Thank you for trying Sticky AMP!!

গাইতে গিয়ে কেঁদে ফেলেছিলাম

ফাহমিদা নবী
>

গিটারের জাদুকর, ব্যান্ড তারকা আইয়ুব বাচ্চুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নতুন একটি গান গেয়েছেন শিল্পী ফাহমিদা নবী। এনটিভিতে প্রচারিত রিয়েলিটি শো সিলন সুপার সিঙ্গার প্রতিযোগিতার অন্যতম বিচারকও এই শিল্পী। কথা বললেন সংগীতজগতের নানা বিষয় নিয়ে।

হঠাৎ আইয়ুব বাচ্চুকে নিয়ে গান গাইলেন কেন?

আমাদের ইচ্ছা হয় অগ্রজ শিল্পীদের গানে গানে ট্রিবিউট দিই। বাচ্চু ভাইকে নিয়ে নতুন এই গান খুবই চমৎকার। তাঁর মতো একজন শিল্পীকে ট্রিবিউট দিয়ে এমন একটি গান গাইতে পেরে ভালো লেগেছে। পিয়ানোর ওপরই গান, গাইতে গিয়ে কেঁদে ফেলেছিলাম। একই গান আমি ও টুটুল আলাদাভাবে গেয়েছি। গানটির কথা ও সুর করেছেন তিতাস কাজী। গানটির কথাগুলো এ রকম—‘এই রুপালি গিটার ফেলে চলে একেলা’। আইয়ুব বাচ্চুর জন্মদিনে গানটির দুটি ভার্সনের ভিডিও ইউটিউবে প্রকাশিত হবে।

সিলন সুপার সিঙ্গার প্রতিযোগিতা সম্পর্কে জানতে চাই। উপভোগ করছেন অনুষ্ঠানটি?

নানা সমস্যায় আমাদের দেশের অনেক মেয়ে গান ছেড়ে দেয়। সংসার শুরু করলে তো আর গাওয়ার সুযোগও থাকে না। সে রকম গানপ্রেমী ও গান জানা মেয়েদের কথা চিন্তা করেই এই আয়োজন। তাদের উৎসাহ দেওয়া, তারা যে ফুরিয়ে যায়নি, সেটা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য এ অনুষ্ঠান। অনেককে পেয়েছি, বহু আগে গাইত, কণ্ঠও ভালো, বেশ ভালো গায়ও। তাদের গাওয়ার অদম্য ইচ্ছা আমাকে মুগ্ধ করেছে। দেখা গেছে, একজন প্রতিযোগীকে অনেক ধরনের গানে অনেকক্ষণ ধরে যাচাই করেছি, ইয়েস কার্ড দেওয়ার পর দেখি স্বামী কাঁদছে।

প্রতিযোগী বাছাই করতে কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন?

সব বিভাগেই গিয়েছি। সবচেয়ে ভালো প্রতিযোগী পেয়েছি চট্টগ্রামে। খুলনার প্রতিযোগীরাও ভালো ছিল। এখন সেরা ৩০ জনের লড়াই চলছে।

এখনকার গানের জগৎ নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কী?

আমার মেয়ে প্রায়ই বলে, বিদেশে এখনো শিল্পীদের পেছনে অর্থ লগ্নি করা হয়। তোমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে করা হয় না কেন? আমাদের গানের জগতের এই অবস্থাটা মেনে নেওয়া যায় না।

বিনিয়োগ তো হচ্ছে?

বিনিয়োগের নামে যা হচ্ছে, সেগুলোকে গণনায় ধরি না। সত্যিকারের শিল্পীদের পেছনে বিনিয়োগ হচ্ছে না। কী হচ্ছে, তা তো সবার কাছেই দৃশ্যমান। এসব মোটেও ভালো লক্ষণ নয়।

দেশে প্রতিভাবান শিল্পী আছে?

অবশ্যই আছে। জানাশোনা শিল্পীদের পেছনে অর্থ লগ্নি করার মতো প্রতিষ্ঠান নেই। শুনেছি মানুষ সোনার হরিণের পেছনে ছোটে। কিন্তু গানের জগতে কি আসলেই সোনার হরিণের পেছনে ছুটছি আমরা? তাই তো কিছুদিন পরই অর্থলগ্নিকারীরা ধাক্কা খায়। যাদের নিয়ে বাড়াবাড়ি হয়, কিছুদিন থাকে—এরপর বাতাসে মিলিয়ে যায়। ইদানীং তো সবাইকে আবার নতুন এক রোগে পেয়েছে।

কী রোগ?

শিল্পীর গুণ নয়, তার ফেসবুক ফ্যান, অনুসারী কত? ইউটিউব ভিউ কেমন—এসবই প্রধান মানদণ্ড এখন। কিন্তু এসব তো গানের সঙ্গে যায় না। টেলিভিশন, পত্রপত্রিকা এমন কিছু মানুষকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়, যা তারা ডিজার্ভ করে না। অশিক্ষিত মানুষের আনাগোনা বেড়ে গেছে। এমনও দেখি, যারা টেলিভিশনকে কথা দেওয়া অনুষ্ঠান বাদ নিয়ে স্টেজ শোতে দৌড়ায়। বরেণ্য শিল্পীকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রেখে অনুষ্ঠানে যায় না। তাদের নিয়ে সংবাদমাধ্যম ও টেলিভিশনে মাতামাতি, যা খুবই দুঃখজনক।

উত্তরণের উপায় কী?

প্রথমেই বলব, সংবাদমাধ্যম ও টেলিভিশন চ্যানেলের উচিত হবে মেধা দেখে শিল্পীদের কাভারেজ দেওয়া। অযোগ্যরা এমনিতে কমে যাবে।

আপনি কি ঈর্ষা থেকে এসব বলছেন?
একদমই না। আমি সব সময় তরুণদের উৎসাহ দিই। কিন্তু ইদানীং যা হচ্ছে, মেনে নিতে পারছি না। আমি একনিশ্বাসে ২০ জন তরুণ শিল্পীর নাম বলে দিতে পারব, যাদের পেছনে পৃষ্ঠপোষকতা করলে প্রতিষ্ঠান যেমন সম্মানিত হবে, তেমনি ইন্ডাস্ট্রিও সমৃদ্ধ হবে।

শেষ তিন প্রশ্ন

এ প্রজন্মের তিনজন গায়কের নাম বলুন, যাঁদের সঙ্গে দ্বৈত কণ্ঠে গাইতে চান।
শোয়েব, শামীম ও প্রতীক হাসান।

সমসাময়িক শিল্পীদের মধ্যে যে তিনজনের সঙ্গে দ্বৈত গানে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।
বাপ্পা মজুমদার, এস আই টুটুল ও পার্থ বড়ুয়া।

আপনার সুরে কোন তিনজন কণ্ঠশিল্পীকে গান গাওয়াতে চান?
কোনাল, সুকন্যা ও আঁচল।