Thank you for trying Sticky AMP!!

এ আর রাহমানের কথাই ভাবছি

গিয়াসউদ্দিন সেলিম

আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, ১৬ সেপ্টেম্বর শুরু হবে বাংলাদেশ নৌ-কমান্ডোর অভিযান ‘অপারেশন জ্যাকপট’ অবলম্বনে প্রস্তাবিত চলচ্চিত্রের কাজ। আপাতত তা হচ্ছে না। ছবির প্রযোজক ও নির্বাহী প্রযোজকের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই বোঝা গেল।

ইতিহাসনির্ভর ছবিটির পরিচালক গিয়াসউদ্দিন সেলিম প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, এখনো ছবির বাজেট চূড়ান্ত হয়নি। এ কারণে শিল্পী নির্বাচনও হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে খুব শিগগির ছবির কাজ শুরু হচ্ছে না। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ছবির বাজেটের যে নির্দিষ্ট সংখ্যাটি দেওয়া হয়েছে, তা ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। তবে পরিচালক ইঙ্গিত দিলেন, এটিই হবে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বাজেটের চলচ্চিত্র। পরিচালকের ইচ্ছা, সম্পূর্ণ আন্তর্জাতিক মানের একটি ‘ওয়ার ফিল্ম’ বানাবেন। তিনি জানালেন, গল্পের প্রয়োজনে ইউরোপে শুটিং করা হবে। বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের পরিবেশ তৈরি করতে হবে; করতে হবে ইউরোপেও। চলচ্চিত্রের সঙ্গে ছয় হাজারের মতো মানুষ যুক্ত থাকবেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় হাজার হাজার মানুষের সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার দৃশ্য উঠে আসবে চলচ্চিত্রে। পলাশীর প্রান্তরের ভাগীরথী নদীর তীরে নৌ-কমান্ডোদের ট্রেনিং ক্যাম্পও তুলে আনা হবে ছবিতে।

প্রসঙ্গক্রমে পরিচালক গিয়াসউদ্দিন সেলিম বলেন, ‘আমরা সংগীত পরিচালনার জন্য এ আর রাহমান বা অস্কারজয়ী কোনো সংগীত পরিচালককে ভাবছি। ইচ্ছা আছে সবকিছু ঠিকঠাক হলে এ আর রাহমানের কাছেই যাব, প্রস্তাব দেব। বাইরের চলচ্চিত্রে কাজের অভিজ্ঞতা আছে—এ রকম প্রোডাকশন ডিজাইনারও খুঁজছি। মোটকথা, অনেক বড় ক্যানভাসে হবে অপারেশন জ্যাকপট।’

চলচ্চিত্রটির নির্বাহী প্রযোজক ইকবাল কবির বলেন, পরিচালক গিয়াসউদ্দিন সেলিম ও তাঁর দুই সহকারী চিত্রনাট্যকার ১৮ মাস ধরে অসংখ্য নৌ-কমান্ডোর সাক্ষাৎকার, একাধিক ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন ও শত শত নথি-পুস্তক থেকে তথ্য সংগ্রহ করে চিত্রনাট্যটি রচনা করেছেন। ধারণকৃত ভিডিও সাক্ষাৎকারগুলো দিন-তারিখসহ চট্টগ্রাম বন্দরের ‘অপারেশন জ্যাকপট’ প্রকল্প অফিসে সংরক্ষিত আছে। প্রযোজক আরও জানান, চলচ্চিত্রটির উদ্যোগ নিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। অর্থায়ন করবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। ১৯৭১ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে ১০১ জন শ্রমিক-কর্মচারী শহীদ হন। তাঁদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন, মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রাম বন্দরের ঐতিহাসিক ভূমিকা এবং অপারেশন জ্যাকপটের প্রকৃত ইতিহাস সংরক্ষণের জন্যই চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এই প্রকল্পে এগিয়ে এসেছে।

১৯৭১ সালের ১৫ আগস্ট চট্টগ্রাম, মোংলা, চাঁদপুর ও নারায়ণগঞ্জ বন্দরে একযোগে বাংলাদেশের নৌ-কমান্ডোদের প্রথম অপারেশন ছিল অপারেশন জ্যাকপট। মুক্তিযোদ্ধারা জানতেন, তাঁদের এই অভিযান সফল হলে বাঙালি জাতিকে তা এগিয়ে নেবে বিজয়ের বন্দরের পথে। আর ব্যর্থতার ফল হবে মৃত্যু। এ কারণে লিম্পেট মাইন নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া মরণপণ সেই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছিল অপারেশন জ্যাকপট।