Thank you for trying Sticky AMP!!

২০১৯ সালের সেরা ১০ চলচ্চিত্র

>বছর প্রায় ফুরিয়ে গেছে, আরও স্পষ্ট করে বললে ৯৮ ভাগ শেষ। বছরটি বিশ্ব চলচ্চিত্রের জন্য কেমন ছিল, তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। টাইম ম্যাগাজিনের মতে, ব্যবসা ও শিল্প মিলিয়ে ২০১৯ সাল বিশ্ব চলচ্চিত্রের জন্য খুবই ভালো গেছে। এ বছরই ১০ বছরের পুরোনো রেকর্ড ভেঙে ‘অ্যাভাটার’কে হটিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে অর্থ উপার্জনকারী ছবি হয়েছে ‘অ্যাভেঞ্জার্স: এন্ডগেম’। (এই তালিকার বেশ কয়েকটি ছবি নেটফ্লিক্সের, তবে স্বল্প পরিসরে হলেও আন্তর্জাতিক উৎসব আর বড় পর্দায় মুক্তি দেওয়ার জন্য ছবিগুলোকে বিবেচনায় আনা হয়েছে)।

দেখে নেওয়া যাক টাইম ম্যাগাজিনের চোখে ২০১৯ সালে বিশ্বের সেরা ১০ চলচ্চিত্র।

‘হাস্টলারস’ ছবির তারকারা। ছবি: এএফপি

১০. হাস্টলারস
টরন্টো চলচ্চিত্র উৎসবের তৃতীয় দিন একেবারেই অপ্রত্যাশিতভাবে রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছিল ‘হাস্টলারস’। হাস্টলারস এমন একটা ছবি, যেটি নিয়ে কারও কোনো মাথাব্যথা ছিল না। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে বছরের সবচেয়ে আলোচিত ছবির তালিকায় উঠে আসে ‘গায়িকা’ জেনিফার লোপেজ অভিনীত এই ছবি। নারীদের উঁচু হিল, ছোট ছোট পোশাক, পুল ড্যান্স, আলো-ঝলকানো মঞ্চ, অন্ধকার জগৎ—সব মিলিয়ে নারীবাদী ধাঁচের এই ছবিকে একটা শব্দে বলা হচ্ছে ‘গ্ল্যামারাস’। এই ছবির পরিচালক লরেন স্কাফারিয়া বললেন, ছবিটি নারীদের গল্প, যেখানে পুরুষতান্ত্রিক এক সমাজে প্রথা ভেঙে তাঁরা নিজেদের গল্প নিজেরাই লিখেছেন। যেকোনো অর্থনৈতিক ধসে নারী আর শিশুরাই সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় বলেও জানান তিনি। তেমনই কয়েকজন নারীর গল্প নিয়ে ‘হাস্টলারস’। ২০ মিলিয়ন ডলার খরচ করে বানানো ছবিটি ইতিমধ্যে বক্স অফিসে তুলে এনেছে ১৫৬ মিলিয়ন ডলার; যদিও মালয়েশিয়ায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় এই ছবি।

‘আ বিউটিফুল ডে ইন দ্য নেইবারহুড’ ছবির দৃশ্যে টম হ্যাঙ্কস।

৯. আ বিউটিফুল ডে ইন দ্য নেইবারহুড
মারিয়েল হিলার পরিচালিত, দুবার অস্কারজয়ী অভিনেতা টম হ্যাঙ্কস অভিনীত এই ছবির বিষয় ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা। টম হ্যাঙ্কস আর ম্যাথিউ রিস, দুই প্রতিবেশীর মধ্যকার সম্পর্ক নিয়েই এগিয়েছে গল্প। খুব সহজভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে জীবনের জটিল সম্পর্কের সমীকরণ।

‘ডোলেমাইট ইজ মাই নেইম’ ছবিতে এডি মরফি।

৮. ডোলেমাইট ইজ মাই নেইম
টাইম আট নম্বরে রেখেছে এডি মরফি অভিনীত এই ছবিকে। যেখানে বড় পর্দায় রুডি রে মুর হয়ে এই মার্কিন তারকা অভিনেতা, সংগীতশিল্পী ও কমেডিয়ান আপনাকে শেখাবেন কীভাবে জীবনের সমস্ত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন আর দিন শেষে জয়ীর বেশে সুখী হবেন।

‘নাইভস আউট’ ছবির পোস্টার।

৭. নাইভস আউট
এই ছবি ক্রাইম থ্রিলার ঘরানার। লেখক ও পরিচালক রিয়ান জনসন পরিচালিত ও ‘০০৭’ খ্যাত ডেনিয়েল ক্রেগ অভিনীত এই ছবিতে দেখা যায় পরিবারের সব সদস্য মিলিত হয়েছিলেন। সেখানেই হত্যা করা হয় পরিবারের সবচেয়ে প্রবীণ সদস্যকে। হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন করার দায়িত্ব দেওয়া হয় একজন পেশাদার গোয়েন্দাকে। কোনো সদস্য বাদ যায় না সন্দেহের তালিকা থেকে। এভাবেই এগিয়ে যায় গল্প। এই ছবিতে ৩১ বছর বয়সী কিউবান অভিনয়শিল্পী আনা ডি আরমাসের অভিনয় দারুণ সমাদৃত হয়।

