Thank you for trying Sticky AMP!!

অস্কার বদলে দিয়েছে সব

প্যাট্রিসিয়া আর্কেট

পরিচালক রিচার্ড লিঙ্কলেটার তখনো বাবা হননি। তাই তখনো তাঁর মাথায় আসেনি ‘বয়হুড’ (২০১৪) ছবিটি নির্মাণের কথা। বাবা হওয়ার পর চোখের সামনে সন্তানের বড় হওয়া দেখতে দেখতে কবে, কখন যে নিজের শৈশবে চলে গিয়েছিলেন, তা বলা মুশকিল। তখন তাঁর বুঝতে বড় সাধ হলো, একটা শিশুর ছোট থেকে বড় হওয়ার অভিজ্ঞতা কেমন। যেই ভাবা, সেই কাজ।

‘বয়হুড’ নামের ছবিটা মুক্তি পেয়েছিল ২০১৪ সালের ১১ জুলাই। আর ছবিটা নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল ২০০২ সালের মে মাসে, যা শেষ হয় ২০১৩ সালের অক্টোবরে। ছবিটা বানাতে তিনি এক যুগ সময় নিয়েছিলেন। ছবির কাজ যখন শুরু হয়, মাসন ইভান্স জুনিয়র চরিত্রের ইলার কলট্রেনের বয়স তখন মাত্র ৬। আর ছবিটা যখন শেষ হয় তখন তাঁর বয়স ১৮। সময় সব সময় রিচার্ড লিঙ্কলেটারের সিনেমার প্রধান চরিত্র। তাই এই ছবি যতটা সময় দাবি করে, ততটা সময় দেওয়ার সময় ছিল রিচার্ড লিঙ্কলেটারের।

সেই চলচ্চিত্র জয় করেছে কোটি দর্শকের হৃদয় আর সমালোচকের ইতিবাচক শব্দমালা। এই চলচ্চিত্র দিয়েই সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রীর অস্কার জয় করেন তিনি। ই টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্প্রতি একটা ব্রিটিশ চলচ্চিত্র ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্যাট্রিসিয়া আর্কেট বলেছেন তাঁর অস্কারজয়ের ওই সময়ের গল্প। ২০১৫ সালে অস্কার জয়ের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত আর্কেট কল্পনা করেননি যে পুরস্কারটা তাঁর হাতেই শোভা পাবে। তাই পুরস্কার পেলে দর্শকদের উদ্দেশ্যে কী বলবেন, তা তিনি ঠিক করে যাননি।

পুরস্কার হাতে নিয়ে মাইক্রোফোনের সামনে দাঁড়িয়ে তাঁর নাকি খুব ভীতিকর অনুভূতি হয়েছিল। প্যাট্রিসিয়া আর্কেটের ভাষায়, ‘খুব ভয় পেয়েছিলাম। বমি বমি লাগছিল। মনে হচ্ছিল আমার মাথা অথবা পৃথিবীটা ঘুরছে আর আমি পুরোপুরি মাতাল। শরীরের ভেতর তখন এড্রিনালিন হরমোনের বন্যা বয়ে যাচ্ছিল। আমি স্টেজের ওপর থেকে উধাও হয়ে যাওয়ার জন্য ছটফট করেছি।’

আর্কেট জানালেন, ঘোষণার পর স্টেজে পুরস্কার আনতে যাওয়া তাঁর জন্য একেবারে অদ্ভুত অনুভূতি ছিল। তাঁর মাথা নাকি তখন একাবারে খালি ছিল। তাঁর ভাষায়, ‘ওই মুহূর্তে আমি ছিলাম পৃথিবীর সবচেয়ে আজব বস্তু। আমার কেন যেন শুয়ে পড়ে কাঁদতে ইচ্ছে করছিল। সময়টা যেন শেষই হচ্ছিল না। কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। আমার চারপাশে কী চলছে, কিছুই যেন দেখতে পারছিলাম না। সবকিছু কেমন যেন ঝাপসা ঝাপসা লাগছিল। খুব দ্বিধাগ্রস্ত ছিলাম।’

অবশ্যই প্যাট্রিসিয়া আর্কেটের জন্য অস্কার একটা বড় অর্জন। কিন্তু তিনি মনে করেন, একটা পুরস্কার কখনো একজন মানুষের জীবনের সফলতা বা ব্যর্থতার সংজ্ঞা হতে পারে না। অস্কার পেয়ে প্যাট্রিসিয়া আর্কেটের জীবনে কী পরিবর্তন এসেছে? ৫১ বছর বয়সী এই অভিনেত্রীর ভাষায়, ‘মানুষ আমার দিয়ে তাকায়। আমি তাঁদের চোখের দিকে তাকিয়ে দেখতে পাই, সেখানে আমার প্রতি তাঁদের আগ্রহ কিছুটা বেড়েছে। মানুষ খুব অদ্ভুত প্রাণী। অস্কার পাওয়ার পর আমার কাছে এমন সব চরিত্র এসেছে, যা নিয়ে ওই সব ছবির প্রযোজক আর পরিচালকেরা আগে কল্পনাও করেননি। অবশ্যই অস্কার আমার জীবন বদলে দিয়েছে।’