Thank you for trying Sticky AMP!!

সোনাই মাধবের প্রেম-বিচ্ছেদ

‘সোনাই মাধব’ নাটকের একটি দৃশ্য। ছবি: প্রথম আলো

বাবা নাই, ভাই নাই, মায়ের একমাত্র সন্তান সোনাই। রূপে-গুণে অতুলনীয়। মা তাকে মামার কাছে রেখে আসে ভালো পাত্রের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু ঘটকের আনা কোনো পাত্রই মামা-মামির পছন্দ হয় না। এরই মধ্যে সোনাইয়ের সঙ্গে মাধবের দেখা হয়। হয় পরিচয় এবং প্রেম। চলে দেখাশোনা, চিঠি দেওয়া–নেওয়া।

সোনাই ও মাধবের প্রেম ও বিচ্ছেদের কাহিনি, আর এর মধ্য দিয়ে ফুটে ওঠা মানবসমাজের বিভিন্ন দিক নিয়ে নাটক ‘সোনাই মাধব’। ‘মৈমনসিংহ গীতিকা’ অবলম্বনে পদাবলি যাত্রা ‘সোনাই মাধব’। লোকনাট্য দলের (সিদ্ধেশ্বরী) আয়োজনে আজ সন্ধ্যায় নাটকটির প্রদর্শনী হলো শিল্পকলা একাডেমির পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে। নাটকে ব্যবহৃত গানে সুরারোপ করেছেন দীনেন্দ্র চৌধুরী ও লিয়াকত আলী। নতুন আঙ্গিকে করা নাটকটির পরিকল্পনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী। নাটকে তিনি অভিনয়ও করেছেন।

‘মৈমনসিংহ গীতিকা’ অবলম্বনে পদাবলি যাত্রা ‘সোনাই মাধব’। ছবি: প্রথম আলো

পদাবলি কীর্তন ও যাত্রাপালার সমন্বয়ে উপস্থাপিত লোকনাট্য দলের ‘সোনাই মাধব’ ট্র্যাজিকমেডির সমন্বিত মঞ্চ-উপস্থাপনা আজ সন্ধ্যায় মিলনায়তনভর্তি দর্শককে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে। প্রায় দেড় ঘণ্টার এই নাট্য প্রযোজনার কোনো মুহূর্তই ফাঁকা মনে হয়নি।

‘সোনাই মাধব’ নাটকে দেখা যায়, গ্রামের দেওয়ান ‘ভাবনা’র অত্যাচারে সুন্দরী মেয়েরা ঘরের বাইরে যেতে পারছে না। সে সোনাইয়ের কথা জেনে তার মামার কাছে যায়। মামা প্রথমে সোনাইকে ভাবনার সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি হয় না, পরে মৃত্যুর ভয় দেখালে সে বলে দেয়, নদীতে জল আনতে গেলে যেন সোনাইকে সে বজরায় তুলে নেয়। ভাবনা তা–ই করে। বজরা থেকে কান্নার শব্দ শুনে মাধব গিয়ে তাকে উদ্ধার করে এবং দেখে, সেই মেয়ে তারই সোনাই। ঘরে নিয়ে আসে, বিয়ের আয়োজন করে। কিন্তু দেওয়ান মাধবের বাবাকে ধরে নিয়ে যায়, তাই বাবাকে উদ্ধার করার জন্য মাধব যায় দেওয়ানের কাছে। সোনাই এক বছর একা থাকে ঘরে। তারপর ফিরে আসে তার শ্বশুর, বলে সোনাই না গেলে মাধবকে ছেড়ে দেবে না। বাধ্য হয়ে সোনাই যায় মাধবকে ছাড়াতে। দেওয়ান মাধবকে ছেড়ে দিয়ে ঘরে এসে দেখে, সোনাই বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। কাহিনি শেষ হয় মাধবের হাহাকারে, সে নদীর ঘাটে বসে সোনাইকে ডেকে চলে।

সোনাই ও মাধবের প্রেম ও বিচ্ছেদের কাহিনি নিয়ে নাটক ‘সোনাই মাধব’। ছবি: প্রথম আলো

লোকনাট্য দলের জ্যেষ্ঠ সদস্য মাসুদ সুমন প্রথম আলোকে জানান, ১৯৯০ সালে নাটকটি ঢাকার মঞ্চে আসে। এরপর ৭৭টি প্রদর্শনী হয়। এরপর লোকনাট্য দলের একটি অংশ আলাদা হয়ে গেলে তাদের অংশটি (সিদ্ধেশ্বরী) আর এই নাটকের প্রদর্শনী করেনি। নাটকটি নতুন করে প্রযোজনা করা হয়েছে। যেখানে ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও অভিনয় করছেন। আগের প্রদর্শনীর হিসাব করলে আজ নাটকটির ১২৪তম প্রদর্শনী। এবার তিন মাসের বিরতির পর নাটকটি হয়েছে। এখন থেকে নিয়মিত নাটকটির প্রদর্শনী হবে।