Thank you for trying Sticky AMP!!

এ প্রজন্মের শিল্পীরা আরও বেরিয়ে আসুক: রুনা লায়লা

রুনা লায়লা
>উপমহাদেশের প্রখ্যাত গায়িকা, জীবন্ত কিংবদন্তি—যেভাবেই বলি না কেন, তিনি রুনা লায়লা। গানে গানে বাংলাদেশকে নিয়ে তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন বিশ্বমঞ্চে। চলচ্চিত্রের গানে মাঝেমধ্যে তাঁকে পাওয়া গেলেও অডিওর গানে বহু বছর ধরে তাঁর দেখা নেই। ১৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকার নিকেতনে গানের দল চিরকুটের নিজস্ব স্টুডিওতে নতুন গানে কণ্ঠ দেন তিনি। দীর্ঘ সংগীতজীবনে এটি তাঁর সুর করা প্রথম অডিও গান। শিগগিরই গানটি প্রকাশ করবে ধ্রুব মিউজিক স্টেশন। নতুন গানটিসহ বিভিন্ন প্রসঙ্গে আজ শনিবার দুপুরে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন রুনা লায়লা।

অভিনন্দন রুনা আপা। শ্রোতারা আপনার সুরে নতুন গান পেতে যাচ্ছে?
আমি তো চলচ্চিত্রের গান দিয়েই সুরকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করি। আলমগীর সাহেবের (বরেণ্য চিত্রনায়ক আলমগীর) ‘একটি সিনেমার গল্প’ সিনেমায় গানটি ব্যবহার করা হয়। আমার সুর করা সেই গানে কণ্ঠ দিয়েছিল আঁখি আলমগীর। এবার অডিওতে পাঁচটি গানের সুর করলাম। একটি গান আমি গেয়েছি, বাকি চারটি অন্য শিল্পীরা।

‘একটি সিনেমার গল্প’ চলচ্চিত্রে আপনার সুর করা গানটি নিয়ে যখন গত বছর আলাপ হচ্ছিল, তখনই বলেছিলেন, আরও কিছু গানের সুর করতে চান। আপনার সুরে অন্যদের গাওয়াতেও চান। এটি কি সেই গানগুলো?
ঠিকই ধরেছ। একদমই তাই। গত বছর বাসার এক আড্ডায় আঁখি আলমগীর আমাকে সুর করার অনুরোধ জানায়। সে বলেছিল, ‘আপনি এত গান গেয়েছেন, কিন্তু সুর করেন না কেন? আপনি একটা গানের সুর করেন, আমি গাইব।’ সুর করা যদিও অনেক কঠিন কাজ, তারপরও আঁখির কারণে শেষ পর্যন্ত একটা গানের সুর করে আলমগীর সাহেবকে শোনাই। তিনি খুব উৎসাহ দেন। প্রথম সুর করা গানটিতে অবশ্য আমাকে ইমন সাহা অনেক সহযোগিতা করেছিল। তখনই ভেবেছিলাম, আরও কিছু গানের সুর করব। আমার সুরে পরের প্রজন্মের শিল্পীরা গাইবে। সেই ভাবনা থেকে এই গানগুলোর সুর করা।

গানগুলো কারা প্রকাশ করবে?
কয়েকটি গানের সুর করার পর ভাবছিলাম, এগুলো কোন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশ করব। এমন সময় আমার সঙ্গে কথা হয় ধ্রুব মিউজিক স্টেশনের কর্ণধার ধ্রুব গুহর সঙ্গে। এরপর ধ্রুব একদিন আমার বাসায় আসে। মোবাইল ফোনে রেকর্ড করা গানগুলো শোনে। শোনার পর বলে, আপনি আপনার মতো কাজ করে যান। আমি আপনার এই সৃষ্টির সঙ্গে থাকতে চাই। খুব সম্মান দিয়ে সে আমাকে কাজটি করার স্বাধীনতা দিয়েছে। আমাকে বলেছে, আপনি যেভাবে গুছিয়ে কাজটি করতে চান, সেভাবেই করেন।

