Thank you for trying Sticky AMP!!

নেটফ্লিক্সে আসছে ইতিহাসের মাফিয়ারা

‘দ্য আইরিশম্যান’ চলচ্চিত্রের পোস্টারে ব্যবহার করা হয়েছে এই ছবিটি

সময়ের সঙ্গে নেটফ্লিক্স ডালপালা মেলছে সবদিক দিয়ে। এটি বর্তমানে ইন্টারনেটবিশ্বের সব থেকে বড় বিনোদনমাধ্যম। বিশ্বের ১৫ কোটি ১০ লাখেরও বেশি মানুষ এর ভোক্তা। এখানে সভ্য দেশের বৈচিত্র্যময় টিভি সিরিজ, ডকুমেন্টারি, ফিচার, চলচ্চিত্র প্রভৃতি দেখা যায়। কেবল এই মাধ্যমের জন্যই নির্মিত হচ্ছে কনটেন্ট। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে ‘দ্য আইরিশম্যান’।

এই ছবিতে দেখা যাবে দুবার অস্কারজয়ী অভিনেতা রবার্ট ডি নিরোকে। প্রথমবার ‘দ্যা গডফাদার পার্ট টু’ (১৯৭৪)। আর পরেরবার বক্সার জেক ল্যাম্বটার বায়োপিক ‘রেজিং বুলে’ (১৯৮০) অভিনয় করে জিতলেন সেরা অভিনেতা হিসেবে অস্কার। সেই ছবিরও পরিচালক ছিলেন মার্টিন স্করসেস। আর ‘দ্য আইরিশম্যান’ও নির্মিত হয়েছে তাঁর পরিচালনায়। এই ছবিতে তাঁকে সঙ্গ দেবেন একবার করে একাডেমি পুরস্কারজয়ী আল পাচিনো ও জো পেসকি। তাহলেই বুঝুন অবস্থা! মূল তিন অভিনেতাই অন্তত একবার করে জিতেছেন অভিনয়জীবনের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি।

‘দ্য আইরিশম্যান’ ছবির একটি দৃশ্য

বলে রাখা ভালো, আমেরিকান পরিচালক মার্টিন স্করসেস ও আমেরিকান অভিনেতা রবার্ট ডি নিরো একসঙ্গে ১৯৭৩ সাল থেকে নয়টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও একটি শর্টফিল্মে কাজ করেছেন। এসব ছবির বেশির ভাগই অপরাধবিষয়ক। আর এর মধ্যে বেশ কয়েকটি সর্বকালের সেরা চলচ্চিত্রের তালিকায় স্থান পেয়েছে।

নেটিফ্লিক্স ‘দ্য আইরিশম্যান’ চলচ্চিত্রের টিজার মুক্তি দিয়েছে জুলাইয়ের ৩১ তারিখে। আর এখন পর্যন্ত এই টিজার দেখা হয়েছে প্রায় ৪০ লক্ষবার। ভক্তরা মন্তব্যে জানিয়েছেন তাঁদের তুঙ্গস্পর্শী আগ্রহ। অনেকে বলেছেন, বয়স্কের জন্য এই ছবি ‘দ্য লাস্ট গ্রেট গ্যাংস্টার মুভি’। তিন কিংবদন্তিকে একসঙ্গে করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত এই বায়োগ্রাফিক্যাল ক্রাইম ছবির চিত্রনাট্যকার স্টিভেন জাইলান। এটি মূলত চার্লস ব্রান্ডতের ‘আই হার্ড ইউ পেইন্ট হাউজেস’ থেকে অনুপ্রাণিত।

‘দ্য আইরিশম্যান’ ছবিতে মুখ্য তিন চরিত্রে অভিনয় করেছেন রবার্ট ডি নিরো, আল পাচিনো ও জো পেসকি।

এই ছবি আমেরিকার ইতিহাসের এক অজানা রহস্য উন্মোচন করবে। এখনে রবার্ট ডি নিরোকে দেখা যাবে একজন শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা ও বুফালিনো ক্রাইম ফ্যামিলির অভিযুক্ত ফ্র্যাংক শিরানের চরিত্রে। লেখকের দাবি এই শিরানই ইউনিয়ন বস জিম্মি হফারের খুনি। আর জিমি হফারের চরিত্রে দেখা যাবে আল পাচিনোকে। হ্যাঁ, ইনিই সেই জিমি হফার যিনি ব্রাদারহুড অব টিমস্টার্সের কুখ্যাত দুর্নীতিবাজ নেতা। তিনি ১৯৭৫ সালে নিখোঁজ হন এবং ১৯৮২ সালে তাঁকে আইনত মৃত ঘোষণা করা হয়।

আর কুখ্যাত মাফিয়া বড় পর্দায় জীবিত হবেন জো পেসকির শরীরে। যিনি ১৯৫৯ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। ১৯৯৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পেনসিলভানিয়ার কিংসটনের একটা হাসপাতালে ৯০ বছর বয়সে স্বাভাবিক মৃত্যু হয় তাঁর।

‘দ্য আইরিশম্যান’ ছবির একটি দৃশ্য

কথা ছিল, দ্য আইরিশম্যানের প্রিমিয়ার হবে ৭২তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে। কিন্তু উৎসবের শিল্প পরিচালক থিয়েরি ফ্রেমো ঘোষণা করেন, মূল প্রতিযোগিতা পাম দ’রে অংশ নিতে পারবে না নেটফ্লিক্সের কোনো ছবি। তাই নেটফ্লিক্সের প্রধান টেড সারানডোস উৎসব থেকে তাঁদের সব ছবি প্রত্যাহার করে নেন। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এ রকম গুণী পরিচালকদের ছবি হারানোয় অবশ্য যথেষ্ট ক্ষতির শিকার হয়েছে কান চলচ্চিত্র উৎসব।

রবার্ট ডি নিরো, আল পাচিনো ও জো পেসকির বর্তমান বয়স যথাক্রমে ৭৫, ৭৯ ও ৭৬ বছর। কিন্তু পর্দায় বেশির ভাগ সময় তাঁদের দেখা যাবে মধ্যবয়সী। তাই কম্পিউটার-জেনারেটেড ইমাজিনারি ব্যবহারের মাধ্যমে অভিনয়শিল্পীদের বয়স অনেকটা কমিয়ে ফেলা হয়েছে। বস্তা বস্তা টাকা ঢেলে নির্মাণ করা হয়েছে এই ছবি। দেখা যাক, চলচ্চিত্র ইতিহাসের অন্যতম সেরা চার মাস্টার মিলে কী উপহার দেন!