Thank you for trying Sticky AMP!!

'করোনা'র চেয়ে এগিয়ে 'প্যারাসাইট'

প্যারাসাইট ছবির একটি দৃশ্য। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

বাংলাদেশ উপভোগ করছে ক্রিকেটে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হাত ধরে প্রথমবার বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের ডলবি থিয়েটার থেকে ঐতিহাসিক জয়ের সুবাস ছড়িয়ে পড়েছে উত্তর–পূর্ব এশিয়ার আরেকটি দেশ দক্ষিণ কোরিয়াতেও। কারণ, সেরাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চারটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে সেরার পুরস্কার নিজেদের দেশে নিয়ে গেছে ‘প্যারাসাইট’। নতুন ধরনের ভাইরাস আর উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক হুমকির অস্বস্তি সাময়িকভাবে ভুলিয়ে ইতিহাস গড়া চার-চারটি অস্কার জয়ের আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে সবখানে।

সেরা পরিচালকের পুরস্কার হাতে বং জুন দর্শকসারিতে বসা মার্টিন স্করসেসিকে দেখিয়ে বলেছেন, তাঁকে দেখেই তিনি চলচ্চিত্রের ভাষা শিখাছেন। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

রাষ্ট্রপতি মুন জে-ইন এক টুইট বার্তায় লেখেন, ‘আমরা একটি কঠিন সময় পার করছি। এ রকম একটা দিনে দেশের মানুষকে জাতি হিসেবে গর্বিত করার জন্য প্যারাসাইট দলের প্রতি কৃতজ্ঞতা। এই সুখবর আমাদের জাতীয় দুঃসময় মোকাবিলায় শক্তি আর সাহস জোগাবে।’ দক্ষিণ কোরিয়ার জনপ্রিয় দৈনিক ‘দ্য চোসান ইলবো’র হেডলাইনে লেখা হয়েছে, ‘অস্কারের ৯২ বছরের পুরোনো ইতিহাস নতুন করে লিখল প্যারাসাইট। প্রথম বাক্যটি এ রকম, তুমি বিশ্বাস করতে পারছ, প্যারাসাইট অস্কারের সেরা ছবি? সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য একটি বিশেষ দিন। কেননা দীর্ঘদিন পর সেদিন ‘করোনা’ (ভাইরাস) থেকে ‘প্যারাসাইট’ শব্দটি ইন্টারনেটে সবচেয়ে বেশিবার সার্চ করা হয়েছে। যদিও ২৭ জন করোনা আক্রান্ত রোগী নিয়েও মানুষের আগ্রহের কমতি নেই। লিবার্টি কোরিয়ান পার্টির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক এক বিবৃতিতে বলা হয়, এই অস্কার জয় চরম খরার ভেতর একপশলা বৃষ্টির মতো। আর দক্ষিণ কোরিয়ার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সয়লাব হয়ে গেছে অভিনন্দন বার্তায়।

চারটি অস্কার হাতে বং জুন হো। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

পরিচালক বং জুন হো পড়াশোনা করেছেন রাজধানী সিউলের ইয়োনসেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। সেখানকার চলচ্চিত্র সংসদের সদস্যরা একসঙ্গে উপভোগ করেছেন ৯২তম একাডেমি পুরস্কার অনুষ্ঠান। সে রকমই এক ছাত্র কিম নাম-হুন (২১) ‘প্যারাসাইট’ এই পুরস্কারগুলোর যোগ্য সিনেমা উল্লেখ করে বলেন, ‘কোরিয়ান চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এমন অর্থপূর্ণ ছবি আর নেই বললেই চলে। আমরা অত্যন্ত সম্মানিত, আনন্দিত। সেই অনুভূতি প্রকাশ করার ভাষা আমার জানা নেই।’ জিয়ং হু-চিয়ং (২৬) নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, কোরিয়ান সমাজের সমস্যা, ধনী–দরিদ্রের বিশাল ফারাক—এগুলো তাঁর মতো করে আর কেউ বোঝেনি।

সেরা ছবির পুরস্কার হাতে অস্কারের মঞ্চে ‘প্যারাসাইট’ দল। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

পার্ক চ্যান-উড পরিচালিত ‘ওল্ডবয়’ ছবিটি ২০১৪ সালে জিতে নেয় কান চলচ্চিত্র উৎসবের সবচেয়ে বড় পুরস্কার গ্রাঁ পি। দক্ষিণ কোরিয়ান এই পরিচালক একটি দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘বংয়ের মতো একপজন মেধাবী পরিচালক যে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করেন, সেই ইন্ডাস্ট্রির একজন অংশ হতে পেরে আমি গর্বিত। বং আমাকে তাঁর বন্ধু বলে পরিচয় দেন। আমি ধন্য।’ দ্য কোরিয়া হেরাল্ডের প্রতিবেদন অনুসারে গ্লোল্ডেন গ্লোব জয়ের পরই ‘প্যারাসাইট’–এর হল সংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল। আর অস্কার জয়ের পর তা শতকরা ৫০ ভাগ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। উত্তর আমেরিকার ১০৬০টি হলে চলছিল এই ছবি। আসছে সপ্তাহ থেকে এই মহাদেশের দর্শক ‘প্যারাসাইট’ দেখবেন ২০০০টি হলে।