Thank you for trying Sticky AMP!!

সিনেমায় কাজ করতে হলে আরও অনেক কিছু শিখতে হবে

সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুর বায়োপিকের শুটিং শেষে মুম্বাই থেকে ঢাকা ফিরেছেন সাবিলা নূর। কাজ শেষ করেছেন ঈদের বেশ কয়েকটি নাটকের। যুক্ত হয়েছেন গ্লো অ্যান্ড লাভলীর শুভেচ্ছা দূত হিসেবেও। এরই মধ্যে পণ্যটির বিজ্ঞাপনচিত্রের ফটোশুটের কাজও করেছেন তিনি। এদিকে লকডাউন শুরু হওয়ায় সামনের শুটিং নিয়ে নতুন পরিকল্পনা করছেন। এসব নিয়ে কথা হলো তাঁর সঙ্গে।
সাবিলা নূর
প্রশ্ন

আপনার নম্বরটা ডায়াল করতেই মনিটরে ভেসে উঠল, উইলিয়াম শেক্‌সপিয়ার সাবলা বাবলা। ঘটনা কী?

(হাসি)। উইলিয়াম শেক্‌সপিয়ার সাবলা বাবলা হচ্ছে এমন একটা মেয়ে, একটা আইডেনন্টির ভেতরে নিজেকে হাইড করতে চায়। শেক্‌সপিয়ার আমার অসম্ভব পছন্দের একজন লেখক। আমি যেহেতু ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্রী, সব সময় শেক্‌সপিয়ার পড়তে হয়। সেখান থেকে তিনি আমার পছন্দের মানুষ।

প্রশ্ন

আর সাবলা বাবলা...?

আমি যখন একদম ছোট, স্কুলে পড়তাম, তখন বন্ধুরা আমাকে সাবলা বলে ডাকত। কারণ, আমি তখন একটু গাধা টাইপের মেয়ে ছিলাম। আমি সব সময় চাইতাম, বন্ধুদের সাহায্য করতে। পরীক্ষার হলে বন্ধুদের খাতা খুলে দেখাতাম। সেখান থেকেই ওরা আদর করে আমাকে সাবলা নামটা দিয়েছে। আর ছন্দ মেলাতে বাবলা নামটা আমি নিজেই দিয়েছি।

সাবিলা নূর
প্রশ্ন

সেই গাধা কি এখন চালাক হয়েছে?

এখনো গাধাই আছি। সবাই আমাকে এখনো গাধাই বলে...মায়ের মতে, আমি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গাধাদের একজন। স্বামীর মতেও আমি অসম্ভব রকমের গাধা একটা মেয়ে। আম্মু আর আমার হাজবেন্ড এই ক্ষেত্রে এক দলে। ওদের মতে, মানুষের বয়স বাড়ে, বুদ্ধি বাড়ে; কিন্তু আমার বুদ্ধি কমছে। আমার তাই মনে হয়, আমি দিনে দিনে আরও গাধা হচ্ছি।

প্রশ্ন

সাবিলার কি কখনো বুদ্ধিমান হতে মন চায় না?

মন চায়। আবার মাঝেমধ্যে মনে হয়, এই গাধামিটাই আমার একটা শক্তি। আমি অনেক কিছু বুঝি না, সেটাই আমার শান্তির ব্যাপার।

প্রশ্ন

আপনার আম্মু ও স্বামী কি বুদ্ধিমান হওয়ার পরামর্শ দেন?

দেয় তো। আমি কিচ্ছু শুনি না।

সাবিলা নূর
প্রশ্ন

নতুন একটি বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করলেন?

কিছুদিন আগে আমাকে গ্লো অ্যান্ড লাভলী এর শুভেচ্ছা দূত নির্বাচিত করা হয়। এরপর পণ্যটির বিজ্ঞাপনচিত্রের শুটিং করি। আজ (রোববার) ফটোশুট ছিল। এমন একটি নামী পণ্যের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে ভালো লাগছে। সত্যি কথা বলতে, আমি অনেক বেশি সম্মানিত ও রোমাঞ্চিত।

প্রশ্ন

বঙ্গবন্ধু বায়োপিকে শুটিং করতে গিয়েছিলেন, ওটার খবর বলুন?

মুম্বাইয়ের অংশের শুটিং শেষ করে সম্প্রতি ঢাকায় ফিরেছি। এ বছর হয়তো ঢাকায় শুটিং শুরু করবে। কিন্তু করোনার কারণে এই পরিস্থিতিতে কী হয় বোঝা মুশকিল। তবে ওদের পরিকল্পনা আছে, সেপ্টেম্বরে ঢাকায় শুটিং করবে।

প্রশ্ন

কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

বঙ্গবন্ধু বায়োপিকে অভিনয় করতে পারাটা এখন পর্যন্ত আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জন। এত কম বয়সে শ্যাম বেনেগালের মতো পরিচালকের পরিচালনায় কাজ করছি, ভাবতেই অন্য রকম লাগে। যখন এত বড় মাপের পরিচালক বলেছেন, আমার অভিব্যক্তি ভালো, সুন্দর করে সংলাপ বলি—শুনে দারুণ লেগেছে। ভারতের পুরো ইউনিট থেকে আমি অনেক আদর, প্রশংসা আর উৎসাহ পেয়েছি। প্রথম দুদিনের শুটিংয়ের পর সবাই যেভাবে কেয়ার করেছে, তা মুগ্ধ করার মতো।

সাবিলা নূর
প্রশ্ন

আপনার মা–বাবা ও জীবনসঙ্গী এই ছবিতে কাজ করার খবর শোনার পর কী বলেছেন?

