Thank you for trying Sticky AMP!!

শাকিব খানের সঙ্গে প্রতিযোগিতার যোগ্যতা হয়নি

এ বছর বেশ কয়েকটি ছবি মুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে সিয়ামের। ছবি: সংগৃহীত

শাকিব ভাই ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে আছেন। তিনি আমাদের দেশের শীর্ষ নায়ক। তাঁর সঙ্গে কম্পিটিশন করতে পারা আমার জন্য অনেক বড় ব্যাপার। কিন্তু শাকিব খানের সঙ্গে প্রতিযোগিতার যোগ্যতা আমার হয়নি ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’ ছবি নিয়ে ব্যস্ত অভিনেতা সিয়াম আহমেদ। আজ তাঁর জন্মদিন। এই দিনে পরিবারের কাছ থেকে তিনি রয়েছেন দূরে। সুন্দরবনের কাছাকাছি মোংলায় চলছিল তাঁদের ছবির শুটিং। ফলে লঞ্চেই কাটল তাঁর এ বছরের জন্মদিন। সেসব নিয়েই কথা হলো তাঁর সঙ্গে।

জন্মদিন কীভাবে কাটাচ্ছেন?
এখানে সময় কাটানোর তেমন কোন সুযোগ নেই। কখনো গল্পের বই পড়ছি, গান শুনছি। তবে কাজ করেই কাটছে বেশির ভাগ সময়। কখনো অভিনয়, কখনো স্ক্রিপ্ট পরে সময় কাটছে। আমাদের অ্যাক্টিং ট্রেইনার আছেন, তাঁর সঙ্গে কথা বলে কিছু শেখার চেষ্টা করছি। ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’ টিম এখন আমার কাছে একটি পরিবার। অনেক বাচ্চা উইশ করছে। এদের সবাইকে নিয়ে জন্মদিন কাটিয়ে দিচ্ছি।

ব্যক্তি সিয়ামের জন্মদিনে ও তারকা সিয়ামের জন্মদিনে কতটা পার্থক্য এনেছে?
ছয় বছর আগের জন্মদিন অনেকটা লিমিটেড ছিল। তখন পরিবার, কাছের মানুষ, বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে জন্মদিন কাটত। এখন পরিসরটা অনেক বেড়েছে। আগের মতো সেই ভালোবাসাটাও আছে। সবার ভালোবাসা আমাকে আনন্দ দেয়।

এই দিনে কার কথা বেশি মনে পরেছে?
বাবা-মা, স্ত্রী অবন্তীর কথা মনে পরেছে। মায়ের রান্না খুব মিস করছি। অবন্তীর অনেক প্ল্যানিং থাকে সব সময়, সেগুলো মিস করছি। ভিডিও কলে বাসার কেক কেটে জন্মদিন পালন করেছি।

জন্মদিনে সেরা গিফট কোনটি?
(একটু সময় নিয়ে) সেরা উপহারটা বাবা-মার কাছ থেকেই পাওয়া। তখন ছাত্রাবস্থায় টিউশনি করে নিজের খরচ চালাতাম। এক জন্মদিনে বাবা-মা আমাকে উইশ করেনি। আমি ভেবেছিলাম তাঁরা মনে হয় ভুলে গেছে। দিনটা শেষ হওয়ার আগে বাবা-মা আমাকে একটি খাম দিয়েছিল। তাতে কিছু টাকা ছিল এবং আমার জীবনের জন্য কিছু শিক্ষামূলক বার্তা ছিল। সেটা আমি কখনই ভুলব না। সেগুলো আমি সারা জীবন আমার সঙ্গে রেখে দিতে চাই।

ঢালিউডের উঠতি তারকা সিয়াম আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

আপনার এ বছরের ছবিগুলো দর্শকদের কতটা হলমুখী করতে পারে?
এ বছর ৬-৭ টি ছবি মুক্তির সম্ভাবনা আছে। সবাই যদি বাংলা ছবি দেখতে যান, তাহলে হয়তো বিপুলসংখ্যক মানুষ হলমুখী হবেন বলে ধরে নেওয়া যায়। কিন্তু দর্শক যদি পক্ষপাত হয়ে হলে যান, যেমন অমুক ভাইয়ের ছবি দেখব, অমুক হিরোর ছবি দেখব, তাহলে কী হবে জানি না। এই পক্ষপাত থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আমাদের তিন-চার হাজার হল থাকলে একটা কথা ছিল। তখন এই পক্ষপাত তেমন ইমপ্যাক্ট ফেলতে পারত না। ভালো একটি সিনেমায় আমাদের সবার ঝাঁপিয়ে পরতে হবে। একটু ভালো হলেই প্রশংসা করতে হবে। তাহলে সবার মধ্যে কাজের আগ্রহ জন্ম নেবে। তখন ভালো ছবিও হবে। আমার প্রথম ছবিতে অনেক সাপোর্ট পেয়েছিলাম। সেটা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে আমি আগের চেয়ে আরও বেশি পরিশ্রম করতে পারব।

