Thank you for trying Sticky AMP!!

এলেই বুঝতে পারবেন সিলেটের মানুষ এখনো কত কষ্টে আছে: তাসরিফ

সিলেটের বন্যাদুর্গত বিপর্যস্ত মানুষের জন্য আর্থিক সহায়তা চেয়ে ফেসবুকে লাইভ করেন তরুণ গায়ক তাসরিফ খান। মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় সেই লাইভ। তার পর থেকে দুই মাস সিলেটবাসীর পাশে ছিলেন। আজ মন খারাপ করেই ঢাকায় ফিরছেন। ক্যারিয়ার ও সেসব নিয়েই কথা হলো তাঁর সঙ্গে
‘এখনো আমরা সহায়তা পেলে প্রতিদিন ১০০ বেশি ঘর নির্মাণ করতে পারব।’– তাসরিফ
প্রশ্ন

বন্যার পর থেকে এখনো সিলেটেই আছেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য কি এখনো কাজ করছেন?

আজ সিলেটে আসার দুই মাস হলো। প্রথম যখন আসি, তখন ছোট একটা বন্যা হয়েছিল। তাদের সহায়তার জন্য এসে চোখের সামনে বড় বিপর্যস্ত দেখলাম। সেই ধাক্কা কিন্তু সিলেটের হাজার হাজার মানুষ এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি। তাদের জন্য এখনো কাজ করে যেতে হচ্ছে।

প্রশ্ন

আপনি চলের আসার পর কাজ দেখভাল করবে কে?

আমার ‘তাশরীফ স্কোয়াড টিম’ থাকবে। তা ছাড়া অনেক বড় একটা ভলান্টিয়ার টিম রয়েছে, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের লোকেরা কাজ করবেন। গ্রাম ও ইউনিয়ন মিলিয়ে তিন হাজারের বেশি সদস্য কাজ করছেন। ঘর নির্মাণ, কেনাকাটা, রান্না থেকে শুরু করে তাঁদের কাজের ভাগ আছে। এখনো যাঁরা যোগ দিতে চান, তাঁরা কাজ করবেন। আর এখন আমি থেকেও কোনো লাভ নেই। আমরা আগের মতো অর্থ সহায়তা পাচ্ছি না। ফান্ডে টাকা এলে আরও ১৫ দিন থাকতে পারতাম। এখনো আমরা সহায়তা পেলে প্রতিদিন ১০০ বেশি ঘর নির্মাণ করতে পারব।

প্রশ্ন

আপনাদের তহবিল সংগ্রহের সর্বশেষ কী অবস্থা?

প্রথম দিকে আমরা ১০ থেকে ১২ দিনেই দুই কোটি টাকা পেয়েছিলাম। পরে পুনর্বাসনের কাজের জন্য ফান্ডিং চেয়ে সাড়া পাইনি। ১৬ লাখ টাকা পেয়েছি। কিন্তু এবারই টাকার বেশি দরকার ছিল। এখন মনে হয়, মাঝে ফান্ড রাইজিং বন্ধ করে ভুল করেছিলাম। তা না হলে আমরা আরও অনেক টাকা পেতাম। এ মুহূর্তে আমরা ফান্ড রাইজিং বন্ধ রেখেছি। যদি এমন হয়, আমার হাতে কেউ ঘর বানানোর জন্য বড় একটা অর্থ দিয়ে সহায়তা দেবে, তাহলে হয়তো সপ্তাহে এক দিন সিলেটে আসব।

দুই মাস পর সিলেট থেকে বিদায় নিচ্ছেন তাসরিফ
প্রশ্ন

অর্থ সংগ্রহের জন্য কোনো অন্য কোনো উদ্যোগ নেননি?

একটা উদ্যোগ নিয়েছি। দেশের মানুষ তো নিয়মিতই ট্যুর দেন। সেন্ট মার্টিন, কক্সবাজারে যান। তাঁদের তো অনেক টাকা ব্যয় হয়। তাঁদের উদ্দেশে অনুরোধ করেছি, এবার একটা ট্যুর হোক দেশের জন্য। যাঁরা সিলেটে আসবেন, তাঁদের থাকার, ঘোরার, খাবার ও নিরাপত্তার দায়িত্ব আমরা নেব। যাঁদের ঘর নেই, তাঁরা তাঁদের একটি ঘরের পুরো বা অর্ধেক, যা পারেন অর্থ সহায়তা দেবেন। তাঁরা নিজেরা দেখভালও করতে পারবেন, আমাদের টিমের সঙ্গে ঘরের কাজে নিজেরাও সহায়তা করতে পারবেন।

প্রশ্ন

আপনাদের তহবিল সংগ্রহের সর্বশেষ কী অবস্থা?

প্রথম দিকে আমরা ১০ থেকে ১২ দিনেই দুই কোটি টাকা পেয়েছিলাম। পরে পুনর্বাসনের কাজের জন্য ফান্ডিং চেয়ে সাড়া পাইনি। ১৬ লাখ টাকা পেয়েছি। কিন্তু এবারই টাকার বেশি দরকার ছিল। এখন মনে হয়, মাঝে ফান্ড রাইজিং বন্ধ করে ভুল করেছিলাম। তা না হলে আমরা আরও অনেক টাকা পেতাম। এ মুহূর্তে আমরা ফান্ড রাইজিং বন্ধ রেখেছি। যদি এমন হয়, আমার হাতে কেউ ঘর বানানোর জন্য বড় একটা অর্থ দিয়ে সহায়তা দেবে, তাহলে হয়তো সপ্তাহে এক দিন সিলেটে আসব।

প্রশ্ন

অর্থ সংগ্রহের জন্য কোনো অন্য কোনো উদ্যোগ নেননি?