‘প্যারাসাইট’ ছবির একটি দৃশ্য।

৬. প্যারাসাইট
দক্ষিণ কোরিয়ার পরিচালক বং জুন-হোর এই ছবি পেয়েছে ৭২তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার পাম দ’র। এবার সেই মুহূর্তের স্বাদ পেলেন বং। ‘প্যারাসাইট’ ছবির জন্য তিনি এ বছর কানের এই সম্মানজনক পুরস্কার পেয়েছেন। ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’কে ঘিরে নির্মিত এই ছবি জানায়, জীবনের সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার হলো প্রতিটা মানুষের প্রতিটা কর্মকাণ্ডের পেছনে একটা যুক্তি আছে। আন্তর্জাতিক মহলে এই ছবি অত্যন্ত সমাদৃত হয়। এমনকি অস্কারের বিদেশি ভাষার সেরা ১০ ছবির সংক্ষিপ্ত তালিকায় রয়েছে ‘প্যারাসাইট’।

‘লিটল উইমেন’ সিনেমার পোস্টারে ব্যবহার করা হয়েছে এই ছবি।

৫. লিটল উইমেন
গ্রেটা গারউইগ পরিচালিত এই ছবির গল্প আরও ১৫০ বছর আগে লুইসা মে এলকটের লেখা উপন্যাস থেকে নেওয়া। ছবিটা সেই সময় আর চিরসবুজ এই কাহিনিকে জীবন্ত করতে পেরেছে বলেই রায় দিয়েছেন চলচ্চিত্র বিশ্লেষক আর সমালোচকেরা।

‘ম্যারেজ স্টোরি’ সিনেমার পোস্টারে ব্যবহার করা হয়েছে এই ছবি।

৪. ম্যারেজ স্টোরি
অ্যাডাম ড্রাইভার ও স্কারলেট জোহানসন অভিনীত এই ছবি বক্স অফিসের হিসাবে চূড়ান্ত ফ্লপ। কারণ, ১৮ মিলিয়ন ডলার খরচ করে বানানো এই ছবি বক্স ব্যবসা করতে পেরেছ মাত্র ২ মিলিয়ন ডলারের। কিন্তু আন্তর্জাতিক উৎসবগুলোয় দারুণ সমাদৃত হয় এই ছবি। ‘ম্যারেজ স্টোরি’কে বলা হচ্ছে বছরের সবচেয়ে আবেগপূর্ণ ছবিগুলোর একটি।

‘ওয়ান্স আপন আ টাইম...ইন হলিউড’ ছবির একটি দৃশ্য।

৩. ওয়ান্স আপন আ টাইম...ইন হলিউড
প্রবাদতুল্য পরিচালক কোয়েন্টিন টারান্টিনোর ‘ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন...হলিউড’ এই মুহূর্তে শুধু হলিউডেই নয়, বরং চলচ্চিত্র দুনিয়ার সবচেয়ে আলোচিত ও বড় আয়োজনের ছবিগুলোর একটি। মূল অভিনয়শিল্পীরা হলেন লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও, ব্রাট পিট ও মারগট রোবি। ছবিতে লিওনার্দোর চরিত্রের নাম রিক ডাল্টন—১৯৬৯ সালে হলিউডের এক ওয়েস্টার্ন টিভি সিরিজে অভিনয় করা একজন অভিনেতা। টিভি সিরিজে অভিনয়ের পর তখনকার হলিউডের মূলধারায় ঢোকার জন্য সংগ্রাম করছেন রিক। রিকের সঙ্গে বহুদিন ধরে কাজ করছেন স্টান্ট ডাবল ক্লিফ বুথ। এই ক্লিফের চরিত্রে অভিনয় করছেন ব্র্যাড পিট। অস্ট্রেলীয় অভিনেত্রী মারগট রোবিকে এখানে দেখা যাবে আমেরিকান অভিনেত্রী ও মডেল শ্যারন টেইটের চরিত্রে।

‘দ্য আইরিশম্যান’ ছবিতে রবার্ট ডি নিরো, আল পাচিনো ও জো পেসকি।

২. দ্য আইরিশম্যান
মার্টিন স্করসেজি পরিচালিত এই ছবিতে অভিনয় করেছেন রবার্ট ডি নিরো, আল পাচিনো ও জো পেসকি। তাঁদের বর্তমান বয়স যথাক্রমে ৭৫, ৭৯ ও ৭৬ বছর। ছবিটিকে বলা হচ্ছে ‘দ্য লাস্ট গ্রেট গ্যাংস্টার’ চলচ্চিত্র। শোনা যাচ্ছে, আসবে এই ছবি সিক্যুয়েলও।

‘পেইন অ্যান্ড গ্লোরি’ ছবির পোস্টারে অ্যান্টনিও বান্দেরাস।

১. পেইন অ্যান্ড গ্লোরি
টাইম ম্যাগাজিনের মতে, এই ছবি ২০১৯ সালের সেরা ছবি। দুটি অস্কারজয়ী স্প্যানিশ পরিচালক পেদ্রো আলমোদোবার পরিচালিত এই ছবিতে অভিনয় করেই ৭২তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা অভিনেতার পুরস্কার জিতেছেন অ্যান্টনিও বান্দেরাস। ছবিটি জীবনের গতির ছবি, জীবনের নানান রঙ্গের ছবি। এই ছবি সেই শক্তিকে অন্বেষণ করে, যার ফলে শরীরে প্রাণ থাকা পর্যন্ত মানুষ স্বপ্ন দেখে, আশায় বাঁধে বুক।