Thank you for trying Sticky AMP!!

বিয়ে জানিয়েই করব: প্রভাস

প্রভাস

মা চেয়েছিলেন ছেলের একটা সাধারণ, স্বাভাবিক আর সুরক্ষিত জীবন হবে। কিন্তু ছেলের ইচ্ছা অন্য কিছু। ২০০২ সালে তিনি সেই সহজ জীবনকে বিদায় বলে যাত্রা শুরু করেন চলচ্চিত্রে। বড় পর্দার দর্শকদের কাছে তিনি প্রভাস। তাঁর আসল নাম ভেঙ্কট সত্যনারায়ণ প্রভাস রাজু উপ্পালাপতি। চলচ্চিত্রে তাঁর শুরুটা হয় ‘ঈশ্বর’ ছবি দিয়ে, ‘বাহুবলি: দ্য বিগিনিং’ আর ‘বাহুবলি টু: দ্য কনক্লুশন’ ছবি দুটি দিয়ে তিনি আকাশ ছুঁয়েছেন। মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে ‘সাহো’। অনেকেই বলেছেন, ভারতের চলচ্চিত্র ইতিহাসের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় অ্যাকশন-রোমান্টিক ধাঁচের ছবি হতে যাচ্ছে এই ‘সাহো’। ৩৫০ কোটি রুপি বাজেটের ছবিটি তামিল, তেলেগু আর হিন্দি ভাষায় মুক্তি পাবে ৩০ আগস্ট। এর আগে নিজের জীবন, দর্শন, প্রেম আর ‘সাহো’ ছবি নিয়ে প্রভাস কথা বললেন চলচ্চিত্র সমালোচক রাজীব মাসান্দের সঙ্গে। গতকাল শুক্রবার ইউটিউবে আসা এই সাক্ষাৎকারের উল্লেখযোগ্য অংশ তুলে ধরা হলো এখানে।

আপনি দীর্ঘ পাঁচ বছর ‘বাহুবলী’ সিরিজের সেটে ছিলেন। চুক্তি শেষ হওয়ার পর বলেছেন, যেখানে কঠোর শারীরিক কসরতের দরকার, এমন চরিত্র আর করবেন না। কিন্তু তারপর ‘সাহো’ ছবিতে আপনাকে দেখা যাচ্ছে।
টানা পাঁচ বছর প্রায় প্রতিদিন ১৭ থেকে ১৮ ঘণ্টা করে সেটে কাজ করেছি। ২২ কেজি ওজন ঝরিয়েছি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা জিমে কাটিয়েছি। মাসে কেবল এক দিন আমি ইচ্ছামতো খাবার খেতে পারতাম। কঠোর পরিশ্রম করেছি ‘বাহুবলী’র জন্য। সেই হাড়ভাঙা খাটুনি নিশ্চয়ই ছবিতে চোখে পড়ে। শুটিং শেষ করেও প্রতিদিন প্রায় ২০টি করে সাক্ষাৎকার দিতে হয়েছে। তাই বলেছিলাম, আর না। ‘সাহো’র পরিচালক সুজিত আমার বন্ধু। ও আমাকে রাজি করানোর জন্য বলল, ছবিটি প্রেমের গল্প নিয়ে। আমিও রাজি হয়ে গেলাম। তারপর দেখা গেল, এটাও বিশাল আকারের অ্যাকশন ছবি।

প্রভাস

৫ বছর ধরে ‘বাহুবলী’ করলেন, দুই বছর ধরে ‘সাহো’ করলেন। একটা ছবির জন্য এত দীর্ঘ সময় আগ্রহ আর উদ্দীপনা ধরে রাখেন কীভাবে? 

বড় আকারের ছবির জন্য এই সময়টুকু দিতেই হবে। তাড়াহুড়ো করে বড় হওয়া যায় না। যত সময় নিয়ে ছবি বানানো হচ্ছে, দর্শক তো সেই পরিশ্রম অনুপাতে বিনোদন পাচ্ছেন। বড় কিছুর জন্য দীর্ঘদিন মন দিয়ে কাজ করা যায়। কিন্তু আপাতত আমি এত বড় প্রজেক্টে যুক্ত হচ্ছি না। দুই-তিন মাসে যেসব শুটিং শেষ হয়ে যাবে, সে রকম কাজ করব। আবার এ রকম বড় আয়োজনের কাজ করার আগে আমার একটু বিরতি দরকার।

প্রভাস

‘সাহো’ হিন্দি, তামিল আর তেলেগু ভাষায় মুক্তি পাচ্ছে। হিন্দি বলতে অসুবিধা হয়েছে? 