গানগুলোর সংগীত পরিচালনা কে করবেন?
প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত হওয়ার পর আমার সঙ্গে কথা হয় লন্ডনের সংগীত পরিচালক রাজা কাশেফের। সে আমার দুই নাতিরও গান করেছিল। তাঁকে বললাম, চলো নতুন কিছু করি। সে–ও খুব আগ্রহ নিয়ে কাজটি করতে চাইল। তারপর লন্ডনে গেলে ওর সঙ্গে কয়েক দফা আলাপ হয়। রাজা কাশেফ গানগুলো শুনলেন। এরপর আমি ঢাকায় চলে আসি। ঢাকায় আসার পর গানের মিউজিক অ্যারেঞ্জমেন্ট করে পাঠাল। এরপর কয়েকবার সংশোধন শেষে পাঁচটা গান তৈরি হয়।

আপনার গাওয়া গানটি কোন ধরনের?
‘ফেরাতে পারিনি আর তোমাকে এ ভালোবাসায়’ গানটি মেলোডিয়াস ঘরানার, ক্ল্যাসিক্যাল বেইজড।

বলছিলেন বাকি গানগুলো অন্য শিল্পীদের দিয়ে গাওয়াবেন। সেগুলোর কী অবস্থা?
প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের চাওয়া ছিল, আমার সুর করা গানের মধ্যে আমার গাওয়া গানটাই যেন প্রথম প্রকাশ হয়। তাই গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছি। বাকিগুলো গেয়েছে আঁখি আলমগীর, লুইপা ও হৈমন্তী রক্ষিত দাশ। আরেকটা গানে কণ্ঠ দেওয়া বাকি। এটা আমি তানিকে (তানি লায়লা, রুনা লায়লার মেয়ে) দিয়ে গাওয়াতে চাই। তানি তো একটা সময় নিয়মিত গাইত, এখন আর সেভাবে গান গায় না। অবশ্য নিয়মিত রেওয়াজ করে। যেহেতু বহুদিন পর নতুন কোনো গান প্রকাশ করছে, আমি চাইলাম— আমার সুর করা গান দিয়ে নতুন করে আবার শুরু হোক তার। তানি রাজি হচ্ছিল না, অনেক বুঝিয়ে রাজি করিয়েছি। তানির গানটি ছাড়া বাকি গানগুলোর কণ্ঠ দেওয়া শেষ। এখন শুধু মিক্স–মাস্টারিং বাকি।

কেমন গেয়েছেন তাঁরা?
আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। শিল্পীরা, যারা গেয়েছে, খুব পরিশ্রম করেছে। চেষ্টা করে ভালো করে গাওয়ার। আমি চাচ্ছিলাম, এ প্রজন্মের শিল্পীরা আরও বেরিয়ে আসুক। নতুন প্রজন্ম প্রশংসিত হলে আমার আরও ভালো লাগবে।

আপনার সুরের অন্য গানগুলোর ধরন কেমন?
দুটো গান রিদমিক, এর একটি গেয়েছে আঁখি আলমগীর অন্যটি গাইবে তানি লায়লা। বাকি দুটো স্যাড, রিদমিক ও সেমিক্ল্যাসিক্যাল। পাঁচটি গানের কথা লিখেছেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার ও কবির বকুল। গানগুলো পর্যায়ক্রমে প্রকাশ করা হবে।

চলচ্চিত্রের গান প্রায় নিয়মিতই বলা যায়। অডিওর জন্য শেষ কবে গানে কণ্ঠ দিয়েছেন?
অনেক বছর তো হবে। শেষ কবে গেয়েছি মনেও পড়ছে না। তবে অডিওর গানে কণ্ঠ দেওয়ার প্রস্তাব অনেক পেয়েছিলাম। সবকিছু মিলিয়ে হয়ে ওঠেনি। আমি খুবই খুশি এই কারণে যে, অডিওর গানে যখন ফিরছি, তখন মনের মতো কাজ করতে পারছি। দুই আড়াই মাস আগে গানগুলো তুলে দিয়েছিলাম সবাইকে। এরপর ওরা নিয়ম করে চর্চা করেছে। রেকর্ডিংয়ের আগের দিন আবার ওদের নিয়ে মহড়া করে নিয়েছি। গানগুলো ওদের গলায় দারুণভাবে বসে গেছে।