Thank you for trying Sticky AMP!!

ইউটিউবে আলোচিত ঈদের ১০ নাটক

টেলিভিশনের চেয়ে এখন অনলাইনভিত্তিক বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে খণ্ড বা ধারাবাহিক নাটক দেখার প্রবণতা বেশি। আরও বেশি দর্শকের কাছে নাটক পৌঁছে দেওয়া ও ব্যবসায়িক দিক চিন্তা করে টেলিভিশন কর্তৃপক্ষও টিভিতে প্রচারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নাটকগুলো ইউটিউবে প্রকাশ করছে। এবারের ঈদেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদে টিভি ও ইউটিউব মিলিয়ে পাঁচ শতাধিক নাটক প্রচার হয়েছে। ইউটিউবে কোনো নাটক ছাড়িয়েছে কোটি ভিউ। ইউটিউব দর্শকেরা চাহিদার বিষয়টি দেখে স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটা তালিকা তৈরি করে। সে তালিকা ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে ঈদের দিন থেকেই ১ নম্বরে আছে কাজল আরেফিন পরিচালিত ‘গুড বাজ’। একই পরিচালকের ‘ব্যাচেলরস কুরবানি’ ছিল তালিকায় দুইয়ে, যা এখন নেমে গেছে তিনে। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে  দুইয়ে জায়গা করে নিয়েছে মহিদুল মহিমের ‘দরদ’।

কক্সবাজারে ‘গুড বাজ’ নাটকের শুটিংয়ের সময় তোলা ছবিতে পারসা ইভানা, পাভেল, জিয়াউল হক পলাশ ও মিশু সাব্বির

ইউটিউব ট্রেন্ডিং নাটকের মান নির্ণায়ক—এটা মানতে নারাজ ট্রেন্ডিংয়ে থাকা নাটকের বেশির ভাগ পরিচালক ও অভিনয়শিল্পী। তবে তাঁরা বলছেন এটা দেখে বোঝা যায়, কোন ধরনের নাটকে দর্শকের আগ্রহ। ট্রেন্ডিং মূলত নির্দিষ্ট সময়ে, নির্দিষ্ট অঞ্চলে প্রচারিত কনটেন্ট দেখা ও খোঁজার হারের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করে ইউটিউব। প্রযোজকরাও নাটকে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ট্রেন্ডিং ও ভিউ গুরুত্ব দেন বলে জানান ট্রেন্ডিংয়ে এগিয়ে থাকা নাটকের পরিচালকরা।

‘দরদ’ নাটকের একটি দৃশ্যে তানজিন তিশা ও মুশফিক ফারহান

ডিজিটাল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা জানান, ট্রেন্ডিং কখনো কয়েক ঘণ্টায় বদলে যায়, আবার কখনো এক, দুই কিংবা তিন, এমনকি এক সপ্তাহ বা ১০ দিনের বেশি পর্যন্তও থাকে। আজ শনিবার দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত বাংলাদেশের ইউটিউব ট্রেন্ডিং তালিকায় থাকা ৩০ কনটেন্টের ১০ টিই এবারের ঈদের নাটক। তার মধ্যে ১ নম্বরে আছে গুড বাজ। আজ শনিবার দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ১ কোটি ২১ লাখ ৭৬ হাজারের বেশি ভিউ হয়েছে নাটকটির। ৩৪ হাজারের বেশি মন্তব্য এসেছে। মন্তব্যের ঘরে সাকিব নামে একজন লিখেছেন, ‘নাটকের মধ্যে শিক্ষণীয় কিছু থাকুক বা না থাকুক, ফ্রেন্ডদের ভালোবাসাটা প্রকাশ হইছে।’ নাটকটি নিয়ে কথা হয় নাটকের পরিচালকের সঙ্গে।

