Thank you for trying Sticky AMP!!

আজমেরী হক বাঁধন

ওই সব দিনের কথা ভাবতেও ভয় লাগে

আজ কান চলচ্চিত্র উৎসবের আঁ সার্তে রিগা বিভাগে প্রদর্শিত হবে বাংলাদেশের সিনেমা রেহানা মরিয়ম নূর। আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ পরিচালিত এই সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন আজমেরী হক বাঁধন। উৎসব শুরুর আগে কান থেকে কথা বলেছেন বাঁধন।
প্রশ্ন

প্যারিস যাওয়ার পথে নাকি ভোগান্তিতে পড়েছিলেন?

বিমানবন্দরে নানা রকম জটিলতা হয়েছিল। ঢাকায় ইমিগ্রেশনেও দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। অনেকে জানতেন না, আমরা কেন যাচ্ছি। ভুল–বোঝাবুঝির কারণে অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। ফ্লাই করার মাত্র ৫ মিনিট আগে অনবোর্ড হতে পেরেছি। এয়ারলাইনস এবং ইমিগ্রেশনের এসব কর্মকাণ্ডে শেকি হয়ে যাই। তাই আমরা পুরো জার্নিতে কোনো ছবিও তুলিনি। একধরনের শঙ্কাও তৈরি হয়েছিল, ফ্রান্সে আমাদের আদৌ ঢোকা হবে কি না।

আজমেরী হক বাঁধন
প্রশ্ন

আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ বলেছেন, শুটিংয়ের প্রতিটি দিনই তাঁর কাছে মনে হতো, যেন গণিতের পরীক্ষা দিচ্ছেন। আপনার কী মনে হতো?

আমার তো পুরো জীবনটাই পরীক্ষা দিতে দিতে যাচ্ছে। শুটিংয়ের ওই সময়টায় আরও বেশি দিতে হয়েছে। শুটিংয়ের দেড় বছর কোনো কাজ করিনি। মেয়েকে রেখে দুই মাস শুটিং করেছি। মেয়ে প্রতিদিন ফোন করে কান্নাকাটি করত। আমার একটা আইনি ঝামেলা চলছিল, আইনজীবী নানা ইস্যুতে ফোন করত। আম্মু ফোন করে বলত, সায়রার স্কুল থেকে জানিয়েছে, এটা-ওটা হয়েছে। ওদিকে আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ বলছে, কিচ্ছু হচ্ছে না কাজ। তখন মনে হতো, আমি আসলে এই জীবনে কী করলাম। এই যুদ্ধটা প্রতিনিয়ত, প্রতি মুহূর্তে করতে হয়েছে। শুটিং শেষের দুই দিন আগে মনে মনে চেয়েছিলাম, এই শুটিং শেষ না হোক। তার আগমুহূর্ত পর্যন্ত আমি রীতিমতো মারাই যাচ্ছিলাম। স্ক্রিনে যে অস্থিরতা, তা আমার জীবনেও আছে। সেটা আরও জটিল হয়ে গেল যখন, এত কিছুর মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছিল। এটাকে আমি বলব জীবনের পরীক্ষা। ওই সব দিনের কথা ভাবতেও ভয় লাগে।

‘রেহানা মরিয়ম নূর’ ছবির পরিচালক আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ ও অভিনয়শিল্পী আজমেরী হক বাঁধন
প্রশ্ন

শুটিং কোথায় হয়েছে?

খুবই ইন্টারেস্টিং একটা লোকেশন। কুমিল্লার একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে। আমরা সবাই আবার একসঙ্গে যেন থাকতে পারি, তাই হোস্টেল পছন্দ ছিল। যে আমি কোনো দিন হোস্টেলে থাকিনি, এই সময়টা দুই মাস মেয়েদের হোস্টেলে ছিলাম।

প্রশ্ন

প্রিমিয়ারে কী পরবেন?

এটা ঠিক, বাংলাদেশি ডিজাইনারের পোশাক পরব। শাড়ি না গাউন, সেটা আগের রাতে বুঝতে পারব।

সাল দুবুসিতে ৭ জুলাই সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় হবে এই ছবির প্রথম প্রদর্শনী
প্রশ্ন

জীবনের সবচেয়ে সম্মানজনক মুহূর্তের সামনে আপনি। এই সময়ে আপনার মেয়ে সায়রা সঙ্গে থাকলে কেমন হতো?

খুব ভালো হতো। মেয়ে বলে দিয়েছে, আমার বক্তব্যে তার নাম বলতে যেন ভুলে না যাই। আমি বলেছি, আমি আমাকে ভুলে গেলেও তোমাকে ভুলতে পারব না, মা। মেয়ের যেদিন জন্ম, সেদিনের পর এটাই আমার জীবনের সুন্দর মুহূর্ত।

আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ
প্রশ্ন

উদ্বোধনী দিনে লালগালিচায় আপনারা নাকি থাকছেন না!

এই না যাওয়ার সিদ্ধান্ত সাদের টিম স্পিরিটের অন্যতম অংশ। কানের রীতি অনুযায়ী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিলে আমি, পরিচালক আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ আর প্রযোজক জেরেমি চুয়া নিতে পারি। কিন্তু আমাদের সঙ্গে যাঁরা এতটা পথ এলেন—শব্দ প্রকৌশলী শৈব তালুকদার, কালারিস্ট চিন্ময় রয়, প্রোডাকশন ডিজাইনার আলী আফজাল উজ্জ্বল, চিত্রগ্রাহক তুহিন নাজমুল ও নির্বাহী প্রযোজক এহসানুল হক, তাঁদের কী হবে! তাঁরা হোটেলে আর আমরা লালগালিচায়, সেটিকে সাদ মোটেও সমর্থন করে না। তাই আমাদের এই সিদ্ধান্ত। এতে আমাদের মধ্যে কোনো দুঃখ নেই, বরং স্বস্তি আছে।