করোনা পরিস্থিতি চলচ্চিত্র শিল্পকে কতটা সংকটে ফেলবে?
কিছুটা সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতেই হবে। সেটা নীতি নির্ধারকেরা ভালো বলতে পারবেন। তবে এই মুহূর্তে আমাদের নিজেদের মধ্যে একটা বোঝাপড়া করা যায়। দেখা যাবে সামনে একসঙ্গে ৫-৬ টি ভালো সিনেমা চলে এসেছে। সে ক্ষেত্রে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ভালো সিনেমাগুলোকে একসঙ্গে মুক্তি না দিয়ে একটা নির্দিষ্ট সময় পর পর মুক্তি দেওয়া যেতে পারে। তাহলে সারা বছর ভালো ছবিগুলোর টানে দর্শকেরা হলমুখী হবেন। এতে সবাই উপকৃত হবে, লগ্নি ফিরে আসবে।

এত ব্যস্ততায় পরিবারকে কীভাবে সময় দিচ্ছেন?
গত ৮-৯ মাসের বেশি আমি পরিবারকে সময় দিতে পারি না। দিনে ১৭-১৮ ঘণ্টা কাজ করি। যখন ঘরে ফিরি তখন দেখি সবাই ঘুমিয়ে আছেন। যখন বাসা থেকে বের হই, তখন দেখি সবাই ঘুমে। এই ব্যস্ততা যে আমার ভালো লাগে, তা না। আমারও পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে ইচ্ছে করে। এই নিয়ে আমার স্ত্রীও অভিযোগ করেন। আমার আরও বেশি সময় পরিবারকে দেওয়া প্রয়োজন।

ঈদে দেখা যাবে শাকিব খানের সঙ্গেও আপনার ছবি মুক্তি পেল। তাঁর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে কেমন লাগবে?
শাকিব ভাই ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে আছেন। তিনি আমাদের দেশের শীর্ষ নায়ক। তাঁর সঙ্গে কম্পিটিশন করতে পারা আমার জন্য অনেক বড় ব্যাপার। কিন্তু শাকিব খানের সঙ্গে প্রতিযোগিতার যোগ্যতা আমার হয়নি। বরং শাকিব ভাইয়ের কাছে আমার চাওয়া যে, তিনি আমাকে পরামর্শ দেবেন ‘তুই এইটা কর, ওইটা কর, এভাবে চিন্তা কর, এভাবে এগিয়ে যা’। ভাইয়ের কাছ থেকে আমি এগুলো এক্সপেক্ট করি। শুভ ভাইয়ের কাছ থেকেও আমি এইটা এক্সপেক্ট করি। তাঁরা সিনিয়র, তাঁরা আমার ভুলগুলো ধরিয়ে দেবেন। আমাদের ছোট একটা মার্কেট, এখানে সিনিয়র-জুনিয়র মিলে একসঙ্গে কাজ করব। একটা ছোট পরিবারের মধ্যে এটাই আমি আশা করি।

ছবিটি পোস্ট করে সিয়াম লেখেন ‘কত দিন দেখি না তোমায়’। ছবি: সংগৃহীত

লঞ্চে কি আপনারা নিরাপদ?
সদরঘাট থেকে লঞ্চে ওঠার পর থেকে আমরা কোথাও নামিনি। এখানে এক ধরনের আইসোলেশনেই আছি আমরা। ১৩-১৪ দিন হলো বাইরের কারোর সঙ্গে আমাদের মেলামেশা হয়নি। আমরা পানিতে আছি। ফলে আমরা অনেকটাই নিরাপদে আছি বলা যায়। তা ছাড়া এখানে অনেকগুলো বাচ্চা আছে। তাদের ব্যাপারে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। ইউনিটে প্রচুর স্যানিটাইজার, হ্যান্ডওয়াশ ও মাস্ক রাখা আছে।

আপনার পরিবার থেকে দুঃশ্চিন্তা করছে না?
হ্যাঁ, সব সময়ই। পরিবার থেকে ফোনে সব সময় খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। ফোনে বারবার সাবধানে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। বাবা-মা ও স্ত্রীর সঙ্গে প্রতিদিনই কথা হচ্ছে।

ছবির কাজ কতটুকু হয়েছে?
প্রায় ষাট শতাংশের শুটিং শেষ। শেষের দিকে এসে করোনাভাইরাসের কারণে সবার মধ্যে একটা আতঙ্ক কাজ করছে। তা ছাড়া শুটিংয়ে অনেকগুলো বাচ্চা আছে। তাদের নিরাপত্তা নিয়ে বাড়তি চাপও আছে। সব মিলে আরামে কাজ করা সম্ভব হয়নি।

এক টানা শুটিং করে ছবির কাজ শেষ করা হচ্ছে না, নাকি?
হ্যাঁ। করোনাভাইরাসের কারণে সব এলোমেলো হয়ে গেছে। আবার জুলাইয়ের দিকে আরেক ধাপ শুটিং করতে হবে। সবার আগে নিরাপত্তা।

করোনা নিয়ে কতটা সতর্কে আছেন?
খুবই সতর্কে আছি। সবার সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে কথা বলছি। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম মেনে চলছি।