Thank you for trying Sticky AMP!!

ইরানের 'বর্ডার' পেল আঁ সারতেঁ রিগার

কান চলচ্চিত্র উৎসবে মঞ্চে আঁ সারতেঁ রিগার বিভাগের সব বিজয়ীরা। ছবি: কান চলচ্চিত্র উৎসবের ওয়েবসাইট

কানায় কানায় পূর্ণ মিলনায়তন। কারণ কান চলচ্চিত্র উৎসবের বিদায়বেলার আয়োজন শুরু হয়ে গেছে। গত শুক্রবার উৎসবের দশম দিনে এবারের মতো শেষ হয় আঁ সারতেঁ রিগার আয়োজন। প্রতিযোগিতা বিভাগের পর এটিই উৎসবের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। বিজয়ীদের নাম ঘোষণার মধ্য দিয়ে ভিন্ন ধারার ছবিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় আসরে তুলে ধরার আয়োজনে ইতি টানা হয়। এ বছর আঁ সারতেঁ রিগার সবচেয়ে বড় স্বীকৃতিটি গেছে ইরানে, নির্মাতা আলী আব্বাসির ‘বর্ডার’ ছবির ঘরে।

৭১তম কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ইরানের নির্মাতারা একরকম দাপিয়ে বেরিয়েছেন। আসগর ফরহাদির ছবি দিয়ে উৎসব শুরু হওয়া, প্রতিযোগিতা বিভাগে জাফর পানাহির ফিরে আসা, আর এবার আলী আব্বাসির আঁ সারতেঁ রিগার জয়-ইরানের চলচ্চিত্রকে বিশ্বদরবারে এগিয়ে রাখতে এর চেয়ে বড় উপলক্ষ আর হতে পারে না।

সেরা নির্মাতার পুরস্কার জেতেন ইউক্রেনের নির্মাতা সের্গেই লজনিৎসা। ডনবাস ছবির জন্য তিনি এই পুরস্কার জেতেন। লজনিৎসা এর আগেও কান উৎসবে তাঁর ছবি মাই জয়, ইন দ্য ফগ দিয়ে আলোচনায় ছিলেন। তবে এবার পুরস্কার জিতে উৎসবে নিজের ছাপ পাকাপোক্তভাবেই রাখলেন।

এবার প্রদর্শিত হয়েছে ১৮টি পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবি। ছয়টিই ছিল তরুণ নির্মাতাদের প্রথম কাজ। ছিল ভারতীয় অভিনেত্রী-নির্মাতা নন্দিতা দাসের মান্টোও। তবে ছবিটি কোনো পুরস্কার ঘরে তুলতে পারেনি।

এই বিভাগের জুরিপ্রধান ছিলেন হলিউড অভিনেতা বেনিসিও দেল তোরো। শুক্রবার কানের পালে দো ফেস্তিভালের সালে দুবুসিতে তাঁর নেতৃত্বে জুরি সদস্যদের উপস্থিতিতে বিজয়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় পুরস্কার।

সেরা পারফরম্যান্সের পুরস্কার জিতেছেন বেলজিয়ামের ছবি গার্ল-এর অভিনেতা ভিক্টর পলস্টার। সেরা চিত্রনাট্যের জন্য পুরস্কার জিতেছেন মরক্কোর মেরয়েম বেনম’বারেক, সোফিয়া ছবির জন্য।

সিনেফন্ডেশনের বিজয়ীরা
গত বৃহস্পতিবার বিকেল চারটায় পালে দো ফেস্তিভালের বুনুয়েল থিয়েটারে এবারের সিনেফন্ডেশন প্রোগ্রামের বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। তরুণ প্রতিভাবান নির্মাতা খুঁজে বের করে তাঁদের স্বীকৃতি দিতে উৎসব আয়োজকদের এই প্রোগ্রাম।

এবারের সিনেফন্ডেশনে যোগ দিয়েছিল ১৭টি স্টুডেন্ট ফিল্ম। বিশ্বের ৫১২টি চলচ্চিত্রবিষয়ক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ২ হাজার ৪২৬টি নির্মাণ জমা পড়েছিল। সেখান থেকে বাছাই করে সবশেষ বৃহস্পতিবার চারজন সেরা তরুণ নির্মাতার হাতে তুলে দেওয়া হলো পুরস্কার।

এ বছর প্রথম পুরস্কার জিতেছেন চিলির নির্মাতা দিয়েগো সেসপেদেস, তাঁর দ্য সামার অব দ্য ইলেকট্রিক লায়ন ছবির জন্য। দ্বিতীয় পুরস্কার যৌথভাবে জিতেছেন রাশিয়ার ইগোর পপলোহিন (ক্যালেন্ডার) ও চীনের শেন দি (দ্য স্টর্মস ইন আওয়ার ব্লাড)। তৃতীয় পুরস্কারটি গেছে যুক্তরাজ্যের লুসিয়া বুলগেরনির কাছে, ইনানিমেট ছবির জন্য।

বিজয়ীরা পাচ্ছেন নিজেদের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবি বানানোর জন্য অর্থ-সহায়তা। প্রথম পুরস্কার বিজয়ী পাবেন ১৫ হাজার ইউরো, সঙ্গে সেই ছবি কান উৎসবে দেখানোর সুযোগ। দ্বিতীয় পুরস্কার বিজয়ী জিতবেন ১১ হাজার ২৫০ ইউরো। তৃতীয় বিজয়ী পাবেন ৭ হাজার ৫০০ ইউরো।

ক্রিটিকস উইক জিতল যারা
ক্রিটিকস উইক হলো কান চলচ্চিত্র উৎসবের একটি সমান্তরাল শাখা (প্যারালাল সেকশন)। সরাসরি উৎসবের সঙ্গে সম্পর্ক নেই, তবে ফ্রেঞ্চ সিন্ডিকেট অব সিনেমা ক্রিটিকসদের এই আয়োজন মূল উৎসবে দারুণ প্রভাব ফেলে। দেখা যায়, এর বিজয়ীরাই একসময় দাপিয়ে বেড়ান মূল উৎসবে। ওং কার ওয়াই কিংবা আলেহান্দ্রো গনসালেস ইনারিতুর মতো নামী নির্মাতাদের শুরু এখান থেকেই হয়েছে।

এবার ক্রিটিকস উইক শুরু হয় ৯ মে, চলে ১৭ মে পর্যন্ত। দেখানো হয়েছে ৭টি পূর্ণদৈর্ঘ্য ও ১০টি স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি।

এবার নেসপ্রেসো গ্র্যান্ড প্রাইজ জিতেছেন তরুণ নির্মাতা গ্যাব্রিয়েল আব্রান্তেস ও ডানিয়েল শ্মিট, তাঁদের পরিচালিত দিয়ামান্তিনোর জন্য। স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি বিভাগে পুরস্কার জিতেছে গ্রিক নির্মাতা জ্যাকুলিন লেনৎজোর ছবি হেক্টর মালোট: দ্য লাস্ট ডে অব দ্য ইয়ার।

পুরস্কার জিতেছে ভারত থেকে অংশ নেওয়া স্যার ছবিটিও। ফ্রান্স-ভারতের যৌথ প্রযোজনায় রোহেনা গেরা পরিচালিত ছবিটি জিতেছে জিএএন ফাউন্ডেশন অ্যাওয়ার্ড ফর ডিস্ট্রিবিউশন।