক্রমাদিত্য মাতওয়ানি, বিকাশ বহেল ও মধু মান্তেনারা যে যার পথে পা বাড়িয়েছেন। সেখানেও নাকি রয়েছে এক ষড়যন্ত্র। ডেকান ক্রনিকল