Thank you for trying Sticky AMP!!

কাটপিসের জন্মদাতারাই আমাকে নিষিদ্ধ করেছেন: অনন্য মামুন

চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতিতে আজীবন নিষিদ্ধ হয়েছেন পরিচালক অনন্য মামুন

চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি থেকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন পরিচালক অনন্য মামুন। তিনি বলেন, একসময় কিছু পরিচালক বাংলা চলচ্চিত্রে কাটপিসের জন্ম দিয়েছিলেন, তাঁরাই তাঁকে নিষিদ্ধ করেছেন। তিনি বাক্‌রুদ্ধ। এমন পরিস্থিতিতে ৫টি ছবির ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

গত ২৮ ডিসেম্বর থেকে পরিচালক সমিতি সূত্রে শোনা যাচ্ছিল ‘অশ্লীল’ ও ‘কুরুচিপূর্ণ’ শব্দ ব্যবহারের দায়ে নির্মাতা অনন্য মামুনের সদস্যপদ আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হবে। চলচ্চিত্র পরিচালকের প্রাথমিক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তখন তাঁর সদস্যপদ সাময়িকভাবে বাতিল করা হয়। সম্প্রতি তিনি জেল থেকে জামিনে বের হয়েছেন। তাঁর মামলাটি চলমান। তিনি বলেন, ‘এই মামলায় পুলিশই এখনো আমাকে শাস্তি দেয় নাই। জামিনে বাইরে আছি। সেখানে পরিচালক সমিতি থেকে আমাকে কীভাবে শাস্তি দেয়? তারা মামলা শেষ হলে আমাকে ডেকে অন্যায় যদি করে থাকি তার একটা শাস্তি তখন দিতে পারত। সমিতির সভায় একজন নির্মাতা দাঁড়িয়ে বললেন, অনন্য মামুনের মতো নির্মাতা যদি সংগঠনে থাকে তাহলে তিনি পদত্যাগ করবেন। সবাই ইয়েস ইয়েস বলে আমাকে ব্যান করে দিলেন। এটা একটি সংগঠনের নীতি হতে পারে না।’  

পরিচালক অনন্য মামুন

করোনাকালে দীর্ঘদিন ছবি নির্মাণ বন্ধ ছিল। সংগঠন থেকে ছবি নির্মাণের অনুমতি এলে তিনিই প্রথম শাকিব খান, মাহিয়া মাহি ও স্পর্শিয়াকে নিয়ে ‘নবাব এলএলবি’ ছবির শুটিং শুরু করেন। এই ছবিতেই একটি দৃশ্যে পুলিশকে হেয় করার অভিযোগে পর্নোগ্রাফি আইনে নির্মাতা অনন্য মামুন এবং ছবিটির পুলিশ চরিত্রের অভিনেতা শাহীন মৃধাকে মহানগর দায়রা জজ আদালতে উপস্থাপন করা হয়। বিচারকের নির্দেশে তাঁরা কারাগারে ছিলেন।

তিনি জানান, ‘অস্তিত্ব’, ‘আবার বসন্ত’সহ বেশ কিছু ভালো ছবি বানিয়েছেন। ছবির জন্য তাঁকে অনেকেই প্রশংসা করেছেন। তাঁর ছবির কলাকুশলীরা পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। তিনি জানান, পরিচালক সংগঠনের ৩৩৩ জন সদস্য। এর বেশির ভাগ সদস্য ছবি নির্মাণ করেন না। সেখানে তাঁর হাতে কাজ রয়েছে। চেয়েছিলেন নিয়মিত ছবি বানাতে। তিনি বলেন, ‘কাটপিসের জন্মদাতারাই আমাকে নিষিদ্ধ করেছেন। তাঁরা এই ইন্ডাস্ট্রির ভালো চান না। আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনার মধ্যে ছবি বানাচ্ছি। নতুন ছবির পরিকল্পনা করছি। সেখানে আমার মামলা এখনো চলমান। যেখানে নির্মাতা হয়ে একজন নির্মাতার পাশে দাঁড়াবে, সেটা না করে তাঁরা আমার পিছে লাগছেন।’

পরিচালক অনন্য মামুন

সেন্সর বোর্ডের নীতিমালা অনুযায়ীই তিনি চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির জন্য ছবি বানাবেন। তিনি মনে করেন, এ মুহূর্তে চলচ্চিত্রকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে ছবি দরকার। তাঁকে সংগঠন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এতে কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই তাঁর। তিনি জানান, চলচ্চিত্রের জন্য সব সময়ই তিনি মানসিকভাবে শক্ত ছিলেন। এখনো আছেন। অভিমান করে বললেন, ‘সমিতির এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। আমি কদিন হলো চলচ্চিত্রে এসেছি, একটি নিজস্ব অ্যাপস খুলেছি, বাইরের দেশের আর্টিস্ট নিয়ে কাজ করছি, কোনো দিন এফডিসিতে গিয়ে চা খাই না, এ জন্য তাঁরা আমাকে সহ্য করতে পারছেন না। যদি তাঁদের মতো এফডিসিকেন্দ্রিক বস্তাপচা ছবি বানাতাম, তাহলে আমাকে সহ্য করতেন।’

‘নবান এলএলবি’ ছবির পোস্টার

মামলার সঙ্গে সমিতি থেকে নিষিদ্ধের কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানান পরিচালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম। নির্মাতাদের মানসম্মানকে ছোট করার জন্য আগেও অনন্য মামুনকে দুবার তাঁরা সংগঠন থেকে সাবধান করেছেন। তিনি জানান, আগেও পরিচালকদের হেয় করেছেন তিনি। মামুন স্ট্যাম্পে সেই করেছিলেন, এ ঘটনা আবার করলে তাঁকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হবে। বদিউল আলম বলেন, ‘নবাব এলএলবি’ ছবির যে অংশ ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে, সেটা নির্মাতা অনন্য মামুনের সৃষ্টি। ছবিতে অশ্লীল ও ‘কুরুচিপূর্ণ’ যে সংলাপ ব্যবহার করা হয়েছে, সেটা আমাদের গঠনতন্ত্রবিরোধী। এটা দিয়ে পরিচালকদের সম্মানহানি করেছেন। যে কারণে সংগঠন থেকে তাঁকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।’ অনন্য মামুনের নামে প্রথম অভিযোগ ছিল, সমিতির সদস্য হওয়ার জন্য তিনি সার্টিফিকেট জালিয়াতি করে পরিচালক হওয়ার জন্য জমা দেন। পরে তিনি মানব পাচারে সঙ্গে জড়িয়ে যান। পরিচালক সমিতির মতে, তৃতীয়বারের মতো তিনি এবার ‘অশ্লীল’ ও ‘কুরুচিপূর্ণ’ সংলাপ ব্যবহারের কারণে পরিচালক সমিতি থেকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ হলেন।

গত ২৪ ডিসেম্বর রাত আড়াইটার দিকে আটক হন অনন্য মামুন