কাজটা কীভাবে করব, এটা ভেবে আমি শুরুতে প্রচণ্ড নার্ভাস ছিলাম। এটা আমার প্রথম সিনেমা, তার ওপর অনেক বড় ক্যানভাসের। তাই আম্মু–আব্বু ও হাজবেন্ড অনেক বেশি এক্সাইটেড ছিল। তারা আমাকে বসে বসে রিহার্সেল করাত। সংলাপগুলো আয়ত্তে আনার ব্যাপারে সহযোগিতা করত। আমার বড় বোন একসময় থিয়েটার করত। এখনো যুক্তরাষ্ট্রে নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত আছে। ওর কাছ থেকে আমি অনেক পরামর্শ নিয়েছি। আমার ভাইয়া, দুলাভাই, ভাবি সবাই আমাকে ফোনে, ভিডিও কলে অনেক সাপোর্ট দিয়েছে। ওরা সবাই জানে, আমি খুব সহজে নার্ভাস হয়ে যাই। তাই সেই সাপোর্ট অনেক জরুরি ছিল।

সাবিলা নূর
প্রশ্ন

এই ছবিতে আপনার চরিত্র সম্পর্কে ধারণা দেবেন?

এই ছবিতে আমি ১৪ থেকে ২২ বছরের শেখ রেহানার চরিত্রে অভিনয় করেছি। তাঁর সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। তাঁর সঙ্গে দেখা হওয়ার অভিজ্ঞতা বলে শেষ করা যাবে না। তিনি তাঁর জীবনের বেশ কিছু অভিজ্ঞতা আমার সঙ্গে ভাগাভাগি করেছেন। যা হয়তো ছবিতে পাওয়া যাবে না। কিন্তু তাঁর কাছ থেকে শোনা কথাগুলো আমাকে চরিত্রটি হয়ে উঠতে অনেক সহযোগিতা করেছে।

প্রশ্ন

সিনেমায় নিয়মিত হবেন?

সত্যি বলতে কি, নিয়মিত হওয়ার ইচ্ছা নেই। আমি সব সময় বলে এসেছি, সিনেমার জন্য আমি এখনো অনেক ছোট। সিনেমায় কাজ করতে হলে আরও অনেক কিছু শিখতে হবে। যেহেতু বঙ্গবন্ধুর বায়োপিকের মতো একটি সুযোগ পেয়েছি, এই সুযোগ কেউ হাতছাড়া করতে চাইবে না। আমিও চাইনি। এই ধরনের একটি ছবিতে অভিনয়ের পর পরের ছবি নিয়ে অবশ্যই অন্য রকমভাবে ভাবতে হবে। সেই ধরনের আয়োজন হতে হবে, সামাজিক কমিটমেন্ট থাকতে হবে।

সাবিলা নূর
প্রশ্ন

আপনার স্বপ্নের চরিত্র কোনটি?

অ্যাডগার অ্যালেন পো হচ্ছেন আমার খুব প্রিয় একজন লেখক। তাঁর গল্প–উপন্যাস পড়তে পড়তে আমার হরর এবং থ্রিলারের প্রতি আগ্রহ জন্মেছে। এই ধরনের চরিত্রে কাজ করার খুব ইচ্ছা। বাংলাদেশের নাটক বা সিনেমার ক্ষেত্রে এমন কাজ বলতে গেলে হয়ই না। আশা করব, ভবিষ্যতে এমন ভাবনা নিয়েও কাজ হবে। এমন কোনো সুযোগ পেলে আমি নিজেকে উজাড় করে দিতে চাই, হোক তা ছোট পর্দা কিংবা বড় পর্দা।

সাবিলা নূর
প্রশ্ন

বাংলাদেশের কোন লেখকের লেখা ভালো লাগে?

হুমায়ূন আহমেদ আমার খুব খুব পছন্দের লেখক। তিনি যে গল্প ও উপন্যাস লিখেছেন, তার সঙ্গে যে কেউ নিজেকে কানেক্ট করতে পারবে।

প্রশ্ন

দেশের বাইরে আর কোন লেখকের লেখা পড়তে ভালো লাগে?

জেন অস্টিন আর ভার্জিনিয়া উলফ।

সাবিলা নূর
প্রশ্ন

ইংরেজি নিয়ে পড়ছেন। এই নিয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে?

ভবিষ্যতে আমার শিক্ষকতা পেশায় যাওয়ার খুব ইচ্ছা। সে ক্ষেত্রে সাহিত্যের শিক্ষকই হতে চাই।