Thank you for trying Sticky AMP!!

'জায়গাটা এখন আর আমার না'

>
রিচি সোলায়মান

ছোট পর্দার জনপ্রিয় তারকা রিচি সোলায়মান। স্থায়ীভাবে আছেন যুক্তরাষ্ট্রে। নাটক থেকে দূরে আছেন। ব্যস্ত আছেন স্বামী, সন্তান আর সংসার নিয়ে। অনেক দিন পর দেশে ফিরেছেন। দীর্ঘদিন যে জগতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তা এখন মিস করেন। দেশে ফেরার পর কথা বললেন প্রথম আলোর সঙ্গে।

দেশে কবে এসেছেন?
৮ ডিসেম্বর। দেড় বছর পর দেশে এসেছি। সঙ্গে এসেছে আমার ছেলে রায়ান আর মেয়ে ইলমা। রায়ানের বয়স এখন সাত। ও নিউইয়র্কে সেকেন্ড গ্রেডে পড়ছে। ওর এখন বড়দিন আর শীতের ছুটি। তাই চলে এসেছি। জানুয়ারির শেষ দিকে ফিরে যাব।

যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পর আপনি আবার মা হয়েছেন।
হ্যাঁ, আমার মেয়ে হয়েছে। ইলমার বয়স চার মাস।

দেশে এসে কেমন লাগছে?
খুব ভালো। অনেকের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। কথা হচ্ছে। আত্মীয়স্বজন আসছেন। সময়টা দারুণ কাটছে!

আপনি ওখানে অভিনয় করছেন?
খুব কম। নিউইয়র্কে নওশিন আর হিল্লোল দীপ্ত টিভির জন্য ১০৪ পর্বের একটি ধারাবাহিক তৈরি করতে গিয়েছিলেন। নাম ‘নিউইয়র্ক থেকে বলছি’। এখানে আমি অতিথি শিল্পী হিসেবে কাজ করেছি। এ ছাড়া সৈয়দ জামি একটি খণ্ডনাটক করেছেন। নাম ‘তুমি’। আমি এটাতে অভিনয় করেছি।

এবার দেশে কোনো কাজ করবেন?
চয়নিকা চৌধুরী আর রহমতুল্লাহ তুহিন আগেই যোগাযোগ করেছেন। এ ছাড়া দেশে আসার পর আরও কয়েকজন কথা বলেছেন। দেখি, হাতে সময় বেশি নেই। তবে কয়েকটা কাজ করব। এ ছাড়া আমার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে ২০১৩ সালে একটা ধারাবাহিক তৈরি করেছিলাম। নাম ‘যখন কখনো’। ৫২ পর্বের। পরিচালনা করেছেন রহমতুল্লাহ তুহিন। গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে এনটিভিতে নাটকটি প্রচারিত হচ্ছে।

জনপ্রিয়তা, তারকা খ্যাতি—এসব তো নিউইয়র্কে নেই। নিশ্চয়ই খুব মিস করেন?
তা একটু তো মিস করি। কিন্তু ওখানে যাওয়ার পর আমার অন্য রকম অনুভূতি কাজ করেছে। আমি আমার সন্তানদের সুন্দর আর নিরাপদ ভবিষ্যতের কথা ভেবেছি। সেখানে ওরা ওই দেশের মতো করে ভালোভাবে বড় হবে। পাশাপাশি আমার স্বামী সেখানে আছেন, পুলিশ বিভাগে চাকরি করছেন। তাঁকেও মিস করছিলাম। আর আমি সংসারটা আমার মতো করে সাজাতে চেয়েছি।

হঠাৎ নিউইয়র্ক চলে গেলেন। আপনি যাবেন, তা অনেকেই পরে জানতে পেরেছেন। মনে কোনো রাগ কিংবা কোনো ক্ষোভ ছিল?
মানুষের পেছনে দৌড়াতে দৌড়াতে আর পারছিলাম না। কাজ মানেই ছুটতে হবে। তার ওপর যানজট। টাকা লগ্নি করে বসে আছি, কবে ফেরত পাব, জানি না। সব মিলিয়ে আমি যা ইনভেস্ট করছি, সেই তুলনায় রিটার্ন কিছুই পাই না। বুঝতে পারলাম, এই জায়গাটা এখন আর আমার না।

তখন কাজের পরিবেশটা আপনার কাছে কেমন মনে হয়েছিল?
দেখুন, একজন নাট্যকার কিংবা পরিচালক নাটক লেখার পর সেখানে যে চরিত্রগুলো থাকে, তা নিয়ে ভাবেন। চরিত্রটা কোন শিল্পীর সঙ্গে মিলে যায়, তাকেই কাজটা করার জন্য তাঁরা অনুরোধ করেন। তা-ই হতো। কিন্তু এখন চিত্রটা পাল্টে গেছে। পরিচালক তাঁর পছন্দের নায়িকাকে মাথায় রেখে স্ক্রিপ্ট লেখেন। ভাবনার জায়গাগুলো একজনকেন্দ্রিক হয়ে গেছে। সেখানে অন্য কোনো শিল্পীর কাজ করার সুযোগ নেই। আমি যে দক্ষ ও মেধাবী পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করতে চেয়েছি, তা পারছিলাম না। কারণ, ব্যাপারগুলো তাঁরা ব্যক্তিগত জায়গায় নিয়ে গেছেন। তার মানে ভালো কাজের সুযোগ কমে গেছে। এ ছাড়া কত যে নোংরামি হচ্ছে, সেসব কথা আর বলতে চাই না।

অভিনয়ের পাশাপাশি আপনি তো নাটক প্রযোজনার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন।
নিউইয়র্কে যাওয়ার কিছুদিন আগে দেখি, নাটক নিয়ে টিভি চ্যানেলের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে পারছি না। পুরো ব্যাপারটাই নিয়ন্ত্রণ করছে বিজ্ঞাপনের এজেন্সি। তার মানে এটা বাজার হয়ে গেছে। নাটক আর শিল্পের পর্যায়ে নেই। বুঝতে পারি, যে সময়টা নাটক নির্মাণ আর অভিনয়ের পেছনে দিচ্ছি, তা এখন নিজের জন্য দেব, নিজের পরিবারকে দেব। সেটা বেশি ভালো হবে। তখনই নিউইয়র্কে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।

আপনার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের কী খবর?
আমি ছিলাম না। পড়ে আছে। ভাবছি, এবার একটু গুছিয়ে রেখে যাব।