আমি হিন্দি পড়তে পারি, লিখতেও পারি। কিন্তু বাসায় এই ভাষায় কথা বলি না। তাই একটু অসুবিধা হয়েছে। কারণ, হিন্দি ভাষায় প্রতিটি বাক্যের, প্রায় প্রতিটি শব্দের স্ত্রীলিঙ্গ ও পুংলিঙ্গ আছে। থা, থি ঠিক করতে একটু ঝামেলা হয়েছে।

বিজয়ের (তামিল অভিনেতা) সঙ্গে কথা হচ্ছিল। বললেন, তিনি জীবনে যত চরিত্র করেছেন, সব কটি চরিত্র ব্যক্তি হিসেবে তাঁকে প্রভাবিত করেছে। ‘বাহুবলী’র কোনো কিছু কি আপনার মধ্যে আছে?
আমার সে রকম মনে হয় না। চরিত্র শেষ করে আমি আমার আমিতে ফিরে আসি। (একটু থেমে) অবচেতনভাবে হয় হয়তো। আমি সচেতনভাবে কখনো গ্রহণ করিনি। আমি আসলে খুব অন্তর্মুখী, ঘরকুনো। ১৮ ঘণ্টা, ২০ ঘণ্টা যা-ই হোক না কেন, কাজ শেষ করে ঘরে যেতে চাই। কাট বলার পর ওই চরিত্র আর বয়ে নিয়ে বেড়াই না। কিন্তু অ্যাকশন আর কাটের মধ্যে আমি পুরোপুরি ওখানেই থাকি।

‘সাহো’ ছবির দৃশ্যে প্রভাস

আপনার পরিবার নাকি ‘বাহুবলী’র সাফল্যে হতবাক হয়ে গিয়েছিল। আপনার মা নাকি বলেছিলেন, ‘এসব যেন তোমাকে বদলে না দেয়।’ সত্যি? 

হ্যাঁ। আসলে মা কখনো চাননি আমি সিনেমায় নামি। তিনি সাধারণ গৃহিণী। তিনি চেয়েছিলেন, আমার যথেষ্ট সচ্ছলতা থাকবে। তা দিয়ে স্বাভাবিকভাবে ‘নিরামিষ জীবন’ কেটে যাবে। কিন্তু আমি সে রকম জীবন যাপন করার জন্য জন্মাইনি। আমার খালাতো ভাই সেদিন বলেছে, ‘এই তুই রেস্টুরেন্ট দিতে চেয়েছিলি। পেট্রল পাম্পের দোকান দিতে চেয়েছিলি। কথা ছিল, ব্যবসা ব্যবসার গতিতে চলবে। আমরা ওই রেস্টুরেন্টে খাব আর দোকান থেকে গাড়িতে তেল ভরে ঘুরব। সেই তুই কোথায় চলে গেলি।’ শুনে একটু অন্য রকম লাগল। তখন আমার জীবন কেমন হতো কে জানে।

‘সাহো’ ছবিতে অভিনয় করেছেন শ্রদ্ধা কাপুর ও প্রভাস

শাহরুখ খান একবার বলেছেন, তাঁকে যদি সেক্সি বলা হয়, তিনি নাকি খুব লজ্জা পান। আপনার এয়ারপোর্টের ভিডিও দেখছিলাম। মেয়েরা সমুদ্রের মতো চারপাশ ঘিরে চিৎকার করছিলেন। আপনাকে একবার স্পর্শ করার জন্য তাঁদের কত ব্যাকুলতা! আপনি অস্বস্তি বোধ করছিলেন? 

আমি আসলে অ্যাকশন আর কাটের মধ্যেই অভিনেতা। এর বাইরে আমি এত মানুষ, জনসমাগম, চিৎকার—এগুলোতে এখনো ঠিক অভ্যস্ত হতে পারিনি। এটা আমার দুর্বলতা। আমি শুধু সেটে অভিনয় করে সোজা ঘরে যেতে চাই।

প্রভাস আর আনুশকা শেঠির সম্পর্ক নিয়ে এখন বেশি আলোচনা হচ্ছে

এখন তো একটাই প্রশ্ন, প্রভাস বিয়ে করবে কবে? প্রতিদিন আপনার বিয়ে নিয়ে হাজার হাজার শব্দ লেখা হচ্ছে। আপনি নাকি বলেছেন, আপনি প্রেমের বিয়েতে বিশ্বাসী আর শিগগিরই বিয়ে করছেন? 

তারা আমাকে জিজ্ঞেস করেছে, অ্যারেঞ্জ নাকি লাভ ম্যারেজ। আমি বলেছি, হয়তো প্রেম করেই বিয়ে করব। তারা তাই লিখেছে, আমি নাকি আনুশকার সঙ্গে প্রেম করছি। আর খুব দ্রুতই বিয়ে করব। আমি যদি ওর সঙ্গে প্রেমই করতাম, তাহলে তা দুই বছর লুকিয়ে রাখা সম্ভব হতো? ২৪ ঘণ্টা আমার ওপর পাপারাজ্জিরা চোখ রাখে। আমার প্রতি মিনিটের হিসাব তারা দিতে পারে। লুকানোর কিছু নেই। বিয়ে করলে জানিয়েই করব।