Thank you for trying Sticky AMP!!

'শ্রেষ্ঠ শিশুসাহিত্য লেখা হয় বাংলায়'

ফরিদুর রেজা সাগরকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন পশ্চিমবঙ্গের সাহিত্যিক পবিত্র সরকার। ছবি: প্রথম আলো

‘এই বাংলায় ছোট-বড় সব ধরনের সাহিত্যিকেরাই শিশুদের জন্য কলম ধরেছেন। অন্য দেশে এমনটি দেখা যায় না। সে কারণেই হয়তো এই উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ শিশুসাহিত্য লেখা হয় বাংলায়। বাংলা ভাষাকে ভুবনবিস্তৃত সম্মান দিয়েছে বাংলাদেশ। এতে পশ্চিমবঙ্গের কোনো অবদান না থাকলেও আমরা পশ্চিমবঙ্গবাসী এ নিয়ে গর্ব করি। বাংলা ভাষার জন্য এই বাংলার মানুষ ও সাহিত্যিকেরা অনেক অবদান রেখেছেন।’ চন্দ্রাবতী আন্তর্জাতিক বাংলা শিশুসাহিত্য উৎসবের উদ্বোধনে বললেন পশ্চিমবঙ্গের সাহিত্যিক পবিত্র সরকার।

গতকাল শুক্রবার ঢাকায় শুরু হয়েছে চন্দ্রাবতী আন্তর্জাতিক বাংলা শিশুসাহিত্য উৎসব। জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে উৎসবের উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের শিশুসাহিত্যের একটি গৌরবময় ইতিহাস আছে। সেই ইতিহাস থেকে প্রেরণা নিয়ে বর্তমানে আমরা যা করছি, আমি মনে করি, সেটি আশাপ্রদ। বস্তুত, এর মান উৎকৃষ্ট। বিশ্বের দরবারে একে হাজির করতে আমরা দ্বিধাবোধ করি না।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘অর্থনৈতিক মুক্তির পাশাপাশি মননশীলতার মুক্তি ও উন্নয়নের প্রয়োজন। এ জন্য শিশুসাহিত্যের উৎকর্ষ সাধনে কাজ করে যেতে হবে। কেননা, শিশুচিত্তের উৎকর্ষ সাধিত হলে তারা জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’

কাইজার চৌধুরীর হাতে ‘চন্দ্রাবতী একাডেমি শিশুসাহিত্য পুরস্কার ২০১৯’-এর স্মারক তুলে দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। ছবি: প্রথম আলো

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু হেনা মোস্তফা কামাল ও শিশুসাহিত্যিক ফারুক হোসেন। বাংলা ভাষার সেরা শিশুসাহিত্যিকদের লেখা নিয়ে প্রকাশিত সংকলন ‘সেরাদের সেরা লেখা’ বইয়ের মোড়ক খোলা হয় দুই দিনের এই উৎসবে। বইটি সম্পাদনা করেছেন ফারুক হোসেন। বইটিতে রয়েছে ৩০০ লেখকের শিশুদের উপযোগী প্রবন্ধ-নিবন্ধ, গল্প, উপন্যাস, কবিতা, রূপকথা ও বিজ্ঞান কল্পকাহিনি। গত ২০০ বছরে লেখা শিশুসাহিত্যের সেরা লেখাগুলো এই বইয়ে সংকলিত হয়েছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতেই এ বছরের ‘চন্দ্রাবতী একাডেমি শিশুসাহিত্য পুরস্কার ২০১৯’ তুলে দেওয়া হয় দুই শিশুসাহিত্যিক কাইজার চৌধুরী ও ফরিদুর রেজা সাগরের হাতে। তাঁদের উত্তরীয় পরিয়ে দেন পবিত্র সরকার। তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয় স্মারক ও পুরস্কারের অর্থমূল্যের চেক।

আজ শনিবার সকাল থেকে দিনব্যাপী বাংলা একাডেমির দুটি মিলনায়তনে ছিল শিশুসাহিত্যের নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা ও লেখকদের আত্মকথন। সুজন বড়ুয়ার সভাপতিত্বে ‘শিশুসাহিত্য প্রকাশনা’ বিষয়ে কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে আলোচনায় অংশ নেওয়ার কথা সুনির্মল চক্রবর্তী, জাকির তালুকদার, রূপা মজুমদার, রফিকুর রশীদ ও সৈয়দ হিলাল সাইফের। কবি মারুফুল ইসলামের সভাপতিত্বে আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ‘আমাদের বঙ্গবন্ধু’ অধিবেশনে আলোচক ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, শামসুজ্জামান খান, হাশেম খান, কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, আমীরুল ইসলাম প্রমুখ। আলম তালুকদারের সভাপতিত্বে কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে ‘স্বাধীনতাসংগ্রামে আমাদের শিশুসাহিত্য’ অধিবেশনে আলোচক ছিলেন শাহজাহান কিবরিয়া, নলিনী বেরা, রাশেদ রউফ ও অরুণ কুমার বিশ্বাস। আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ‘লেখক হওয়ার গল্প’ অধিবেশনে সুব্রত বড়ুয়ার সভাপতিত্বে আলোচক তালিকায় ছিলেন বিপ্রদাশ বড়ুয়া, শ্যামলকান্তি দাস ও ইমদাদুল হক মিলন। কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে আনজীর লিটনের সভাপতিত্বে ‘আমাদের সম্পদ বাংলার লোককাহিনি’ বিষয়ের ওপর ছিল রতনতনু ঘাটী, দীপ মুখোপাধ্যায়, রোকেয়া খাতুন রুবী, মিহির মুসাকী ও মোসাদ্দেক আহমেদের আলোচনা। একই জায়গায় রোমেন রায়হানের সভাপতিত্বে ‘বাংলা ছড়াসাহিত্যের অগ্রগতি’ নিয়ে আলোচনায় অংশ নেওয়ার কথা অচিন্ত্য সুরাল, আবদুল হামিদ মাহবুব, আশিসকুমার মুখোপাধ্যায়, জাহাঙ্গীর আলম জাহান ও অরুণ শীলের।

চন্দ্রাবতী আন্তর্জাতিক বাংলা শিশুসাহিত্য উৎসবের উদ্বোধনী দিনে ‘সেরাদের সেরা লেখা’ বইয়ের মোড়ক খোলা হয়। ছবি: প্রথম আলো

সন্ধ্যায় সমাপনী অনুষ্ঠানে মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচক ও অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত থাকার কথা অমরেন্দ্র চক্রবর্তী, রফিকুন নবী, আলী ইমাম, বীথি চট্টোপাধ্যায় ও আসলাম সানীর।