‘ব্যাচেলরস কুরবানি’ নাটকের একটি দৃশ্য

কাজল আরেফিন বললেন, ‘চেষ্টা করেছি কাজের মধ্যে সরলতা রাখতে। দর্শক যেন খুব সহজে নিজেদের কানেক্ট করতে পারেন, যেন বলতে পারেন, ইটস আওয়ার স্টোরি। দেশের পরিচিত বিষয়বস্তুই হয়তো দেখাতে পেরেছি, যে কারণে দর্শকেরা দেখেছেন। না হলে ঈদের ১২ দিন পর্যন্ত আমার দুটি কাজ ১ ও ২ নম্বরে থাকত না। অনেক বেশি দর্শক নাটক দুটি দেখছেন। আমি দাবি করছি না, এই দুই নাটক ঈদের বেস্ট। দর্শক আমার কাজটা বেশি দেখছেন মানে, সামহাউ কানেক্ট করতে পারছেন। তবে একটা নাটক যখন অনেক দর্শক দেখছেন, সেটাকে খারাপ বলার সুযোগ থাকে না। ব্যবসায়িকভাবে ইতিবাচক।’

‘ডিয়ার লাভ’ নাটকের দৃশ্যে তানজিন তিশা, জয়নাল জ্যাক (মাঝে) ও মুশফিক ফারহান

ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে থাকা শীর্ষ ১০ নাটকের মধ্যে দুইয়ে থাকা ‘দরদ’–এর পরিচালক মহিদুল মহিম বললেন, ‘সমাজের এমন সব চরিত্র নিয়ে কাজ করি, যা আমাদের আশপাশেই থাকে। হাসি–আনন্দের মধ্য দিয়ে এই চরিত্রগুলো নাটকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করি। শেষের দিকে এসে সিরিয়াস বিষয়টা তুলে ধরি, যা দর্শকেরা ভাবতেও পারেন না।’ আজ দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ৫৪ লাখের বেশি ভিউ হয়েছে দরদ নাটকের। মন্তব্য এসেছে ১০ হাজারের বেশি। জামিলা ইসলাম নামের একজন লিখেছেন, ‘প্রথমে ভালোবাসা ও খুনসুটিগুলো বেশ মজার ছিল। কিন্তু শেষের কাহিনি দেখে চোখে পানি চলে এল। বাস্তবে তো কত মানুষ তার আপনজন হারিয়ে নিরাশ হয়ে পড়ে, সেটাই সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে।’

‘জমজ ১৫’ নাটকে অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম ও ফারিয়া শাহরিন

ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে যথাক্রমে ৪ ও ৫ নম্বরে আছে মাহমুদ মাহিনের দুই নাটক—‘ডিয়ার লাভ’ ও ‘শাদী মোবারক’। দুটি নাটকই ৫৪ লাখের বেশি ভিউ অতিক্রম করেছে। প্রথমটিতে সাড়ে চার হাজার ও দ্বিতীয়টিতে সাড়ে আট হাজারের বেশি মন্তব্য এসেছে। বিয়ের পর মধ্যবিত্ত পরিবারের একটি ছেলে কী পরিস্থিতির মুখোমুখি হয় মাবরুর বান্নাহ সেটিই তুলে ধরেছেন তাঁর ‘একজন মধ্যবিত্ত বলছি’ নাটকে। ইউটিউবে দেওয়ার পর ৩৩ লাখের বেশি ভিউ অতিক্রম করেছে নাটকটি।

আজ শনিবার দুপুর পর্যন্ত ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে এগিয়ে থাকা ঈদের ১০ নাটক ও ভিউ

১. ‘গুড বাজ’ ১ কোটি ২১ লাখ ৭৬ হাজার ৪৭৭

২. ‘দরদ’ ৫৪ লাখ ৯৫ হাজার

৩. ‘ব্যাচেলরস কুরবানি’ ১ কোটি ৪৪ লাখ ৯৯ হাজার ৭৪১

৪. ‘ডিয়ার লাভ’ ৫৪ লাখ ৭ হাজার ৩৭৯

৫. ‘শাদী মোবারক’ ৫৪ লাখ ৭৩ হাজার ৪৬১

৬. ‘জমজ ১৫’ ৫৭ লাখ ৭৩ হাজার ৬৫২

৭. ‘বর কনে’ ১২ লাখ ৮১ হাজার ৩৩৫

৮. ‘একজন মধ্যবিত্ত বলছি’ ৩৩ লাখ ৮৪ হাজার ৯০৮

৯. ‘মিস্টার কিপটা’ ২১ লাখ ৮৩ হাজার ২৩৫

১০. ‘কিচির মিচির’ ২৩ লাখ ৮৯ হাজার ৫৭৬