Thank you for trying Sticky AMP!!

নতুন নাটক, ৯ দিনে ১২ প্রদর্শনী

নাজুক মানুষের সংলাপ নাটকের মহড়ায় রুদ্র সাঁওজাল ও ইউসুফ হাসান

শাহাদুজ্জামানের ‘নাজুক মানুষের সংলাপ’ মঞ্চে আনছে থিয়েটারওয়ালা রেপাটরি। নাটকটির উদ্বোধন হবে আজ। মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে ২৭ মে পর্যন্ত টানা ৯ দিনে নাটকটির ১২টি প্রদর্শনী হবে।

প্রশ্ন ও চিন্তা বিনিময়ের নাটক ‘নাজুক মানুষের সংলাপ’, জানালেন নির্দেশক। এখানে এক প্রাজ্ঞ প্রবীণের মুখোমুখি হয় এক জিজ্ঞাসু, পথভ্রান্ত তরুণ। গল্প আর কথোপকথনের ভেতর দিয়ে জীবনের নানা দার্শনিক প্রশ্নের উত্তর খোঁজে প্রবীণের কাছে। সরাসরি উত্তর দেওয়ার বদলে প্রবীণ প্রশ্নগুলো উল্টেপাল্টে দেখতে উদ্বুদ্ধ করে তাকে। চলে তাদের কথোপকথন। আর এর ভেতর দিয়েই কিছু সত্য আর কিছু আপাত সত্যের মুখোমুখি হয় তরুণ।

‘নাজুক মানুষের সংলাপ’ সম্পর্কে জানতে চাইলে অনুস্বর নাট্যদলের নিয়মিত সদস্য সাইফ সুমন বলেন, ‘প্রশ্নের উত্তর খোঁজা মানুষের সহজাত ও জ্ঞানতাত্ত্বিক স্বভাব। আবহমানকাল থেকেই প্রশ্ন মানুষকে তাড়িত করেছে বলেই সে এগিয়ে গেছে।

নাজুক মানুষের সংলাপ নাটকের মহড়ায় ইউসুফ হাসান ও রুদ্র সাঁওজাল

মানুষ জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। জীবনের সামগ্রিক সত্যকে উপলব্ধি করে, জীবনকে দেখার অভিজ্ঞতা থেকে প্রাজ্ঞজনেরা দিয়ে গেছেন নানা প্রশ্নের উত্তর। চারদিকে সবার চোখে এখন কী এক আতঙ্ক! বেঁচে থাকার লড়াই করতে করতে সবাই যেন ক্লান্তিতে গুটিয়ে যাচ্ছে। আমরা যারা সতেজ থাকার ভান করছি, তারাও জানি, এটা ভান। নাটকে এমনটাই বলা হয়েছে।’ এর আগে ‘রাত ভ’রে বৃষ্টি’, ‘স্বপ্নভুক’, ‘না মানুষি জমিন’, ‘যাদুকর’, ‘রায়মঙ্গল’ প্রভৃতি নাটকের নির্দেশনা দিয়েছেন সাইফ সুমন।

কেন এতগুলো প্রদর্শনী? জানতে চাইলে নির্দেশক সাইফ সুমন বলেন, প্রচলিত ধারার গ্রুপ থিয়েটার চর্চা থেকে অনেকেই এখন বেরিয়ে আসতে চাইছেন। উপায়ও খুঁজছেন। থিয়েটারওয়ালা রেপাটরি সে তাগিদ থেকেই কাজ করছে, চাচ্ছে নাট্যচর্চায় শৌখিন মনোবৃত্তির অবসান। সেই ধারাবাহিকতায় এই টানা প্রদর্শনীর পরিকল্পনা।

Also Read: ঢাকার মঞ্চে নতুন নাটক

শাহাদুজ্জামান তাঁর সর্বশেষ গল্পগ্রন্থ ‘মামলার সাক্ষী ময়না পাখি’তে কথোপকথনের আঙ্গিকে লিখেছেন ‘নাজুক মানুষের সংলাপ’।

শাহাদুজ্জামান বলেন, ‘কথোপকথনের ভেতর দিয়ে জীবনের নানা দার্শনিক প্রশ্নের উত্তর খোঁজার উদাহরণ বিশ্বসাহিত্যে রয়েছে। আমি যখন গল্প লিখতে শুরু করি, তখন বিষয়ের পাশাপাশি গল্পের আঙ্গিক নিয়ে নানা নিরীক্ষাতেও আগ্রহী হই। গল্প, প্রবন্ধ, নাটক, কবিতার দেয়ালগুলো ভেঙে দিতে ইচ্ছা হয়। গল্পে একটি কাহিনি-আখ্যান বলবার চেয়ে কিছু ভাবনাকে উপস্থিত করাতেই আমার আগ্রহ। জীবনের নানা পর্বে বিবিধ প্রশ্ন দিয়ে যখন তাড়িত হয়েছি, তখন মনে হয়েছে, প্রশ্নগুলো নিয়ে কারও সঙ্গে নিবিড় আলাপে মগ্ন হতে পারলে বেশ হতো। কিন্তু যখন আশপাশে তেমন আলাপে যুক্ত হবার মতো মানুষ খুঁজে পাইনি, তখন নিজেই দুটো চরিত্র তৈরি করে নিয়ে তাদের ভেতর সেই কাল্পনিক আলাপটা জারি রেখেছি। সেই কাল্পনিক দুই চরিত্রের আলাপের ভেতর দিয়ে জীবনের এই সব অমীমাংসিত নানা প্রসঙ্গের ভেতর বিচরণের একটা উপায় খুঁজে নিয়েছি। সংলাপের আদলে লেখা হলেও এর মঞ্চ সম্ভাবনার কথা তখন ভাবিনি। সাইফ সুমনের সঙ্গে আলাপের প্রেক্ষিতে সংযোজন, বিয়োজনের মাধ্যমে গল্পটির একটি নতুন রূপ দিই।’

২০০৯ সালে নাট্যপত্রিকা ‘থিয়েটারওয়ালা’র উদ্যোগে যাত্রা শুরু করে ‘থিয়েটারওয়ালা রেপাটরি’। এ নাটকে কাজ করেছেন ঢাকার বিভিন্ন নাটকের দলের সদস্যরা। যেমন মঞ্চে অভিনয় করবেন নাট্যকেন্দ্রের ইউসুফ হাসান অর্ক ও থিয়েট্রেক্সের রুদ্র সাওজাল। আলোক পরিকল্পক নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের অম্লান বিশ্বাস। পোশাক পরিকল্পক নাট্যম রেপার্টরির আইরিন পারভীন, মঞ্চ পরিকল্পক, পোস্টার, প্রকাশনা, প্রচার, মঞ্চ ব্যবস্থাপক অনুস্বরের সাকিল সিদ্ধার্থ।