Thank you for trying Sticky AMP!!

২০১৯ সালের জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির নির্বাচন

কথা রাখেননি প্রযোজক সমিতির নেতারা

কথা ছিল তাঁরা ২১ জন নির্বাচিত হলে ২১টি নতুন সিনেমা হবে। সিনেমার সুদিন ফিরবে, প্রযোজনায় আসবেন আরও অনেকে। এফডিসিতে সেদিন প্রযোজকদের ভিড় ঠেলে সরানো যাবে না। তাঁরা নির্বাচিত হয়েছিলেন ঠিকই। মেয়াদও প্রায় শেষের পথে। তবু কথা রাখেননি এই প্রযোজকেরা। তাঁদের কেউই এখন পর্যন্ত নতুন সিনেমা করেননি। কেউ কেউ ছবি বানানোর প্রস্তুতির কথা বলেও কাজ শুরু করতে না পারার দায় চাপাচ্ছেন করোনার ঘাড়ে। এখন তাঁরা সবচেয়ে বেশি তৎপর সিনেমা হল নির্মাণে সরকারের কাছ থেকে তহবিল আদায়ের ব্যাপারে।
দীর্ঘ সাত বছর পর ২০১৯ সালের জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির নির্বাচন। সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচনী ইশতেহারে মাথাপিছু একটি করে সিনেমা বানানোর অঙ্গীকার করলেও গত দেড় বছরে প্রস্তুতিই শেষ হয়নি তাঁদের। নির্বাচনের পর থেকে সাংগঠনিক কাজে জোর দিয়েছেন তাঁরা। দীর্ঘদিন পর নির্বাচন হওয়ায় জমে থাকা কাজ করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। এরই মধ্যে কোনো কোনো প্রযোজক সিনেমা শুরু করার কথা ভাবছেন।

সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, ‘আমরা কথা দিয়েছিলাম ২১টি ছবি বানাব। কিন্তু ছবি বানিয়েই তো ইন্ডাস্ট্রি বদলে দেওয়া সম্ভব নয়। সিনেমা চলার জন্য যা যা করা দরকার, এখন সেগুলোর দিকে আগে মনোযোগ দিচ্ছি।’

সেসব কী? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সংগঠনের পক্ষ থেকে সিনেমা হলের জন্য সরকারের কাছে তিনটি আবেদন করেছি। আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই চলচ্চিত্রের জন্য এক হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এটা আমাদের আন্দোলনের ফসল। হল বাঁচলেই সিনেমা বাঁচবে, প্রোডিউসার বাঁচবে, নির্মাতা ও শিল্পীরা বাঁচবে। সে জন্য আমাদের আগে হল নির্মাণ করতে হবে। সিনেমা বানানো বড় কথা নয়।’

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম ও সাধারন সম্পাদক শামসুল আলম

করোনার কারণে সংগঠনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ পিছিয়ে গেছে বলে মনে করেন প্রযোজকদের অনেকে। প্রযোজকেরা যেন তাঁদের ন্যায্য রয়্যালটি পান, সে জন্য ইতিমধ্যে সংগঠনটি কপিরাইট নিয়ে কাজ শুরু করেছে। প্রেক্ষাগৃহে যেন প্রজেক্টরের ভাড়া দিতে না হয়, সেই ব্যবস্থাপনা নিয়েও কাজ করছেন তাঁরা। এ ছাড়া শিল্প ঘোষিত হলেও শিল্পের কোনো সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। সেই সুবিধা আদায়ের জন্যও কাজ করে যাচ্ছেন তাঁরা।
দেশে চলচ্চিত্র প্রযোজকের সংখ্যা কমছে। বর্তমানে হাতে গোনা কয়েকজন প্রযোজক নিয়মিত ছবি বানাচ্ছেন। সম্প্রতি সেই সংখ্যা আরও কমেছে।

সমিতির সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলম বলেন, ‘আমাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা অনেকেই ছবি প্রস্তুত করছেন। আমি নিজেও একটি স্ক্রিপ্ট রেডি করেছি। করোনার কারণে কিছু অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে বলে শুটিংয়ে যেতে পারছি না। এ অবস্থা আরও অনেকের।’ সমিতির নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কেউ কি এখন পর্যন্ত একটি সিনেমার কাজও শেষ করতে পেরেছেন? এমন প্রশ্নে গত ডিসেম্বরে তিনি বলেছিলেন, ‘অনেকে বানাচ্ছেন, কেউ প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে কেউ শেষ করেননি।’

প্রযোজক পরিবেশক সমিতির গ্রহণ অনুষ্ঠান

প্রযোজক সমিতির নেতাদের অনেকেরই সামর্থ্য আছে, তবু দীর্ঘদিন প্রযোজনা থেকে তাঁরা দূরে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পরিচালক জানান, ৪০ থেকে ৫০ জন প্রযোজক যদি নিয়মিত ২টি করে ছবি বানান, তাহলে ঢালিউড চাঙা হয়ে যেত। নিয়মিত ছবি প্রযোজনা প্রসঙ্গে খোরশেদ আলম বলেন, ‘এখন সিনেমা হল করাই জরুরি। হল হলে প্রযোজকের অভাব হবে না। আমাদের দেশে অনেক টাকাওয়ালা মানুষ আছেন। তাঁরা যখন দেখবেন ভালো সিনেমা হচ্ছে, ছবি হলে ব্যবসা করছে, তখন অনেকেই প্রযোজনায় আসবেন, প্রযোজকদের এফডিসি থেকে ঠেলেও সরানো যাবে না।’