Thank you for trying Sticky AMP!!

ঈদের দিন জমজমাট এফডিসি প্রাঙ্গণ

অলিগলি বাদ দিলে ঢাকা এখন ফাঁকা। নগরের বড় সড়কে নেই কোনো যানজট। সুপার মার্কেট, বিপণিবিতান, ফুটপাত—কোথাও নেই মানুষের ভিড় বা জটলা। ঠিক বিপরীত চিত্র দেখা গেল ঢাকাই চলচ্চিত্র শিল্পের প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন বা এফডিসি প্রাঙ্গণে। ঈদের দিন দুপুরে এখানে দেখা গেল শিল্পী, কলাকুশলীদের দারুণ ভিড়।

আজ সোমবার দুপুরে এফডিসির মূল প্রবেশপথ ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। শিল্পী বা চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্ট ছাড়া বাইরের কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। উদ্দেশ্য জানিয়ে অনুমতি নিয়ে পরিচয় দিয়ে প্রবেশ করে দেখা গেল, ভেতরটা জমজমাট। সবচেয়ে বেশি ভিড় ছিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সমিতির কার্যালয়ের ভেতর এবং বাইরের অংশটিতে। গতবারের মতো এবারও অসচ্ছল শিল্পীদের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি।

কার্যালয়ের সামনে চলছিল মাংসের কাটাকুটি। শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান তদারকি করছিলেন। তিনি জানালেন, আগেরবার চারটি গরু কোরবানি দেওয়া হলেও এবার এফডিসিতে পাঁচটি গরু কোরবানি দিয়েছে সংগঠনটি। এ ছাড়া ব্যক্তিগত উদ্যোগে চিত্রনায়িকা পরীমনি চারটি গরু কোরবানি দিয়েছেন। তাঁর আয়োজনটি ছিল এফডিসির ২ নম্বর ফ্লোরের সামনে।

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির উদ্যোগে শিল্পীদের মাঝে মাংস বিতরণ করা হয়

শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান ঈদের নামাজ পড়েই চলে এসেছেন এফডিসিতে। সকাল থেকে তিনি সেখানেই আছেন। কৌতুক অভিনেতা শাহিনকেও দেখা গেল ব্যস্ত। জায়েদ খান বলেন, ‘একবার ঈদে একজন জুনিয়র শিল্পী এসে কান্নাজড়ানো কণ্ঠে বলেছিল, “ভাই এক কেজি মাংস কিনে খাব, সেই টাকাও জোগাড় করতে পারি না...।” সেই দিন মনটা খারাপ হয়েছিল। আমাদের জনপ্রিয় শিল্পীরা, প্রতিষ্ঠিতরা কেউ কেউ কোরবানি দেয় আর আমাদেরই সহশিল্পীদের এমন অবস্থা! সেদিন আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরাই উদ্যোগ নেব। গত বছর থেকে চালু করেছি।’

জায়েদ খান বলেন, ‘এবার শুধু আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিল্পী পরিবারের কাছেই নয়, যাঁরা শিল্পী সমিতির সদস্য, তাঁদের সবার ঘরেই সামর্থ্যমতো সেমাই-চিনি-চালসহ গরুর মাংস পাঠাচ্ছি। এটি শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে এক টুকরো ভালোবাসা।’ তিনি আরও বলেন, ‘যেসব শিল্পী আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন, তাঁদের নামে এবার কোরবানি দেওয়া হচ্ছে। তাঁরা হলেন নায়করাজ রাজ্জাক, জসিম, সালমান শাহ, মান্না, জাফর ইকবাল, খলিলউল্লাহ খান, আমির হোসেন বাবু প্রমুখ।’

মূল গেটের একটু সামনে হাস্যোজ্জ্বল পরীমনি মাংস বিতরণ করেন

সমিতির অফিসের সামনে দেখা গেল তিনটি ফ্রিজবাহী বিশেষ গাড়ি। এগুলোর মাধ্যমে মাংস প্যাকেট করে রাজধানী বিভিন্ন অঞ্চলে শিল্পীদের বাসায় পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর যেসব শিল্পী পারছেন, সশরীরে এসে নিয়ে যাচ্ছেন সমিতির বিশেষ উপহার।

জানা গেছে শিল্পী সমিতির আয়োজনটিতে সহযোগিতা করেছেন চ্যানেল আই ও ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, চলচ্চিত্র অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল, চিত্রনায়িকা শিল্পী, অভিনেত্রী আঞ্জুমান, প্রযোজক সেলিম খান প্রমুখ।

পরীমনিকে পাশে পেয়ে খুশি প্রবীণ শিল্পীরাও।

বিগত তিন বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও এফডিসিতে কোরবানি দিয়েছেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। তিনি জানালেন, এ বছর সহশিল্পীদের জন্য চারটি গরু কোরবানি দিচ্ছেন। আগের দিন রোববার রাতে ফেসবুকে কয়েকটি ছবি পোস্ট করেন তিনি। আজ দুপুরের পর এফডিসিতে আসেন তিনি। বেশ কিছুটা সময় ছিলেন। এ সময় এফডিসির মূল প্রবেশপথের ভেতরে বেশ ভিড় হয়েছিল। মূল গেটের একটু সামনে হাস্যোজ্জ্বল পরিমনি মাংস বিতরণ করেন। এ সময় চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজারসহ চলচ্চিত্র অঙ্গনের অনেকে উপস্থিত ছিলেন। সাংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে পরীমনি বলেন, ‘আগেও বলেছি, এবারও বলছি এফডিসি হচ্ছে আমার দ্বিতীয় পরিবার। তাই পরিবারের জন্যই কোরবানি দিই। যত দিন বাঁচব, তত দিন এফডিসিতে কোরবানি দিয়ে যাব।’

দুপুরে এফডিসিতে আসেন পরীমনি

ঈদের আগের রাতে নানাকে নিয়ে রাজধানীর কমলাপুর গরুর হাটে যান পরী। হাটে গিয়ে নিজেই দেখেশুনে কেনেন চারটি গরু।