একটা উদ্যোগ নিয়েছি। দেশের মানুষ তো নিয়মিতই ট্যুর দেন। সেন্ট মার্টিন, কক্সবাজারে যান। তাঁদের তো অনেক টাকা ব্যয় হয়। তাঁদের উদ্দেশে অনুরোধ করেছি, এবার একটা ট্যুর হোক দেশের জন্য। যাঁরা সিলেটে আসবেন, তাঁদের থাকার, ঘোরার, খাবার ও নিরাপত্তার দায়িত্ব আমরা নেব। যাঁদের ঘর নেই, তাঁরা তাঁদের একটি ঘরের পুরো বা অর্ধেক, যা পারেন অর্থ সহায়তা দেবেন। তাঁরা নিজেরা দেখভালও করতে পারবেন, আমাদের টিমের সঙ্গে ঘরের কাজে নিজেরাও সহায়তা করতে পারবেন।

বন্যার সময়ে টিমের সদস্যদের সঙ্গে ত্রাণ নিয়ে তাসরিফ খান
প্রশ্ন

কেন এমন উদ্যোগ নিয়েছেন?

তাঁরা এলেই বুঝতে পারবেন সিলেটের মানুষ এখনো কত কষ্টে আছে। আমি চাচ্ছিলাম একটা ট্রেন্ড হোক—দেশের মানুষের জন্য ঘুরব। এ উদ্যোগে ঢাকার এনএসইউ, ফেনী, চট্টগ্রামসহ নানা জেলা থেকে ২০টির বেশি টিমকে পেয়েছি। তারা ঘুরে সহায়তা করে যাচ্ছে। এটা আরও দরকার।

প্রশ্ন

একদমই ঘর নেই—এমন পরিবারের সংখ্যা কেমন?

১০ থেকে ১৫ হাজার ঘর করতে পারলে ঘরহারা মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই হতো। তবে এর প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হবে। এখন আমি নিজেই ঘাবড়ে গিয়েছি। আমাদের নির্মাণ করা ১৫০টি ঘর খুব বেশি নয়। আফসোস, আমাদের কাছে অর্থ নেই। মানুষের দুর্ভোগ দেখেও মনে কষ্ট নিয়েই নিরুপায় হয়ে সিলেট ছাড়ছি। অর্থ থাকলে আরও কাজ করা যেত। আগেই বলেছি, চাইলে প্রতিদিন ১০০ ঘর নির্মাণ করতে পারব। তবে আমি এই সময়ে সিলেটবাসীর পাশে থাকতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি।

প্রশ্ন

এখনো কী ধরনের সহায়তা দিচ্ছেন?

প্রথম দিকে আমরা খাবারসহ অন্যান্য সহযোগিতা করেছি। পানি কমে যাওয়ার পর দেখলাম, হাজার হাজার মানুষের বাড়িঘর ভেসে গেছে। তাদের থাকার জায়গা নেই। খোলা আকাশের নিচে থাকছে তারা। পুরুষেরা সারা রাত জেগে পাহারা দেয়। যাদের একদম ভিটে ছাড়া কিছুই নেই, এ ধরনের মানুষের জন্য আমরা ১৫০টির মতো একচালা ঘর জানালাসহ, একটা করে টয়লেট, একটা রান্নাঘর বানিয়ে দিতে পেরেছি। এ সহায়তা চলবে।

তরুণ গায়ক তাসরিফ খান
প্রশ্ন

দীর্ঘদিন কাজ করার পরে শেষ মুহূর্তে এখন কী মনে হচ্ছে?

বন্যার পানি চলে যাওয়া মানেই কাজ শেষ নয়। এখানে থেকে বুঝেছি, পুনর্বাসনের কাজ অনেক চ্যালেঞ্জিং। তখন নিজের ঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকতে পেরেছেন। মাথার ওপর ছাদ ছিল। এখন অনেকেই গোয়াল ঘরে থাকেন, কেউ কোনোরকমে বস্তা, এটা–ওটা কুড়িয়ে গাছে থাকছেন, এমন অনেক মানুষও দেখেছি। আমরা গোয়াইনঘাট, তাহেরপুর উপজেলায় কাজ করছি।

প্রশ্ন

ঢাকায় ফিরে এসে কি গান নিয়ে ব্যস্ত হবেন?

দুই মাস টানা ভোরে বের হয়ে গভীর রাতে ফিরেছি। এই সময়ে রেলের সেই প্রতিবাদ নিয়ে ‘হোক প্রতিবাদ’ নামে একটা গান করেছিলাম। এ ছাড়া গত দুই মাসে কোনো গানই করতে পারিনি। ব্যবসা নেই, আমার নিজের কোনো আয় নেই। আমার গানের দলেই সবাই অপেক্ষা করছে। আমাদের কনসার্টের অনেক প্রস্তাব পাচ্ছি, একাধিক নতুন গান করব। যে কারণে আমি সিলেটের কাজটি মোটামুটি শেষের দিকে নিয়ে এসেছি। এখন ঢাকায় ফেরা অন্যতম কারণ আমার মা খুব অসুস্থ। চোখ ও পায়ে জরুরি ভিত্তিতে দুইটা অপারেশন করাতে হবে। তবু আম্মু বলেন, ‘তুমি আমাকে নিয়ে চিন্তা কোরো না। যে কাজ করছ করো।’ কিন্তু মায়ের পাশে থাকাটাও জরুরি।

টিমের সঙ্গে কাজ নিয়ে পরামর্শ করছেন তাসরিফ