Thank you for trying Sticky AMP!!

আমেরিকায় শাবানার মন খারাপ করা ঈদ

সেকালের শাবানা ও একালের শাবানা

ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার একটি ঈদ অন্তত ঢাকায় উদ্‌যাপন করবেন—এমনটাই ভেবেছিলেন শাবানা। করোনার দুই ডোজ টিকাও নিয়ে রেখেছিলেন। প্রযোজক স্বামী ওয়াহিদ সাদিকও বারবার চাইছিলেন, ঢাকায় আসবেন। যশোরে গিয়ে এলাকার মানুষের সঙ্গে সময় কাটাবেন। কিন্তু কিছুই হলো না। যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সিতে ঈদ উদ্‌যাপন করতে হয়েছে। গেল বছরের মতো এবারও ছিল নিরানন্দের ঈদ।

ঢাকার বারিধারা ডিওএইচএর এর বাসায় শাবানা

বছরে একবার সম্ভব না হলেও দুই বছর পর একবার ঢাকায় আসেন শাবানা ও ওয়াহিদ সাদিক। নীরবে এসে নিজের মতো করে কাজকর্ম সেরে চলে যান। শাবানার ভাষায়, ‘সন্তানদের ব্যস্ততা কমলেই আসি। করোনার আগেও একটা ঈদে ঢাকায় ছিলাম। নিজের মতো করে আসি, কাজ সেরে আবার চলে যাই।’

যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনায় শাবানার মা থাকেন। তাঁর ভাইবোন, সন্তান ও আত্মীয়স্বজনের অনেকেই সেখানে থাকেন। শাবানা বললেন, ‘সবাই একসঙ্গে থাকতে পারার আনন্দটাই অন্য রকম। তবে আমেরিকায় ঈদের আনন্দ টের পাই না। নামাজ শেষে কোরবানি দিয়ে যার যার বাড়িতে ব্যস্ত সবাই। এখন তো করোনার সময়, তাই যাওয়া–আসাটাও কম। তাই এবার ঈদে মনটা খুব খারাপ ছিল।’

ঢাকার ডিওএইচএস এর বাসায় শাবানা ও ওয়াহিদ সাদিক

শাবানা এ–ও বলেন, ‘ঢাকায় ঈদ নিয়ে যেমন সবার মধ্যে হইচই একটা ব্যাপার, উচ্ছ্বাস—সেটা এখানে একেবারে পাই না। আমার জন্ম, বেড়ে ওঠা, অভিনয়জীবন, মানুষের ভালোবাসায় শাবানা হয়ে ওঠা—সবই তো বাংলাদেশে। তাই যতই আমি দেশের বাইরে থাকি না কেন, আমার কাছে ঈদের আনন্দ দেশেই সবচেয়ে বেশি। কিন্তু ঈদে যখন ঢাকায় থাকি, তখন আবার ছেলে–মেয়ে নাতি–নাতনিদের খুব মিস করি। তবে এটাও ঠিক, জীবনে এমন ঈদ আসবে, কখনো ভাবিনি। করোনা কমলেও কেমন যেন চারপাশ। কারও মধ্যে আগের মতো সেই উচ্ছ্বাস নেই, উল্লাস নেই। ঈদের জৌলুশ হারিয়ে গেছে।’

রাজ্জাক–শাবানা

শাবানার দুই মেয়ে, এক ছেলে। মেয়েরা বিয়ে করে সংসারী। ঈদের সময়টায় তাঁদের সন্তান নিয়ে মা শাবানার সঙ্গে দেখা করেন। কখনো আবার একসঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপনও করেন। কিন্তু করোনায় পরিস্থিতি সবকিছু পাল্টে যাওয়ায় তা এবারও তা সম্ভব হয়নি। শাবানা বলেন, ‘ঈদ তো আমাদের ধর্মের সবচেয়ে বড় উৎসব। কত আনন্দ ও উৎসবে মেতে থাকি সবাই। এবার সবকিছুই কেমন যেন, আনন্দ নেই। তাই ঘরে থেকেই সবাই ঈদটাকে উদ্‌যাপন করছে। অবশ্য আমাদের সবার সুস্থ থাকার জন্য, যা খুবই জরুরি।’

শাবানা

যুক্তরাষ্ট্রে থাকা শাবানা দেশের মানুষদের নিয়ে ভীষণ চিন্তিত। সবাইকে সাবধান ও সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। পরিবেশ ও পরিস্থিতি যেহেতু অনুকূলে নয়, দেশের মানুষকে ঈদ উদ্‌যাপনে সরকারের বেঁধে দেওয়া নিয়ম অনুসরণ করার অনুরোধ করেছেন। শাবানা বলেন, ‘একদিন এই মেঘ কেটে যাবে। আমরা নিশ্চয় আবার স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাব। প্রার্থনা করি, সৃষ্টিকর্তা যেন সবাইকে এই কঠিন রোগ থেকে মুক্ত করে দেন।’