Thank you for trying Sticky AMP!!

ওরা ভাবত, আমি রাশিয়ার একজন গুপ্তচর...

হলিউড তারকা মিলা ইয়োবোবিচ

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলায় মন ভেঙে গেছে হতবাক মিলা ইয়োবোবিচের। এই হলিউড তারকার জন্ম সোভিয়েত ইউক্রেনে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর বহু পরিবারের মতো তাঁর পরিবারও পালিয়ে চলে যায় যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে কঠিন সংগ্রাম করে বেড়ে ওঠেন মিলা। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাশিয়ার হামলার শিকার নিজের জন্মভূমি ইউক্রেনকে সাহায্যের আহ্বান জানিয়েছেন ‘রেসিডেন্ট এভিল’ তারকা।

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি মিলা ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘আমার দেশ ও সেখানকার মানুষ বোমা হামলার শিকার। আমাদের বন্ধু ও পরিবারের মানুষেরা লুকিয়ে আছেন। আমার শিকড় ওই ইউক্রেন আর রাশিয়ায়। এই ভয়াবহতা দেখে আমি দ্বিধাবিভক্ত। দেশটা ধ্বংস হয়ে গেছে, মানুষ শরণার্থীতে পরিণত হয়েছে। তাদের জীবন এলোমেলো হয়ে গেছে। আমার বাবার দেশের বাড়ি সাবেক যুগোস্লাভিয়ার যুদ্ধ ও আমার পরিবারের কাছ থেকে শোনা যুদ্ধের বিভীষিকাময় গল্প আজও আমার মনে পড়ে। যুদ্ধ তো যুদ্ধই। নেতারা কখনো শান্তি আনতে পারেন না। সাম্রাজ্যবাদের এই বিশৃঙ্খলার শেষ নেই। এতে সব সময় সাধারণ মানুষের চোখের জল ও জীবন যায়।’ ইউক্রেনকে সহায়তা করার জন্য একটি লিংক শেয়ার করেছেন তিনি।

মিলা ইয়োবোবিচ অভিনয় করেছেন হলিউডের বহু ছবিতে

হলিউড তারকা হওয়ার আগে মিলার নাম ছিল মিলিসা ভগনোভা ইয়োবোবিচ। ভগনোভা তাঁর পারিবারিক নাম। পূর্ব ইউরোপীয় স্লাভদের এ রকম নাম দেখা যায়। ১৯৭৫ সালে মিলা জন্ম নেন সোভিয়েত ইউনিয়নের ইউক্রেনের কিয়েভে। তাঁর ওয়েবসাইটে অবশ্য লেখা আছে তিনি মন্টেনেগ্রিয়ান। তাঁর বাবা ছিলেন একজন সার্বিয়ান, পেশায় চিকিৎসক। মায়ের জন্ম ইউক্রেনে, তবে তিনি রাশিয়ান এবং একজন নামকরা অভিনেত্রী। মিলার মাত্র পাঁচ বছর বয়সে তাঁর পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে চলে যায়। সেখানে নতুন জীবন খুব একটা সহজ ছিল না তাঁদের। নিজের ওয়েবসাইটে তিনি লিখেছেন, ‘সেখানকার শিশুরা আমার নাম এবং আমার অতীতের কারণে আমাকে নিয়ে মজা করত। আমি আমেরিকান নই বলে তারা আমাকে ভয় করত। ওরা ভাবত, আমি রাশিয়ার একজন গুপ্তচর। অনেক মানুষের মধ্যে আমাকে কখনোই মেনে নেওয়া হতো না। তাই আমি একা থাকতে শিখেছি এবং আমার নিজের জগতে সময় কাটানো শিখেছি।’

মিলা ইয়োবোবিচের জন্ম ইউক্রেনের কিয়েভ শহরে

এসবে বিচলিত হননি মিলা। ‘টিকে থাকার জন্য আমাদের পরিবারকে দ্রুত এগিয়ে যেতে হয়েছিল। আমি জানতাম যে আমাকে কাজ করতে হবে। স্কুলের বাইরের জীবন এবং যে বাচ্চারা আমাকে টিজ করত, তাদের দেখতাম। আমি কখনোই স্কুল থেকে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরিনি। আমার সে সময়ও ছিল না। আমাকে অনেক কিছু করতে হতো।’ পার্পল ফ্যাশন ম্যাগাজিনকে কথাগুলো বলেছিলেন মিলা। মজার ব্যাপার হলো মিলা ইউক্রেনীয় নয়, বরং ফরাসি, সার্বিয় ও রুশ ভাষায় কথা বলতে পারতেন। ভোগ ইউএর কাছে তিনি বলেছেন, ইউক্রেনের স্মৃতি তাঁর তেমন মনেই পড়ে না। কারণ, বেশির ভাগ সময় তিনি কাটিয়েছেন মস্কোতে। ‘রেসিডেন্ট এভিল’ চলচ্চিত্র সিরিজে অভিনয় করে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন মিলা। তাঁর অভিনীত বেশির ভাগ ছবিই অ্যাকশনধর্মী। তাঁর অন্য ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘রিটার্ন টু দ্য ব্লু লেগুন’, ‘মনস্টার হান্টার’, ‘দ্য ফিফথ এলিমেন্ট’, ‘আলট্রাভায়োলেট’ ইত্যাদি।

‘রেসিডেন্ট এভিল’ ছবিতে মিলা ইয়োবোবিচ