Thank you for trying Sticky AMP!!

‘আমরা ছুটেছি পয়সার পেছনে’, অকপট স্বীকারোক্তি আলমগীরের

বাবা ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম সবাক চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’–এর অন্যতম প্রযোজক। মা পুরোদস্তুর গৃহিণী। মা–বাবা কেউ চাননি অভিনয়ে আসুক তাঁদের সন্তান। কিন্তু ১৯৭২ সালের ২৪ জুন ‘আমার জন্মভূমি’ চলচ্চিত্রে শুটিংয়ের মধ্য দিয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান আলমগীর। এরপর কীভাবে যে অভিনয়ের ৫০ বছর পার করে দিয়েছেন, টেরই পাননি। গতকাল বৃহস্পতিবার তাঁর ব্যবসায়িক কার্যালয়ে বসে আলমগীর শোনালেন পাঁচ দশকের অভিনয়জীবনের গল্প।
আলমগীর

আলমগীর ছোটবেলা থেকেই ছিলেন সিনেমার পোকা। উত্তমকুমার, দিলীপ কুমার, রাজ্জাক—তাঁদের দেখে দেখে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবতেন, ‘আমি যদি ওদের মতো হতে পারতাম।’ নিজে অভিনয়ে পাঁচ দশক পূর্ণ করেছেন। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে কাজ করেছেন অনেকের সঙ্গে। পেছন ফিরে দেখতে গিয়ে বারবার আক্ষেপ করেছেন ‘শিল্পী’ হতে না পারার। কিন্তু আলমগীরের কাছে প্রিয় শিল্পী কারা? এই প্রশ্নের উত্তরে অভিনেতা বললেন, ‘শিল্পী হিসেবে যদি বলি রাজ্জাক ভাই, গোলাম মোস্তফা সাহেব, খলিলুল্লাহ খান, আনোয়ার হোসেন, রোজী ভাবী, শাবানা, ববিতা, কবরী। এর আগের দিকে যদি দেখি, সুমিতা দেবী, কাজী খালেক সাহেব, রহমান ভাই—তাঁরা শিল্পী ছিলেন। আমরা তো এসেছি, পয়সা কামাইয়ে গেছি। কাজ করেছি, দ্যাটস অল। আমি মনে করি, একজন শিল্পীকে সবকিছু মিলিয়ে থাকতে হয়। একজন শিল্পীর ডেডিকেশন দেওয়া দরকার, সেটা কি আমরা দিয়েছি? আমরা ছুটেছি পয়সার পেছনে। উই আর নট দ্যাট মাচ ডেডিকেটেড। অভিনয়ের বাইরে প্রযোজনা ও পরিচালনা করেছি, সেখানেও টাকার বিষয়টা মুখ্য ছিল। পরিচালনায় চেষ্টা যে করেছি, সেখানে তো ফেল করেছি (হাসি)।’

আলমগীর

গত ৫০ বছরে আলমগীর বিভিন্ন সময়ের অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করেছেন, তাঁদের কাছ থেকে দেখেছেন। এই সময়ের অভিনয়শিল্পীদের সম্পর্কে তাঁর মূল্যায়ন কী? উত্তর দিতে গিয়ে তাঁদের সময়ের সঙ্গে এখনকার অভিনেতা-অভিনেত্রীদের একটা জায়গায় মিল খুঁজে পেলেন আলমগীর, ‘আমরা কিছুই জানতাম না। আমাদের ট্রেনিং দিয়েছে পরিচালকেরা। এখন যারা আছে, তারাও কিন্তু কিছুই জানে না। তাদের ট্রেনিং দেবে কে? সেই মেধাসম্পন্ন পরিচালক কয়জন আছে এখন? হাতে গোনা কয়েকজন। কিন্তু তারা তো ছবি বানাচ্ছে না। তারা নিজেদের বিকিয়ে দিয়ে প্রযোজকের কাছে যাবে না। আর যারা প্রযোজকের দ্বারে ঘুরে ঘুরে ছবি আনছে, তাদের মেধাসম্পন্ন ডিরেক্টর আমার মনে হয় না।’

আলমগীর

পরিচালককে সিনেমার মূল কান্ডারি উল্লেখ করে আলমগীর আরও বলেন, ‘পরিচালকের আলাদা পারসোনালিটি ও গাটস থাকতে হয়। পরিচালক হলো জাহাজের ক্যাপ্টেন, যে জাহাজের মালিক প্রযোজক। কিন্তু প্রযোজক ডাঙায় থাকে, জাহাজটা কিন্তু পরিচালকের হাতে দিয়ে দেয় সাগরে চালানোর জন্য। গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য। সেখানে প্রযোজকের কোনো কথা চলবে না। পরিচালকই হচ্ছে অল ইন অল। দু-চারজন এমন পরিচালক আছে, যারা ছবি বানালে আরও ভালো ভালো অভিনয়শিল্পী পাওয়া যেত।’